বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল বিএসইসি

প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
সোমবার বিএসইসি কার্যালয়ে অনির্ধারিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান এ মন্তব্য করে বলেন, পুঁজিবাজারে বিভিন্ন সময়ে বড় ধরনের দরপতনের ঘটনা ঘটে থাকে। অনেক সময়ই এসব পতনের অন্তর্নিহিত কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। স¤প্রতি চীনের পুঁজিবাজারসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পুঁজিবাজারেও বড় ধরনের পতনের ঘটনা ঘটেছে। সারাবিশ্বের তুলনায় গত কয়েক বছর আমাদের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি বলেন, বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা নেই ধরনের কথা প্রচার করা হচ্ছে, তা মোটেও সঠিক নয়। বিভিন্ন কোম্পানির আইপিওতে চাহিদার তুলনায় ৫, ১০ এমনকি ১৫ গুণ বেশি আবেদন পড়ছে। এটি বিনিয়োগকারীদের আস্থার প্রকাশ বলেই আমরা মনে করছি। বাজারে কোনো কোনো কোম্পানির দাম কমে যেতেই পারে। আবার কোনো কোনো কোম্পানির দাম বেড়ে যেতেই পারে। এটি মূলত শেয়ারের চাহিদা ও সরবরাহের ওপর নির্ভর করে।
‘বিএসইর চেয়ারম্যান পরিবর্তন দরকার’ খন্দকার ইব্রাহীম খালেদের এমন মন্তব্য নিয়ে সোমবার একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তির পরিবর্তনের কারণে সমগ্র সিস্টেম পরিবর্তন হয়ে যাবে, এই কথার সঙ্গে আমরা একমত নই। কারণ একটি প্রতিষ্ঠান চলে সম্মিলিতভাবে। একজন ব্যক্তির কারণেই যে পুরো প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হয়ে যাবে বা পুঁজিবাজারের পরিবর্তন হয়ে যাবে তা আমরা মনে করি না।
বাজারের আস্থা ফিরিয়ে আনতে গত কয়েক বছর বিএসইসির বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে বিএসইসির এ নির্বাহী বলেন, একটি জবাবদিহিমূলক এবং স্বচ্ছ বাজার গড়ে তোলাই হচ্ছে আমাদের লক্ষ্য। কোম্পানির নিরীক্ষক, ইস্যু ম্যানেজার ও ইস্যুয়ার কোম্পানির জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) ক্ষেত্রে পাবলিক ইস্যু রুলস-২০০৬ পরিবর্তন করে নতুন রুলস-২০১৫ করা হয়েছে। যাতে অনেক বেশি ডিসক্লোজার সংযুক্ত করা হয়েছে।
বাজার মনিটরিংয়ে উন্নত সার্ভিলেন্স ব্যবস্থা চালুর বিষয়টি উল্লেখ করে সাইফুর রহমান বলেন, লেনদেনে কোনো কারসাজি হলে তা তাৎক্ষণিক সার্ভিলেন্স ব্যবস্থায় ধরা পড়ছে। আমাদের সিস্টেমে অ্যালার্ট আসে। তার ভিত্তিতে আমরা প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত করে থাকি। প্রয়োজন হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এমনকি কারসাজি খতিয়ে দেখার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জেও পাঠানো হয়।
অনিয়মের কারণে বেশকিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স¤প্রতি আরএন স্পিনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে অপসরণ করা হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইস্যু ম্যানেজারের সনদ বাতিল করা হয়েছে, বলেন সাইফুর রহমান।
২০১৫ সালে দেশের পুঁজিবাজারের পরিধি সাড়ে ৪ শতাংশ কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর পেছেনে বড় পুঁজির কোম্পানি লাফার্জ সুরমা, তিতাস গ্যাস ও গ্রামীণফোন এই ৩ কোম্পানির ভূমিকা ছিল। এসব কোম্পানির নিজ নিজ নিয়ন্ত্রক সংস্থার পদক্ষেপের কারণে তাদের শেয়ারের দর কমেছে। এ কারণে বাজারেও তার প্রভাব পড়েছে।
এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) নব নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ বিএসইসি চেয়ারম্যান ড. খায়রুল হোসেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৈঠক শেষে বিএসইসির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, বিনিয়োগাকারীদের প্রটেকশন দেয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। গত কয়েক বছরে বেশকিছু সংস্কামূলক করেছি। বিশ্ব পুঁজিবাজার ও ২০১০-১১ সালের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজার বেশ স্থিতিশীল।
তিনি বলেন, কেউ কোনো অপরাধ করলে আমার তার শস্তির ব্যবস্থা করছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাজারে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা। সে জন্য সরকারের সহায়তায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বিএমবিএ’র নবনির্বাচিত সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান বলেন, ২০১৪-১৫ সালে যে পরিবর্তনগুলো হয়েছে তার ফলাফল পাওয়ার পর্যায়ে চলে এসেছে। আমরা আশা করছি ২০১৬ সালে বাজার একটি ভালো অবস্থানে আসবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন