অর্থনৈতিক রিপোর্টার : টানা সাত কার্যদিবস দরপতনের পর মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ালেও গতকাল আবারও পতন হয়েছে দেশের উভয় শেয়ারবাজারে। এদিন দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দরপতন হয়েছে। তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন কমলেও অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বিনিয়োগ (এক্সপোজার) সমন্বয় ইস্যু নিয়ে বেশ কিছুদিন দরপতন ছিল শেয়ারবাজারে। এখন বাংলাদেশ ব্যাংক এক্সপোজার সমন্বয়ের বিষয়টি সমাধানের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। সেই খবরে গত মঙ্গলবার সূচকের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও একদিন পরই আবার পতন হয়েছে।
এদিন ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ১৩ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স কমেছে ১২ পয়েন্ট।
এদিন উভয় পুঁজিবাজারে মোট লেনদেন হয়েছে ৪২৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকার। গত মঙ্গলবার উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৪২৯ কোটি ৪ লাখ টাকার। সুতরাং গত কার্যদিবসের তুলনায় এদিন উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেন কমেছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ডিএসই ও সিএসই’র ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিন ডিএসইতে টাকার অঙ্কে মোট লেনদেন হয়েছে ৪০০ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৪০৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকার। সুতরাং এক কার্যদিবসের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৫ কোটি ৯ লাখ টাকা।
এদিন ডিএসইতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ২৫৮ পয়েন্টে, ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ১ দশমিক ৮৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪২ পয়েন্টে এবং ২ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট কমে ডিএসই-৩০ সূচক দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১৮টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৯৪টির, কমেছে ১৯৮টির এবং কোনও পরিবর্তন হয়নি ২৬টি কোম্পানির শেয়ার দর। এছাড়া টাকার অঙ্কে এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলো- বিএসআরএম লিমিটেড, লিন্ডে বাংলাদেশ, বিএসআরএম স্টিল, মবিল যমুনা, বেক্স ফার্মা, ইউনাইটেড পাওয়ার, স্কয়ার ফার্মা, ফারইস্ট নিটিং, লংকা বাংলা ফাইন্যান্স এবং ডোরিন পাওয়ার।
অন্যদিকে এদিন সিএসইতে মোট শেয়ার লেনদেনের পরিমান ২৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। গত মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ২৩ কোটি ১৯ লাখ টাকার শেয়ার। সুতরাং এক কার্যদিবসের ব্যবধানে সিএসইতে শেয়ার লেনেদেন বেড়েছে ২ কোটি ৫৯ লাখ টাকার বেশি।
এদিন সিএসইতে প্রধান সূচক সিএসসিএক্স ১২ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৯৬৯ পয়েন্টে, সিএএসপিআই সূচক ২৩ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ১০৫ পয়েন্টে এবং সিএসই-৫০ সূচক ০ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে ৯৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে এদিন সিএসই-৩০ সূচক ৭ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে ১২ হাজার ১৪১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৩৫টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৯টির, কমেছে ১৩৯টির এবং কোনও পরিবর্তন হয়নি ২৭টি কোম্পানির শেয়ার দর।
টাকার অঙ্কে এদিন সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি হলোÑইসলামী ব্যাংক, বিএসআরএম লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার, বিএসআরএম স্টিল, বেক্সিমকো লিমিটেড, অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, ডোরিন পাওয়ার, কেয়া কসমেটিকস, লংকা-বাংলা ফাইন্যান্স এবং স্কয়ার ফার্মা।
ডিএসই থেকে রাজস্ব আদায় বেড়েছেঃ
গত মার্চের তুলনায় এপ্রিলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে রাজস্ব আদায় বেড়েছে আড়াই কোটি টাকা। অবশ্য তার আগের মাসে ডিএসইর রাজস্ব আদায় হ্রাস পেয়েছিলো। ডিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। ডিএসইর সূত্রমতে, এপ্রিল মাসে ডিএসই থেকে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ১২ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার ১২৫ টাকা। এর মধ্যে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি বাবদ সরকার রাজস্ব পেয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ লাখ ৪৩২ টাকা। আর উদ্যোক্তা পরিচালকরা দিয়েছেন ৫ কোটি ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৩ টাকার রাজস্ব।
এছাড়া মার্চ মাসে ডিএসই থেকে রাজস্ব আদায় হয় ১০ কোটি ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। আর ফেব্রুয়ারিতে ডিএসই থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ১২ কোটি ৪৮ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। মূলত ডিএসইর সদস্য বা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর পাশাপাশি উদ্যোক্তা পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার বিক্রি বাবদ পুঁজিবাজার থেকে রাজস্ব আদায় করে সরকার।
এপ্রিল মাসে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ অথাৎ ডিএসইর ব্রোকারেজ হাউজ থেকে ৭ কোটি ৫০ লাখ ৪৭ লাখ ৪৩২ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। মার্চ মাসে এই খাত থেকে আদায় হয় ৭ কোটি ৯৯ লাখ ৭২ হাজার টাকার রাজস্ব। ফেব্রুয়ারিতে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ৬৪ লাখ ২১ হাজার টাকা।
আর উদ্যোক্তা পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারধারীদের কাছ থেকে এপ্রিল মাসে সরকারের রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫ কোটি ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৩ টাকা। যা মার্চ মাসে ছিলো ২ কোটি ১৫ লাখ ২০ হাজার ৬৯৭ টাকা। আর ফেব্রুয়ারিতে ডিএসই উদ্যোক্তা পরিচালক ও প্লেসমেন্ট শেয়ারধারীদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন