বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

এখনো ঝুঁকিতে উদীয়মান দেশগুলোর অর্থনীতি

প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : প্রথম সারির উদীয়মান দেশগুলোর অর্থনীতিতে এখনো ঝুঁকি রয়ে গেছে। এ অবস্থায় চলতি বছরে বৈশ্বিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। খবর : এএফপি।
সুইজারল্যান্ডের দাভোসে চলমান ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডবিøউইএফ) উপলক্ষে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আইএমএফ। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস কমানোর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছে আইএমএফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, চীনের শ্লথ অর্থনীতি, শক্তিশালী ডলার, তেলের দরপতন ও রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় রাশিয়া, ব্রাজিল ও মধ্যপ্রাচ্যের বেশকিছু দেশকে আরো মূল্য দিতে হবে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও যার একটি ছাপ থাকবে। চীন যদি অর্থনৈতিক সংস্কার সম্পন্ন করতে না পারে, তাহলে সামনে আরো বিপদ রয়েছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
অন্যদিকে ইউরোপ যখন আবারো প্রবৃদ্ধিমুখী হওয়ার চেষ্টা করছে ঠিক, সে সময়ই শরণার্থী সংকট এ অঞ্চলকে নতুন চ্যালেঞ্জের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফলে ইউরোপে এবার অর্থনীতি প্রসারিত হলেও তা প্রত্যাশা অনুযায়ী হবে না। এ সব কিছুর প্রভাব অনুমান করে আইএমএফ বলছে, চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রসারিত হবে। গত বছর অর্জিত ৩ দশমিক ১ শতাংশের তুলনায় এটি বেশি হলেও অক্টোবরে দেয়া পূর্বাভাসের চেয়ে তা দশমিক ২ শতাংশ কম।
চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি স¤প্রসারণের ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোই ভরসা বলে উল্লেখ করেছে আইএমএফ। যদিও এসব দেশের অর্থনীতিও প্রত্যাশিত স¤প্রসারণের মধ্যে থাকবে না। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এ বছর ২ দশমিক ৬ শতাংশ প্রসার হবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ, যা আগের পূর্বাভাসের চেয়ে দশমিক ২ শতাংশ কম। শক্তিশালী ডলারের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের রফতানি থেকে আয় কমে যাওয়ার পাশাপাশি বিনিয়োগ হ্রাসই প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার মূল কারণ। অন্যদিকে স্পেনের অর্থনীতি পুনরায় শক্তিশালী হওয়ায় ইউরোপের প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ হবে। জাপানের প্রবৃদ্ধিও অল্প বাড়বে।
আর চীনের প্রবৃদ্ধি আরো শ্লথ হয়ে চলতি বছর ৬ দশমিক ৩ শতাংশে পৌঁছবে। গত বছর যা ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ।
অবশ্য চীনের অর্থনীতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আইএমএফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, অর্থনীতির মডেল রূপান্তরের চেষ্টায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি নিজেদের আর্থিক খাত আধুনিকায়নে সক্ষম হবে চীন। অবশ্য এরপরও চীনের সংকোচনের ধারা আগামী বছর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করছে সংস্থাটি।
এদিকে তেলের বাজারে অব্যাহত দরপতনে অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজের (ওপেক) শক্তিধর দেশ সউদি আরবের অর্থনীতিও ঢিমেতালে এগোবে বলে সতর্ক করেছে আইএমএফ। গত অক্টোবরে সংস্থাটি জানিয়েছিল, চলতি বছর সউদি আরবের প্রবৃদ্ধি হবে ২ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু গতকাল দেয়া পূর্বাভাসে তা ১ দশমিক ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। পূর্বাভাস মিলে গেলে এটি হবে ২০০৯ সালের পর সউদি আরবের সবচেয়ে শ্লথ প্রবৃদ্ধি। সে সময় বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কারণে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম মারাত্মক কমে যাওয়ায় সউদি অর্থনীতি ২ দশমিক ১ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। অবশ্য আগামী বছর সউদির অর্থনীতির পালে কিছুটা হাওয়া লাগবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ।
অন্যদিকে ব্রাজিলের মন্দার কারণে গোটা লাতিন আমেরিকাই ভুগবে বলে ধারণা করছে আইএমএফ। চলতি বছর ব্রাজিলের অর্থনীতি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হবে। গত অর্থবছরে ব্রাজিলের অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ মরিস অবস্টফেল্ড এক বিবৃতিতে জানান, এ বছরটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের সময় হয়ে উঠতে পারে। স্বল্প সময়ে কীভাবে স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে নীতিনির্ধারকদের ভাবতে হবে। এ বছর অর্থনৈতিক স¤প্রসারণ সমানতাল এগোবে না; বিশেষ করে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশগুলো সবচেয়ে ভুক্তভোগী হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন