শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

চীনের কৃত্রিম দ্বীপগুলো দখলের ক্ষমতা রাখে যুক্তরাষ্ট্র

বেইজিং এ অঞ্চলে দীর্ঘ মেয়াদী চ্যালেঞ্জ : অ্যাডমিরাল হ্যারিস

সিএনএন | প্রকাশের সময় : ২ জুন, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উত্তর কোরিয়ার ব্যাপারে ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সহযোগিতা চাইলেও দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোর সামরিকীকরণেকে কেন্দ্র করে বৃস্পতিবার চীনের উদ্দেশ্যে গরম কথার হলকা ছুুঁড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা চীনের কৃত্রিম দ্বীপগুলো দখলের ক্ষমতা রাখে।
সাংবাদিকরা মার্কিন জয়েন্ট স্টাফের পরিচালক লেঃ জেনারেল কেনেথ ম্যাকেঞ্জির কাছে দক্ষিণ চীন সাগরে মনুষ্য নির্মিত চীনের একটি বিতর্কিত দ্বীপ উড়িয়ে দেয়ার মার্কিন ক্ষমতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি শুধুু এটাই বলব যে ছোট দ্বীপ দখল বিষয়ে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে।
একটি উত্তপ্ত বিরোধীয় অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে মার্কিন জেনারেল এ মন্তব্য করলেন। দক্ষিণ চীনসাগরের কৃত্রিম দ্বীপগুলোতে চীনের অব্যাহত সামরিকীকরণের জবাবে নৌচলাচলের স্বাধীনতা বজায় রাখতে ঐ এলাকায় মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন নৌবাহিনীর দ’টি যুদ্ধ জাহাজ বিতর্কিত প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের ১২ মাইলের মধ্যে প্রবেশ করে। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র এ জন্য দু’টি যুদ্ধ জাহাজ ব্যবহার করে যার অর্থ আন্তর্জাতিক পানি সীমায় স্বাধীন ভাবে চলাফেরার অধিকার প্রদর্শন করা।
মার্কিন ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের বিদায়ী প্রধান অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস বুধবার বলেন, চীন এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম দীর্ঘ-মেয়াদী চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও আমাদের মিত্র এবং অংশীদারদের সংশ্লিষ্টতা ও যুদ্ধ ছাড়া চীন এশিয়াতে তার আধিপত্যের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করবে।
চীন সরকার সাম্প্রতিক মার্কিন মন্তব্যসমূহের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে। বৃহস্পতিবার তার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহিলা মুখপাত্র হুয়া চুনইয়িং বলেন, চীনের বিরুদ্ধে এ অঞ্চলকে সামরিকীকরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ হচ্ছে ‘চোরকে থামাও বলে এক চোরের চিৎকারের মতো।’ তিনি প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপ ও ডুবো পাহাড়গুলোর কাছে যখন তখন জাহাজ পাঠাচ্ছে কেন? কী করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র?
মার্কিন সামরিক বাহিনী প্রস্তুত
পেন্টাগনের একজন অন্যতম সিনিয়র অফিসার হিসেবে ম্যাকেঞ্জির কথা বিশেষ অর্থ বহন করে। তিনি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ডের এক শীর্ষ কর্মকর্তা এবং প্রায়ই ডানফোর্ড ও মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেমস ম্যাটিসের সাথে বৈঠকে মিলিত হন। বৃহস্পতিবার সুস্পষ্ট করেন যে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্রদের স্বার্থ রক্ষায় প্রস্তুত।
ম্যাকেঞ্জি বলেন, বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র দ্বীপ দখলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রচুর অভিজ্ঞতা আছে। তিনি দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ কালে প্রশান্ত মহাসাগরে বেশ কিছু দ্বীপ দখলের লড়াইয়ে হাজার হাজার মার্কিন সৈন্যের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অতএব এটা হচ্ছে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একেবারে মৌলিক পারদর্শিতা যা আমরা আগেও সম্পন্ন করেছি।
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ চীন সাগরে নিয়মিত নৌ চলাচলের স্বাধীনতা অভিযান পরিচালনা করে থাকে। সর্বশেষ অভিযানকালে যুক্তরাষ্ট্র বলে যে, সে সময় একটি চীনা যুদ্ধ জাহাজ মার্কিন যুদ্ধ জাহাজগুলোর কাছেই অপেশাদারী পন্থায় সক্রিয় ছিল।
ম্যাকেঞ্জি যুক্তরাষ্ট্র পিছু হটবে না বলে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন যে আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক আমরা মুক্ত নৌ চলাচল অভিযান অব্যাহত রাখব। আমরা যা করছি তা চলতে থাকবে।
এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে ম্যাটিস বলেন, চীন এ এলাকাকে সামরিকীকরণ না করার দাবির উপর স্থির নয়। তারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যাচ্ছে যা সেখানে আগে ছিল না। মার্কিন নজরদারিতে দেখা গেছে যে চীন সাম্প্রতিক মহড়াকালে জাহাজ বিধ্বংসী ও বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সেখানে স্থানান্তর করেছে। এ মাসের গোড়ার দিকে চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া ঘোষণা করে যে একটি দ্বীপে প্রথমবারের মত পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম চীনা বোমারু বিমান অবতরণ করেছে। ম্যাটিসও বলেছেন, এ অঞ্চলে নৌ অভিযানের ডংকা বাজানো অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের বাইরে বলে আমরা মনে করি এমন পদক্ষেপের আমরা মোকবেলা করব। আমরা এর অংশ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরে অত্যন্ত স্বচ্ছ সামরিক তৎপরতা বজায় রাখব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ইব্রাহিম ২ জুন, ২০১৮, ২:০২ এএম says : 0
কিছুই হবে না
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন