অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, শ্রমিক ও কারখানার মালিকদের নিয়ে সরকার শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রম-আইন সংশোধন করেছে। শ্রমিক ও কারাখানার মালিকদের মধ্যে সম্পর্ক বেশ ভালো। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে কারখানায় উৎপাদন কাজ চলছে। ইতোমধ্যে দেশের তৈরি পোশাক কারখানাগুলোকে কমপ্লায়েন্স করা হয়েছে। ক্রুটিপূর্ণ কারখানাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারখানাগুলোর বিল্ডিং সেফটি, ফায়ার সেফটিসহ শ্রমিকদের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করাপ হয়েছে। অপ্রাশিত রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর দেশে আর কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। কারখানা ভবনের সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়েছে। দেশে এখন আন্তর্জাতিক মানের গ্রিন ইন্ডাস্ট্রি গড়ে উঠছে।
মন্ত্রী বলেন, ইপিজেড-এর শ্রমিকরা শ্রম-আইনের বিধান মোতাবেক সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। বাইরের কারখানাগুলোর শ্রমিকদের চেয়েও তারা বেশি বেতন পাচ্ছেন। তারা ওয়ার্কার্স ওয়েল ফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন গঠন করে মালিক পক্ষের সাথে বার্গেনিং করছেন। সেখানে কোনো শ্রমিকের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে না। ইউকে এন্ড ইএস এইড-এর অর্থায়নে ডেমোক্রেটিক ইন্টারন্যাশনাল-এর এক সার্ভে রিপোর্টে দেখা গেছে ইপিজেড-এর শ্রমিকরা কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্য থেকে তাদের শ্রমিক নেতা নির্বাচন করতে আগ্রহী।
কারখানার কাজের পরিবেশ এবং বেতন কাঠামোয় তারা সন্তুষ্ট। ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন, ইউএসএসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতগণ বিভিন্ন তৈরি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী গতকাল বাংলাদেশ সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘে কেনিয়ার প্রতিনিধি মিনিস্টার কান্সিলর, লেবার মিসেস এলিজাবেথ ফেইথ অনুকো’র নেতৃত্বে আগত ৫ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একটি কারখানার ৩০ ভাগ শ্রমিক একটি ইউনিয়ন গঠন করার জন্য লিখিত আবেদন করলে শ্রমিক ইউনিয়ন গঠনের অনুমতি প্রদান করা হয়। বাংলাদেশে শ্রমিকরা পূর্ণ অধিকার ভোগ করছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার শ্রমিকদের উপযুক্ত মজুরি নিশ্চিত করেছে। কারখানা পরিদর্শনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শ্রম পরিদর্শক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সরকার ইতোমধ্যে দেশে ১০০টি স্পেশাল ইকোনোমিক জোন গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ৩০টির স্থান নির্বাচন করা হয়েছে এবং ১০টি উদ্বোধন করা হয়েছে। এতে করে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করছে।
এখন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এগিয়ে আসছে। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে শ্রম-আইনের বাস্তবায়ন অনেক ভালো। চীন তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশে^র মধ্যে প্রথম, দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। চীনে কোনো শ্রমিক ইউনিয়ন নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেসরকারি কারখানার ৭ ভাগে এবং সরকারি কারখানার ৩৫ ভাগে শ্রমিক ইউনিয়ন রয়েছে। ভিয়েতনামে শ্রমিক কারখানার নেতা থাকেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশের বর্তমান সরকার শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতিশীল। বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষা করা হয়েছে। সরকার শ্রমিকদের সে অধিকার নিশ্চিত করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত সচিব মো. শওকত হোসেন ওয়ারেছিসহ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন