কয়েকশ মানুষের জনসমাগম ঘটানোর কথা বললেও রোববার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে আয়োজিত শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২০ জন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের শার্লটসভিলের বিক্ষোভের বর্ষপূর্তিতে রোববার শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা হোয়াইট হাউসের কাছে ‘ইউনাইট দ্য রাইট টু’ নামের ওই সমাবেশের আয়োজন করে। কাছাকাছি একটি এলাকায় এদিন শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের বিরোধীরাও বিক্ষোভ করেছে। তবে গত বছরের মতো এবার সহিংসতা কিংবা রক্তপাত ঘটেনি।
বিবিসি জানিয়েছে, পুলিশি পাহারায় দুই পক্ষ মুখোমুখি হতে পারেনি, যা অনেককে স্বস্তি দিয়েছে। গত বছরের আগস্টে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একজনের প্রাণহানি ও অনেকে আহত হয়েছিল।
গত বছরের আগস্টে ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলেতে আমেরিকার কয়েক দশকের সবচেয়ে বড় জমায়েতের আয়োজন করেছিল শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা। দাসপ্রথার বিলোপবিরোধী এক কনফেডারেট জেনারেলের ভাস্কর্য সরানোর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিল তারা। এর বিরুদ্ধে পাল্টা বিক্ষোভে নেমেছিল বর্ণবাদবিরোধীরা। একজন গাড়িচালক নব্য নাৎসিবাদী কায়দায় বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গাড়ি নিয়ে হামলা চালালে হেদার হেয়ের নামে ৩২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়। পরে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অনেকে আহত হয়।
শার্লটসভিলের বিক্ষোভ-সহিংসতার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে রোববার দ্বিতীয় দিনের মতো ‘ইউনাইট দ্য রাইট টু’ নামের সমাবেশের আয়োজন করে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা।
হোয়াইট হাউসের কাছে লাফায়েট স্কয়ারে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা ৪০০ মানুষের সমাগম হবে জানিয়ে প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতির জন্য আবেদন করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ২০ জনের বেশি মানুষের সমাগম ঘটাতে পারেননি তারা। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীদের পুলিশি পাহারায় লাফায়েট স্কয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। পথে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা ‘লজ্জা’ ‘আমার শহর থেকে বেরিয়ে যাও’ বলে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদীরা লাফায়েট স্কয়ারে জমায়েত হওয়ার পর পরই বৃষ্টি শুরু হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা পর প্রচন্ড বৃষ্টির মধ্যেই সমাবেশ শেষ হয় এবং সমর্থকদেরকে দুইটি পুলিশ ভ্যানে করে এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়। পেনসিলভ্যানিয়া এভিনিউর ফ্রিডম প্লাজায় পাল্টা সমাবেশের আয়োজন করে বর্ণবাদবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট কর্মী, ফ্যাসিবাদবিরোধী ‘আন্তিফা’ আন্দোলনকারীদের পাশাপাশি স্থানীয়রাও এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দুটি বিক্ষোভই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। গত বছরের সহিংসতার কথা মনে করে যারা উদ্বেগে ছিলেন, তারা অনেকেই স্বস্তি পেয়েছেন। ‘ইউনাইট দ্য রাইট’ এর সমর্থকদের কাছ থেকে বিরোধী পক্ষকে দূরে রাখতে সক্ষম হয় পুলিশ। বিক্ষোভ এলাকায় কড়া নিরাপত্তা ছিল এবং সব ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
এর আগে শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার শার্লটসভিলের রাস্তায় নামে শত শত বিক্ষোভকারী।
শত শত শিক্ষার্থী ও বামপন্থী কর্মী এ বিক্ষোভে অংশ নেয়। আগের বছরের মতো সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে আগে থেকেই কঠোর ব্যবস্থা নেয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বিক্ষোভকারীদের অনেকে পুলিশবিরোধী স্লোগান দেয়। আওয়াজ ওঠে ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও। বিক্ষোভকারীরা বলছে, গত বছরের তুলনায় এবার তাদের কর্মসূচিতে পুলিশি ব্যবস্থা ছিল বেশ কঠোর। -বিবিসি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন