মাওলানা জালাল উদ্দীন রূমী রহ.
কাব্যানুবাদ : রূহুল আমীন খান
৭২১. বাহ্যত চোখ দুইটি বটে হাযির হলে গোড়ায় এর
দুইটিতো নয় একটি মূলে দৃষ্টিজ্যোতি দর্শনের।
৭২২. দুই চোখে হয় উদ্ভাসিত দৃশ্য একই তফাত নাই
উৎস খোঁজ, যাও মূলে যাও, দুই নহে এক দেখবে তাই।
৭২৩. দশটি বাতি যদ্যপি তার আকার সুরত ভিন্ন হয়
জ্বাললে তাদের রোশনী একইÑ আদৌ তাতো ভিন্ন নয়।
৭২৪. কুরান দ্যাখো এবং ভাবো কী অর্থ এই আয়াতের
আমরা ফরক করি নাকো মধ্যে নবী রাসূলদের।
৭২৫. এক শতটি আবি*১, আপেল আকার সুরত ভিন্ন যার
নিংড়ে নিলে নির্যাসে তার ফরক তফাত রয়না আর।
৭২৬. শব্দ এবং বর্ণ স্বাকারÑ মানির কোনো নাই আকার
শব্দ বর্ণ ভাগ করা যায়, বিভাজ্য নয় অর্থ তার।
৭২৭. বর্ণে যাহার নিমগ্নতাÑ থাকুক তারি সঙ্গে সেই
অর্থে মজে থাকো বাছা, বর্ণে কোন ভরসা নেই।
৭২৮. বিলীন করো কঠোর তপে অবাধ্য এই বর্ণÑতন
তাহার নিচেই লাভ করিবে তাওহীদী সে গুপ্ত ধন।
৭২৯. না পারলেও বিলীন হতে মগ্ন থাকো তপস্যায়
বিলীন করে নিবেন তিনি তাঁহার মাঝে নিজ দয়ায়।
৭৩০. এই হৃদ-দর্পনে খোদা নিজকে করেন দৃশ্যমান
আপন হাতে করেন সিলাই দরবেশের বসন পিরান।
৭৩১. শান্তে নয়, অনন্তে ছিলাম, নয় সসীমে, অসীম মাঝ
হাত পা দেহের কারাগারে হায়রে হলাম বন্দী আজ !
৭৩২. সূর্য সম রতœ ছিলাম, ছিলাম নিসীম সাগর জল
ছিলাম স্বাধীন বাধন হারা, ছিলনা কপাট আগল।
৭৩৩. সেই উজালা দীপ্ত জ্যোতি রূপ নিল স্থ‚ল দেহের
হলো বহু, উঁচু ও নিচ ছায়ার মতো কার্নিসের।
৭৩৪. কামান দাগো, দাও গুঁড়িয়ে ছায়া কায়া যাক নিপাত
যাক ঘুচে এই হীন ভেদাভেদ এক হয়ে যাক আদমজাত।
৭৩৫. দলিল দিতাম, ব্যাখ্যা দিতাম আরো অনেক এ তত্তে¡র
ছেড়ে দিলাম ভ্রান্তি যাতে না হয় অবুঝ মানুষদের।
৭৩৬. সূ² এসব তত্ত¡কথা বজ্র অসি তী²ধার
পিছে হটো, বাহুতে নেই শক্ত কঠিন ঢাল যাহার।
৭৩৭. এই হিরকের মোকাবেলায় এসো না যার সে ঢাল নেই
কাটার বেলায় এ তরবারির লজ্জা শরম নেই মোটেই।
৭৩৮. কোষাবদ্ধ করে নিলাম এই তলোয়ার তীক্ষèধার
কেউনা যাতে উল্টো বোঝে কারণে নিজ অজ্ঞতার।
৭৩৯. কাহিনী শেষ করব লিখেÑ ওই উযিরের ভক্তগণ
করল যে রূপ নিষ্ঠা সাথে তার সবই আদেশ পালন।
খিলাফত নিয়ে আমীরদের মধ্যে দ্ব›দ্ব ও সংঘাত
৭৪০. শোকের পালা খতম হলে মিলল সভায় খ্রিষ্টগণ
করার লাগি মৃত পীরের প্রতিনিধি নির্ধারণ।
৭৪১. সামনে সবার এগিয়ে এলো দৃপ্ত পায়ে এক আমীর
সরাসরি পষ্ট ভাষায় করল এলান*১ নিজ দাবীর।
৭৪২. বলল আমি মনোনীত প্রতিনিধি খোদ ঈসার
এই সময়ে আমি ছাড়া খলীফা কেউ নেই তাঁহার।
৭৪৩. ঊর্ধ্বে তুলে ধরল সে বই, বললো, দ্যাখো সংবিধান
স্পষ্ট করে এর ভেতরে লেখা আছে এ ফর্মান।
৭৪৪. এগিয়ে এলো অমনি হেথা আরেক আমীর উচ্চশির
বলল, সঠিক প্রতিনিধি আমি স্বয়ং এই জাতির।
৭৪৫. সেও তাহার বগল হতে পুস্তিকা এক বের করে
‘এই যে দ্যাখো পষ্ট হুকুম’! বলল ক্রোধ রোষ ভরে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন