অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ চলতি বছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স প্রেরণকারী প্রায় সব দেশ থেকেই বেড়েছে প্রবাসী আয়। তবে বরাবরের মতো মার্চ মাসেও সউদী আরবই রেমিট্যান্স প্রেরণে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত দেশভিত্তিক রেমিট্যান্স সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চ এই নয় মাসে দেশে মোট রেমিট্যান্স এসেছে ১ হাজার ১০৫ কোটি ৯৬ লাখ ডলার, যা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ কম। এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৪৯৫ কোটি ডলার। আর ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলো থেকে এসেছে ৩৬৮ কোটি ৭১ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের মার্চ মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। ফেব্রæয়ারি মাসে এর পরিমাণ ছিল ১১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। ফলে ফেব্রæয়ারির তুলনায় মার্চে রেমিট্যান্স বেশি এসেছে ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ। তবে এটি গেল বছরের মার্চের চেয়ে ৪ দশমিক ২৭ শতাংশ কম। গেল বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে দেখা যায়, মার্চ মাসে ইরান ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের অন্যসব দেশ থেকেই বেড়েছে প্রবাসী আয়। ইউরোপ আমেরিকারও ১টি ছাড়া অন্য দেশগুলো থেকেও বেড়েছে প্রবাসী আয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যা ফেব্রæয়ারি মাসে ছিল ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে দেখা যায়, মার্চ মাসে সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি ২৬ কোটি ২৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রæয়ারিতে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩ কোটি ডলার। এ মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২২ কোটি ৯৯ ডলার। যা ফেব্রæয়ারি মাসে ছিল ২১ কোটি ২১ লাখ ডলার। কুয়েত থেকে মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ৯ কোটি ১৩ লাখ ডলার। যা ফেব্রæয়ারিতে ছিল ৮ কোটি ২১ লাখ ডলার। ফেব্রæয়ারিতে ওমান থেকে ৬ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স আসলেও মার্চে এসেছে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার। মার্চে বাহরাইন থেকে ৩ কোটি ৯৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। যা ফেব্রæয়ারিতে ছিল ৩ কোটি ৪২ লাখ ডলার। এছাড়া লিবিয়া থেকেও মার্চে রেমিট্যান্স বেড়েছে। তবে মার্চে একমাত্র ইরান থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য কমেছে।
এদিকে, মার্চে ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলো থেকে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার। আগের মাস ফেব্রæয়ারিতে এসেছিল ৪৭ কোটি ডলার। এ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২০ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে। ফেব্রæয়ারি মাসে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৭ কোটি ৮২ লাখ ডলার। মালয়েশিয়া থেকে মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ১২ কোটি ২২ লাখ ডলার। যা ফেব্র্রয়ারি মাসে ছিল ৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলারে। একই ভাবে যুক্তরাজ্য থেকে ফেব্রæয়ারিতে ৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স এলেও মার্চে এসেছে ৬ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। ইতালি থেকে মার্চে রেমিট্যান্স এসেছে ২ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। যা ফেব্রæয়ারিতে ছিল ২ কোটি ২৭ লাখ ডলার। সিঙ্গাপুর থেকে ফেব্রæয়ারিতে ৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এলেও মার্চে এসেছে ৩ কোটি ৭৪৫৮ লাখ ডলার। রেমিট্যান্স বেড়েছে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিন কোরিয়া, জার্মানি, জাপান থেকেও। তবে হংকং থেকে মার্চে রেমিট্যান্স প্রবাহ সামান্য কমেছে।
এদিকে, বরাবরের মতই মার্চ মাসেও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে। যার পরিমাণ ৮৬ কোটি ডলার। আর একক ব্যাংক হিসেবে সর্বোচ্চ ৩১ কোটি ৫৫ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স আসে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী, সোনালী ও জনতা ব্যাংকের অবস্থান। এ তিনটি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স আহরিত হয়েছে যথাক্রমে ১৪ কোটি ৭৪ লাখ, ১১ কোটি ৯৫ লাখ ও ১০ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অন্যদিকে এ মাসে বিশেষায়িত বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বেসরকারী খাতের মধুমতি ব্যাংক এবং বিদেশি হাবিব ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তানের মাধ্যমে কোন প্রকার রেমিটেন্স দেশে আসেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন