শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ছন্দহীন বার্সার সামনে অ্যাটলেটিকো বাধা

প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : ‘এটি হতে যাচ্ছে বছরের অন্যতম সেরা একটি ম্যাচ’- অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মধ্যকার আজকের ম্যাচকে এভাবেই বর্ণনা করেছে মাদ্রিদের জনপ্রিয় ক্রিড়া পত্রিকা মার্কা। এর সাথে দ্বিমত পোষণ করার মত ফুটবল বোদ্ধা খুঁজে পাওয়াই ভার। ম্যাচটিতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলা বার্সা মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে হঠাৎই খেই হারিয়ে ফেলায়। কোচ লুইস এনরিকের অধীনে এর চেয়ে বাজে সময় আর পার করতে হয়নি গতবারের ট্রেবলজয়ীদের। তবে আশার কথা হল মাদ্রিদের ভিনসেন্ট ক্যালডেরন স্টেডিয়ামে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্সলিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগের এই লড়াইয়ে খাতাকলমের হিসেবে এগিয়ে থেকেই লড়াইয়ে নামবে বার্সেলোনা। ন্যু-ক্যাম্পে দু’দলের মধ্যকার প্রথম লেগের খেলায় প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়েও লুইস সুয়ারেজের জোড়া গোলে ২-১ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিকরা।
ম্যাচকে ঘিরে উদ্দিগ্ন হওয়ার যথেষ্ঠ কারন আছে কাতালান কোচ লুইস এনরিকের। ২০১৪ সালের আগস্টে ন্যু-ক্যাম্পে আসার পর থেকে হাওয়াই উড়ছিলেন এই স্প্যানিয়ার্ড। অথচ, সেই দলটিই কিনা লা লিগায় টানা তিন ম্যাচ জয়হীন! এর মধ্যে ঘরের মাঠে এল ক্লাসিকোয় হার তো আছেই, সেই সাথে নিজেদের শেষ ম্যাচেও হারতে হয়েছে ‘পুঁচকে’ রিয়াল সোসিয়াদাদের কাছে। ওদিকে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলখরায় কাটাতে হচ্ছে দলের প্রাণভোমরা লিওনেল মেসিকে। সব প্রতিযোগিতা মিলে টানা ৩৬২ মিনিট তার পা থেকো কোন গোল আসেনি। ক্যারিয়ারে ৫০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করতে আর মাত্র একটি গোলই দরকার ফুটবল জাদুকরের। কিন্তু সেই একটি গোলই যেন সময়ের সেরা খেলোয়াড়ের কাছে দুরের বাতিঘর। শেষ ম্যাচে রিয়াল সোসিয়াদেরর জালে একাই শট নেন ৭টি। কিন্তু সফলতা আসেনি একবারও। টমাস ভারমেলন ও জেরিমি মেথিউ চোটের কারণে এদিন থাকবেন দলের বাইরে। যদিও প্রথম লেগের খেলায় শেষ ২৭ মিনিট মাঠে ছিলেন তারপরও শঙ্কা রয়ে গেছে আরেক ডিফেন্ডার রাফিনহেকে নিয়েও। তবে যে দল মেসি-নেইমার-সুয়ারেজের মত আক্রমণভাগ দিয়ে গঠিত ঘুরে দাঁড়ানো তো তাদের কাছে সময়ের ব্যাপার। ‘এমএসএন’ খ্যাত এই ত্রয়ী মৌসুমে ইতোমধ্যেই করেছেন ১০৯ গোল। এমন পরিসংখ্যানই কোচ এনরিকে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবাচ্ছে নাÑ ‘এটা কৈফিয়ৎ বা অজুহাতের সময় নয়, আমরা চাই ফল। ডুবে থাকার সময় এটা নয় এবং মনে রাখতে হবে আমরা একটা ভয়ানক প্রতিযোগিতায় আছি।’
চলতি মৌসুমে লিগে দু দলের লড়াইয়ে দু’বারই ২-১ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতায় প্রথম লেগে এগিয়ে থাকা ৪০ ম্যাচের মধ্যে ৩৮ ম্যাচেই জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। পিছিয়ে থেকেও ২০ বারের মধ্যে ১১ বার ঘুরে দাঁড়ানোর রেকর্ড আছে অ্যাটলেটিকোরও। সব মিলে ঘরের মাঠে বার্সার বিপক্ষে ১০৯ বারের লড়াইয়ে ৫০ জয় অ্যাটলেটিকোর, বার্সার জয় ৩৬। এছাড়া রেকর্ড টানা ৯বার কোয়ার্টার ফাইনালে পা রাখা কাতালানদের যে ২০১৪ সালে এই পর্বে থামতে হয়েছিল তো অ্যাটলেটিকোর কাছে হেরেই! সেবার ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করার পর ভিনসেন্ট ক্যালডেরনে ১-০ গোলে হেরে টানা ষষ্ঠ বার সেমিফাইনালে পা রাখার পর থামতে হয়েছিল বার্সাকে। গত ৮ মৌসুমে অ্যাটলেটিকোয় একমাত্র দল যারা বার্সার সেমিফাইনালের পথ রোধ করতে পেরেছিল। এসব প্রেরণা তো আছেই ডিয়েগো সিমিওনের দলের। সাথে গ্রিজম্যান-কোকেরাও আছে দারুণ ছন্দে। গেলবারের মত এবারও নিজেদের গোলবার অক্ষত রেখে একটি মাত্র গোলই যথেষ্ঠ হবে বার্সার টানা দ্বিতীয় ট্রেবল জয়ের পথ রুদ্ধ করে দিতে। দলের ফরোয়ার্ড কোকের কন্ঠে যেন তারই প্রত্যয়Ñ ‘আমি নিñিত এটা একটা বিশেষ রাত হতে যাচ্ছে। পরিস্থিতির খাতিরে অন্য দিন হয়ত আমরা নাও জিততে পারতাম। কিন্তু ঘরের মাঠে আজ আমরা ঘুরে দাড়াতে যাচ্ছি।’ এদিন আবশ্য ফার্নান্ডো তোরেসকে ছ্ড়াাই মাঠে নামতে হবে তাদের। চোটের কারনে থাকবে না থিয়াগো মেন্ডিসও।
একই রাতে আসরের একই পর্বে পর্তুগালের রাজধানী লিবসনে লড়বে স্বাগতিক বেনফিকা ও জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ। পেপ গার্দিওলার দল ঘরের মাঠে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে পরের রাউন্ডে এক পা দিয়ে রেখেছে ঠিকই, তবে ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানো সক্ষমতা আছে পর্তুগিজ চ্যম্পিয়নদেরও। যদিও এর আগে ৭ বারের দেখায় একবারও জয়ের রেকর্ড নেই বেনফিকার, ৫টিতেই হার। তবে বায়ার্নকে ২ বার আটকে দেয়ার (ড্র’র) সান্ত¦নাও আত্মতুষ্টি দিতে পারে পর্তুগিজ ক্লাবটিকে। সেমিফাইনালে যেতে হলে হারের এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে নুন্যতম ২ গোলের ব্যবধানে জিততে হবে বেনফিকাকে।
মুখোমুখি
কো. ফাইনাল ২য় লেগ
অ্যাট.মাদ্রিদ-বার্সেলোনা
বেনফিকা-বায়ার্ন মিউনিখ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন