অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ ফের পতনের বৃত্তে আটকা পড়েছে দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল (মঙ্গলবার) চলতি সপ্তাহের তৃতীয় লেনদেন দিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ডিএসই ব্রড ইনডেক্সের (ডিএসইএক্স) পতন হয়েছে ১০ দশমিক ২০ পয়েন্ট। এ নিয়ে টানা ৫ কার্যদিবসে সূচকের পতনে শেষ হয়েছে লেনদেন।
গত ১৯ জানুয়ারি ১০ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ডিএসইএক্স ৪৬৯৭ দশমিক ৫০ পয়েন্টে উন্নীত হয়। কিন্তু এরপরই টানা দরপতনের কবলে পড়ে বাজার। মঙ্গলবারসহ ৫ দিনের দরপতনে ডিএসইএক্স নেমে এসেছে ৪৬১০ দশমিক ১১ পয়েন্টে। অর্থাৎ এ সময়ে সূচক কমেছে প্রায় ৮৭ পয়েন্ট।
ধারাবাহিক দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ফের আস্থার সংকট দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই বড় ধরনের আস্থার সংকটের মধ্যে রয়েছে বাজার। মাঝে মধ্যে স্বল্প সময়ের জন্য বাজারে কিছু গতি ফিরে আসলেও তা স্থায়ী হচ্ছে না। বেশির ভাগ সময়েই দরপতনের শিকার হচ্ছে বাজার। এতে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা।
গত কয়েক বছর ধরে চলমান মন্দার কারণে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। এ কারণে বাজারে দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা। অধিকাংশ বিনিয়োগকারীরা ‘ডে ট্রেডার’-এর ভূমিকায় রয়েছেন।
শুধু ব্যক্তি বিনিয়োগকারীরাই নয়, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও ‘ডে ট্রেডার’-এর মতো আচরণ করছেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। অবশ্য বাজারে স্থিতিশীলতা না থাকার কারণেই এমন ঘটনা ঘটছে। যদিও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মনে করছে দেশের পুঁজিবাজার এখন অনেক স্থিতিশীল। গত সোমবার বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান এক অনির্ধারিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রয়েছে।’
এদিকে সূচকের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। গত সোমবার ৫০০ কোটি টাকার ঘরে লেনদেন হলেও মঙ্গলবার তা ফের ৪০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। সোমবারের তুলনায় ৬৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা কমে মঙ্গলবার দিনশেষে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৪৪৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩২৩টি ইস্যুর মধ্যে দিনশেষে দর বেড়েছে ১১৭টির, কমেছে ১৬২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৪টির দর। লেনদেনের শীর্ষে রয়েছে পাওয়ার গ্রিড। দিনশেষে কোম্পানিটির ১২ কোটি ৫১ লাখ ৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৪৭ লাখ ৪৯ হাজার টাকা। ১১ কোটি ১৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে এমারল্ড অয়েল। লেনদেনে এরপর রয়েছে যথাক্রমে সাইফ পাওয়ারটেক, আইটি কনসালটেন্টস, আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো ফার্মা, ইফাদ অটোস, বিডি থাই। দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সিএসসিএক্স ২৪ দশমিক ১৬ পয়েন্ট কমে দিনশেষে ৮৬২১ দশমিক ৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৮৩টির, কমেছে ১৪৭টির ও অপরিবর্তীত রয়েছে ২৮টির দর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন