বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে তফসিলভুক্ত হওয়ার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে তফসিলভুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। শিগগিরই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তফসিলভুক্ত হওয়ার প্রজ্ঞাপন জারি হলে দেশে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াবে ৫৮টিতে। বর্তমানে দেশে সরকারি খাতে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাচ্ছে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ও দুটি বিশেষায়িত ব্যাংক। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তফসিলভুক্ত হওয়ায় সরকারি খাতে বাণিজ্যিক ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়াল নয়টি। ৪০টি বেসরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি নয়টি বিদেশী ব্যাংক দেশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সূত্রমতে, প্রবাসীদের কল্যাণের লক্ষ্যে ২০১১ সালের ২০ এপ্রিল যাত্রা করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। বিশেষায়িত ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১৬ সাল থেকেই বাণিজ্যিক কার্যক্রমে আসার উদ্যোগ শুরু করে ব্যাংকটি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের তফসিলভুক্তির জন্য ব্যাংকটির প্রয়োজন ছিল ৪০০ কোটি টাকার মূলধন। গত দুই বছর ধরেই অর্থ মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মূলধন জোগান নিয়ে টানাপড়েন ছিল। শেষ পর্যন্ত ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের জোগান দেয়া অর্থেই ৪০০ কোটি টাকার মূলধন জোগাড় করেছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এর মধ্যে মাত্র ২০ কোটি টাকা জোগান দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বর্তমানে ব্যাংকটির মূলধনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪২৯ কোটি টাকা।
যাত্রার পর থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিদেশ গমনেচ্ছুদের জন্য ‘অভিবাসন ঋণ’ এবং বিদেশ ফেরতদের জন্য ‘পুনর্বাসন ঋণ’ দিয়ে আসছে। ব্যাংকটির মূল ঋণ প্রডাক্টই এ দুটি। তফসিলভুক্ত না হওয়ায় এ ব্যাংকটি গ্রাহকদের কাছ থেকে কোনো আমানত সংগ্রহ করতে পারেনি। তবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের প্রধান শাখা বিদেশ গমনেচ্ছুক কর্মীর কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ফি, স্মার্টকার্ড ফি এবং ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ ফি গ্রহণ করে থাকে।
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের তথ্য মতে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকটি মোট ২৮ হাজার ৫২২ জন গ্রাহককে ২৯০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এর মধ্যে আদায় হয়েছে ২১১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। বর্তমানে ১৫ হাজার ৩৯৫ জন গ্রাহকের কাছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ১২৮ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ রয়েছে সাত কোটি টাকা, যা ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের ৬ শতাংশ।
ব্যাংকটির বিতরণকৃত ঋণের প্রায় শতভাগই অভিবাসন ঋণ। বিদেশ গমনেচ্ছুদের মধ্যে এ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। গত সাত বছরে বিদেশ ফেরত মাত্র ১৬০ জন গ্রাহককে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। সীমিত পরিসরে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও মুনাফায় আছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। ব্যাংকটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকটির এ মুনাফা বেড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন