মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সুয়ারেজে ৪, বার্সেলোনা ৮, দিপোর্তিভো ০

প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : একটি গোলের জন্য কতই না হাপিত্যেশ ছিল দলটির! গোল পাচ্ছিলেন না বার্সার আক্রমণের ত্রিফলা মেসি, সুয়ারেজ ও নেইমারও। দলও হঠাৎ ছিটকে পড়েছিল পরাজয়ের বৃত্তে। লা লিগায় টানা চার ম্যাচ জয়হীন থাকা আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বাদ পড়া, সব রাগের বহিঃপ্রকাশ যেন পারশু দিপর্তিভো লা করুনার ওপর একসাথে ঢেলে দিল বার্সেলোনা। শেষ তিন ম্যাচে মাত্র দুই গোল করার হিসাবটাও এদিন চুকিয়ে নিলেন ‘এমএসএন’ ত্রয়ী। সবচেয়ে বেশি আগ্রাসি ছিলেন লুইস সুয়ারেজ। বার্সা নাম্বার নাইন একাই করলেন চার গোল, তিনটিতে সহায়তা। সব মিলে ৮-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে দিপর্তিভোকে হারালো স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে আসে ৬ গোল। দুই গোলে সহায়তার পাশাপাশি একটি গোল করেন লিওনেল মেসি, বাকি তিনটি গোল ইভান রাকিটিচ, মার্ক বার্তা ও নেইমারের নামে।
লিগে শেষ ১৭ ম্যাচে মাত্র একটি জয় পেলেও দিপোর্তিভকে এদিন সহজভাবে নেওয়ার কোন উপায় ছিল না। লিগে ইতোমধ্যেই ‘ড্র স্পেশালিস্ট’ নাম হয়ে গেছে তাদের। ৩৩ ম্যাচের ১৭ টিই ড্র করেছে তারা। বার্সার বিপক্ষে নিজেদের মাঠে তাই তারা এমন ফল আশা করতেই পারে। সাথে প্রথম লেগে বার্সার মাঠ থেকে ড্র করে ফেরা ও মেসি-নেইমারদের বাজে ফর্ম দু’টিই অনুপেরেণা হিসেবে ছিল স্বাগতিকদের। এদিন ড্র করলেই লিগের ইতিহাসে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ ড্র করার রেকর্ডও করে ফেলত তারা। তারাও জানত কাজটা অতটা সহজ হবে না। কিন্তু বার্সা যে এতটা বিধ্বংসী রুপে ফিরবে তা হয়ত ভাবতেই পারিনি দিপোর্তিভো।
এদিন মৌসুমে দ্বিতীয় চার গোলের দেখা পেলেন সুয়ারেজ। আগেরটি ছিল ন্যু ক্যাম্পে ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে (৭-০ গোলের জয়)। মোট ৪৮ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯টি। বার্সার জার্সি গায়ে এতদিন এক মৌসুমে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোল ছিল ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদোর (৪৭)। সেটিকে ছাড়িয়ে গেলেন বার্সা নাম্বার নাইন, ব্যবধানটা বাড়ানোরও ঢের সময় থাকছে তার সামনে। নিশ্চয় বুঝে নিয়েছেন ৮২ গোল নিয়ে এই তালিকার শীর্ষ ব্যক্তিটি কে! তবে এতকিছুর পরেও সুয়ারেজ কিন্তু শুধুমাত্র দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরেই খুশিÑ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয় হল গোলগুলো কাঙ্খিত জয় নিশ্চিত করেছে, খারাপ একটা সময় কাটানোর পর যা খুবই দরকারি ছিল। লক্ষ্যে পৌঁছাতে এই চেষ্টা অব্যহত রাখব।’ খারাপ সময়ের ব্যপারেও কথা বলতে হয় উরুগুয়ান তারকাকেÑ ‘আমরা মানুষ, ম্যাশিন তো নয় এবং আমরাও ভুল করতে পারি অথবা খারাপ খেলতে পারি।’ সবচেয়ে স্বস্তিতে ফিরেছেন সম্ভবত দলের কোচ লুইস এনরিকেÑ ‘এটা আমাদের জন্য একটা দর্শনীয় জয়।’ তবে এমন জয়ে গা না ভাসিয়ে পরবর্তি লক্ষ্যের কথা জানান দিলেন বার্সা গুরুÑ ‘শিরোপা জিততে আমাদের সামনে বিষ্ময়কর চ্যালেঞ্জ। সামনে এখনো চার ম্যাচ বাকি, আমি নিশ্চিত এটা সহজ হবে না।’
অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদও বার্সার সাথে সহযাত্রা অব্যহত রেখেছে। দু’দলের পয়েন্টই সমান ৭৯ করে। শুধু গোল ব্যবধানে এগিয়ে শীর্ষে বার্সা। অ্যাথলেটিক বিলবাওয়ের মাঠ থেকে এদিন একমাত্র গোলের জয় নিয়ে ফেরে অ্যাটলেটিকো। দলের গুরুত্বপূর্ণ গোলটি করেন নতুন করে নিজেকে চেনাতে শুরু করা ফার্নান্ডো তোরেস। ইংলিশ লিগে ‘পরিত্যাক্ত’ তোরেস ২০০৩ সালের পর এবারই লিগে টানা চার ম্যাচে গোল পেলেন। তবে সিমিওনের দলকে এদিন জয়ের সাথে উদ্বেগ নিয়ে ফিরতে হয়েছে। হ্যামস্ট্রিং চোটের কারনে ম্যাচের ১১তম মিনিটেই এদিন মাঠের বাইরে ছিটকে যান রক্ষনের প্রধান সেনানি দিয়েগো গদিন। নিজেদের পরের ম্যাচে মালাগার বিপক্ষে তো বটেই, এমনকি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালেও নাও পাওয়া যেতে পারে এই সেন্টার ব্যাককে।
রিয়াল মাদ্রিদও জানত শিরোপার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে কোনভাবেই পা হড়কালে চলবে না। ভিয়ারিয়ালের কাছ থেকে তাই ৩-০ ব্যবধানের জয়ের হিসাব মিটিয়ে নিয়ে শীর্ষ দুই দলের সাথে ১ পয়েন্টের ব্যবধান অক্ষুন্য রেখেছে তারা। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৩৮ মিনিট পর্যন্ত জিদানের দলকে ঠেকিয়ে রেখেছিল পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ চারের দলটি। কিন্তু বøাঙ্কোস দলের ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা সেই গোরে খোলেন হেডের মাধ্যমে। দ্বিতীয়ার্ধে গোল দুটি করেন লুকাস ও লুকা মড্রিস। ম্যাচের শেষ দিকে যোগ করা সময়ে খুড়িয়ে মাঠ ছাড়েন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এসময় জিদানকে বেশ উদ্বিগ্ন দেখাচ্ছিল। পরে অবশ্য পর্তুগিজ তারকার চোট সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাননি জিদানÑ ‘আমার মনে হয় ব্যাপারটা নিয়ে সে (রোনালদো) চিন্তিত। কিন্তু আমি এই মুহূর্তে কিছু বলতে পারব না। আমরা কাল (আজ) দেখব আসলে কি ঘটেছে।’ লিগে টানা আট জয়ের পর নিজের চোখে দলের উন্নতি দেখছেন বলেও জানান জিদানÑ ‘আমি খেলোয়াড়দের মনোভাবে খুশি। আমি দেখছি আমার দল ধীরে ধীরে উন্নতি করছে।’ চোটের কারণে এদিন ছিলেন না দলের আরেক আক্রমণ সারথি গ্যারেথ বেল। তবে তার চোট তেমন গুরুতর নয় বলেই জানা যায়।


বাকি ৪ ম্যাচে শীর্ষ তিন দলের প্রতিপক্ষ
বার্সেলোনা অ্যাট.মাদ্রিদ রিয়াল মাদ্রিদ
স্পোটিং গিজন মালাগা রায়ো ভলকানো*
রিয়াল বেটিস* রায়ো ভলকানো রিয়াল সোসিয়াদাদ*
এস্পানিওল লেভান্তে* ভ্যালেন্সিয়া
গ্রানাদা* সেল্টা ভিগো দিপোর্তিভো*
*এ্যাওয়ে ম্যাচ

এক নজরে ফল
দিপোর্তিভো ০ : ৮ বার্সেলোনা
রিয়াল মাদ্রিদ ৩ : ০ ভিয়ারিয়াল
অ্যাথ.বিলবাও ০ : ১ অ্যাট.মাদ্রিদ
মালাগা ১ : ১ রায়ো ভলকানো
স্পোটিং গিজন ২ : ১ সেভিয়া
ভ্যালেন্সিয়া ৪ : ০ এইবার

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন