শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সপরিবারে ১০ শাখা ব্যবস্থাপককে হত্যার হুমকি

বরিশাল সোনালী ব্যাংক

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

গত কয়েকদিনে বরিশাল মহানগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ১০ জন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে চাঁদা চেয়ে স্ব পরিবারে হত্যার হুমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সর্বহারা গ্রুপ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি’র আন্ডারগ্রাউন্ড এর লোক পরিচয়ে দুটি সেলফোন নম্বর দিয়ে গত রবি ও সোমবার চাঁদা দাবী করা হয়। এ ঘটনায় বিএমপি’র কোতয়ালী থানাসহ সংশ্লিষ্ট ৯টি থানায় পৃথক ১০টি জিডি করা হয়েছে।

হুমকির শিকার সোনালী ব্যাংক এর শাখা ব্যবস্থাপকরা হচ্ছেন- মহানগরীর সিএন্ডবি রোড শাখার ব্যবস্থাপক দেবাশীষ কুন্ডু, চক বাজার শাখার প্রিন্স পারভেজ, বাবুগঞ্জ উপজেলার খানপুরা শাখার মহসিন হাওলাদার, উজিরপুর শাখার আমিনুল ইসলাম, গৌরনদীর টরকী শাখার মনবীত বেপারী, বানারীপাড়ার চাখার শাখার জহিরুল ইসলাম, ঝালকাঠির নলচিড়া শাখা ব্যবস্থাপক মেহেদী আল মিরাজ এবং বাকেরগঞ্জের নেয়ামতি ও চরামদ্দি শাখার ব্যবস্থাপক।
সাধারণ ডায়েরীতে গত রোববার বিকাল ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে সাতজন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে ০১৯৬৮৪৭৩৭১৫ নম্বর থেকে এবং একইভাবে সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ০১৯০৫৪৮১৫৫৬ নম্বর থেকে নতুন করে আরো তিন শাখা ব্যবস্থাপকের কাছে ফোন করে চাঁদা দাবী ছাড়াও স্ব-পরিবারে হত্যার হুমকি প্রদানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

সেলফোনে কলকারী ব্যক্তি নিজেকে পূর্ব বাংলা কমিনিস্ট পার্টি’র আন্ডার গ্রাউন্ডের লোক ‘হাত কাটা বিপ্লব’ বলে পরিচয় দিয়ে তাদের বস এর নাম ‘ইসমাইল সিকদার’ বলে জানায়। এছাড়া তাদের দু’জন লোক মারা গেছে, কিছু লোক অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ও কিছু লোক জেলে আছে বলে শাখা ব্যবস্থাপকদের জানিয়ে আটককৃতদের মুক্তি এবং অসুস্থদের চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন বিধায় সর্বনিম্ন ১০ লাখ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের স্ত্রী-সন্তানদের অপহরনের পরে স্ব পরিবারে হত্যার হুমকি দেয়া হয়।

সোনালী ব্যাংক বরিশাল আঞ্চলিক প্রধান ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. নাসির উদ্দিন তালুকদার এসব ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, সোমবার দুপুরে আমি বাকেরগঞ্জ নেয়ামতি বন্দর শাখা পরিদর্শনে গেলে সেই মুহুর্তে ওই শাখার ব্যবস্থাপকের নম্বরে কল করে পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির লোক পরিচয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করা হয়। এসব কারনে সোনালী ব্যাংক কর্মকর্তাগন বর্তমানে আতংকে আছেন বলেও একাধিক সূত্রে বলা হয়েছে। ২০১৪ সালেও একই ভাবে সোনালী ব্যাংকসহ কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছে চাঁদা চেয়ে হুমকি দেয়া হয়েছিল। তখন ব্যাংক কর্মকর্তাগন থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন। তবে এ ব্যাপারে তখন সুষ্ঠু তদন্ত না করারও অভিযোগ করেন অনেক কর্মকর্তা। ফলে ঐসব সন্ত্রাসী হুমকিদাতারা চিহ্নিত হয়নি। এখন নতুন করে একই ঘটনার পূনরাবৃত্তি ঘটছে। কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপকদের থানায় জিডি করতে বলেছেন।

এ প্রসঙ্গে মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও ডিবি’র সহকারি কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক সাংবাদিকদের বলেন, মুলত এ ধরনের ঘটনার বেশিরভাগই ভুয়া হয়ে থাকে। ইতিপূর্বে এমন অভিজ্ঞতাই আমরা অর্জন করেছি। তবে এবারের বিষয়টিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বরিশালের জেলা এসপি মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বিষয়টি অবহিত হয়ে দায়ের হওয়া সাধারণ ডায়েরীর সূত্র ধরে হুমকি দাতাদের চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে। আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে। দ্রুতই চক্রটিকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। তবে তিনি বলেন, যতটুকু ধারনা করা হচ্ছে এটি কোন সর্বহারা পার্টির কাজ নয়। কোন একটি বিশেষ চক্র ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করতেই এমন কাজ করছে। দ্রুতই বিষয়টি বেরিয়ে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন