ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভূক্ত সি-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে উভয় সংকটে পড়েছে প্রশাসন। এক দিকে অনুষধীয় শিক্ষকদের পরামার্শ পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া এবং অন্যদিকে নিজেদের ইমেজ ধরে রাখতে ভর্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা প্রশাসন এমন অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে কোর কমিটি বাতিল করেছে প্রশাসন। পরীক্ষা বাতিলের দাবি উঠায় নতুন কোর কমিটি ও ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরী সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
জানা যায়, সোমবার ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদভূক্ত সি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন এবং ওএমআর এর মাঝে অমিল ধরা পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে হল পরিদর্শকদের ৩ ধরনের নির্দেশনায় উত্তর করে বাণিজ্য শাখার ৪হাজার ৪১৬ জন শিক্ষার্থী। এতে ফলাফল বিড়ম্বনা ও অকৃতকার্য হবার শঙ্কায় পরীক্ষা বাতিলের দাবি তুলেন পরীক্ষার্থী ও হল পরিদর্শকরা। পরে ওই দিন সন্ধ্যা ৬টায় অনুষদীয় সভা করা হয়। এতে সর্বসম্মতভাবে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় ভিসি অফিসে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অনুষদীয় কমিটির পরীক্ষা বাতিলের লিখিত সুপারিশ পেশ করা হয়।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মিজানুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. অলী উল্যাহ ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারীর সাথে সাক্ষাত করে পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের ইমেজ ঠিক রাখতে কারো কথায় কর্ণপাত করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে প্রফেসর ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ইউনিটভূক্ত শিক্ষক, শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত এবং পত্রপত্রীকায় যে নিউজে প্রমানিত হয় পরীক্ষাটি সম্পুন্ন হযবরল অবস্থায় হয়েছে। যাতে একজন পরীক্ষার্থী সঠিকভাবে পরীক্ষা দিতে পারেনি এবং এতে কোন মেধার মূল্যায়ন হবে না। প্রশাসন যদি কারো কথায় কর্ণপাত না করে তাদের মত চলে তাহলে আপাতত তাদের মঙ্গল দেখলেও পরবর্তীতে সেটা বিশ^বিদ্যালয়ের জন্য কাল হয়ে দাড়াবে।
সি ইউনিটের কেলেঙ্কারী নিয়ে বিকেল ৫টায় ভিসি ড. রাশিদ আসকারী পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দেন। এতে আহ্বায়ক হিসেবে ড. জাকারিয়া রহমান (মার্কেটিং), ড. সাইফুল ইসলাম (ব্যবস্থাপনা), ড. জহুরুল ইসলাম (আইন) ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন, (আইসিই) ও ড. জাকির হোসেনকে (হিসাববিজ্ঞান) সদস্য করা হয়। কমিটিকে প্রশ্ন এবং ওএমআর শিটের অমিল, অসঙ্গতির জন্য দ্বায়ী ব্যাক্তি ও পরবর্তী করনীয় নির্ধারণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, সি ইউনিটের তিন সদস্যের পূর্বের কোর কমিটি বাতিল করে পৃথক কমিটি করা হয়েছে। এতে সমন্বয়কারী হিসেবে রয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের সভাপতি ড. জাকারিয়া রহমান, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ড. মিজানূর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. সাইফুল ইসলাম। তাদেরকে তদন্ত কমিটির প্রদিবেদন অনুযায়ী সি ইউনিটের ভর্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে ভিসি ড. রাশিদ আসকারী বলেন ‘ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত বড় সিদ্ধান্ত। পরীক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলে দোষীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। আর কারো কথায় কর্ণপাত করা না করার কোন বিষয় এখানে জড়িত না। আমরা সবার মতামত গ্রহন করেছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন