শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চাঁদপুরে ৫১ হজ যাত্রীর পৌনে দুই কোটি টাকা নিয়ে পালিয়েছে ট্রাভেলস এজেন্সি

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁদপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৮, ৩:৫৯ পিএম

ট্রাভেলস এজেন্সীর প্রতারণার কারণে এবার হজে যেতে পারেননি চাঁদপুরের ৫১জন হজযাত্রী। শহরের বিভিন্ন এলাকার ৫১ জন হজ যাত্রীর প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার হজ যাত্রীরা মোল্লা ট্রাভেলস্ ও ডি লাইট এয়ার এক্সপ্রেস অফিসে গিয়ে প্রতারণার কথা জানতে পেরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

কাগজপত্রের বিবরণ ও কয়েকজন যাত্রীর সাথে আলাপ করে জানাযায়, মোল্লা ট্রাভেলসের (হজ লাইসেন্স নং ১০৪৬) ও ডি লাইট এয়ার এক্সপ্রেসের (হজ লাইসেন্স নং ৭২৮) ৫১জন হজ যাত্রীর মধ্যে ১৭ জনের ফ্লাইট ৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার হওয়ার কথা ছিল। সে জন্যে তারা ৭ আগস্ট ঢাকায় যান। সেখানে এজেন্সির হজ পরিচালক আলহাজ মোঃ শাহজাহান তাদেরকে কাকরাইল মসজিদে রেখে হজের আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র না দিয়ে চলে যান। এতে হজ যাত্রীদের মাঝে সন্দেহ হলে তারা গ্রামের বাড়ীতে যোগাযোগ করেন।

হজ যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজন ও হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধনকারী অন্যান্য হজ যাত্রীরা চাঁদপুর অফিসে গিয়ে জানতে পারেন প্রতিষ্ঠানের মালিক মোঃ মাহমুদ হাসান মোবাইল বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। অফিসের সাইনবোর্ডও খুলে ফেলা হয়েছে। অফিসে আল আমিন নামক একজন পিয়ন কাম কম্পিউটার অপারেটর বসা রয়েছে। তবে আল আমিন জানান, আমি কিছুই জানিনা। চাকুরিতে যোগ দিয়েছি ১ মাস হয়েছে। আল আমিন আরো জানান, এ অফিস থেকে ৫১জন হজ যাত্রীকে সিভিল সার্জন অফিসে নিয়ে টিকা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ২জন হজের জন্য সৌদি আরবে গেছেন।
কয়েকজন যাত্রী জানান, ঢাকা কাকরাইল মসজিদে থাকা ১৭জন হজ যাত্রী ৮ আগস্ট রাজধানীর পল্টন থানায় মোঃ মাহমুদ হাসান প্রকাশ মাসুদের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেছেন। যার জিডি নং ৫৫৮।

পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন বড়–য়া জানান, মো. মাসুদ হোসেন প্রকাশ মাহমুদ প্রতারকের আসল নাম নয়, তার আসল নাম হলো তাজুল ইসলাম মোল্লা। তার বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় হজে নেয়ার নাম করে টাকা আত্মসাতের আরো ২টি মামলা রয়েছে। আমরা তাকে দীর্ঘ দিন গ্রেফতার করার চেষ্টা করছি।

হজ যাত্রীদের মধ্যে শহরের সিলন্দিয়া গ্রামের আবুল বাসার মুন্সি, তার স্ত্রী ফাতেমা মুন্সি ও ছেলে খোরশেদ আলম জানান, তারা ৩ জন হজে যাওয়ার জন্য মোট ১০ লাখ টাকা দিয়েছে। জিটি রোডের শামসুন্নাহার জানান, তিনি ৩ লাখ টাকা দিয়েছেন। স্বর্ণখোলা রোডের অলিউল্যাহ ও তার স্ত্রী জোন্সা বেগম দিয়েছেন ৬ লাখ টাকা, শাহমুদপুর ইউনিয়নের কেতুয়ার মো. রফিকুল ইসলাম ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা একইভাবে বালিয়া ইউনিয়নের কুমুরুয়ার আবু তাহের, স্বর্ণখোলা রোডের মাহফুজা বেগম ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন বলে জানান। এভাবে টাকা দিয়েছেন ৫১জন যাত্রী। তাদের দেয়া টাকার পরিমাণ প্রায় দেড় কোটিরও বেশী।

কাকরাইল মসজিদে থাকা প্রকৌ. খোরশেদ আলম মুঠোফোনে জানান, আমারা প্রতারণার কথা বুঝতে পেরে মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছি। এজেন্সির হজ পরিচালক আলহাজ মো. শাহজাহানও আমাদের ফোন রিসিভ করছেন না। এখন আমাদের কি উপায় হবে আল্লাহ ভাল জানেন।

মোল্লা ট্রাভেলস্ ও ডি লাইট এয়ার এক্সপ্রেসের হজ পরিচালক আলহাজ মো. শাহজাহানের মুঠোফোনে কল করলে তার স্ত্রী পরিচয়ে রিসিভ করে নাম না বলে জানান, শাহজাহান আমার স্বামী। তিনি অসুস্থ। মিরপুর-১১তে ডেল্টা হেলথ কেয়ার হসপিটালে ভর্তি রয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন