এলকোহল সেবনে কেউ সামায়িকভাবে কিছুটা আরাম অনুভব করতে পারে কিন্তু অতিরিক্ত এলকোহল সেবনে রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল বৃদ্ধি পেতে পারে, যার ফলে রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেধে হার্ট অ্যাটাক এবং ষ্ট্রোক হতে পারে। রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেলে প্যানক্রিয়াস বা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ হতে পারে। ক্রমাগত এলকোহল পান করলে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমাদের শরীর এলকোহল পানীয়কে এসিটাইল ডিহাইডে রূপান্তরিত করে। এসিটাইল ডিহাইড একটি কারসিনোজেন অর্থাৎ ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান। অতিরিক্ত এলকোহল সেবনে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেয়। ফলে সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
যারা নিয়মিত মদ্য পান বা এলকোহল সেবন করে থাকেন, তাদের যক্ষা, নিউমোনিয়া, এইচ.আই.ভি বা এইডস্, যৌনবাহিত রোগ সংক্রমনের ঝুঁকি বেশী। কারণ অতিরিক্ত মদ্যপানকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ যৌন আচরণে নিজেদের সম্পৃক্ত করে থাকে। ফলে তারা অস্বাভাবিক আচরণ করে থাকে। দীর্ঘমেয়াদে এলকোহল সেবনের ফলে ব্রেন, লিভার ও হার্টের সাথে সংশ্লিষ্ট সিরোসিস, এলকোহলিক হেপাটাইটিস, ফাইব্রোসিস, উচ্চ রক্তচাপ, কার্ডিওমায়োপ্যাথি, এরিথমিয়া, ষ্ট্রোক, প্যানক্রিয়েটাইটিস এর মতো প্রাণঘাতী রোগ দেখা দিতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এলকোহল সেবনের ফলে মুখ, গলা, ব্রেষ্ট এবং লিভারের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। অধিক পরিমাণে এলকোহল সেবনে ডিমেনসিয়া হতে পারে। বিয়ার, ওয়াইন, এলকোহল যে কোনো রূপে সেবন করলে বেশী প্রস্রাব করতে হয়। এলকোহল মুখকে শুষ্ক করে এবং ডিহাইড্রেশন করে থাকে। এ অবস্থায় ব্যাকটেরিয়া মুখের দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে থাকে। এলকোহল সেবনকালে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা ঠিক নয়। বিশেষ করে এনএসএআইডি গোত্রভুক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করলে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। এলকোহল সেবনে বছরে ২.৮ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। গবেষকরা বলেন এলকোহল সেবনের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই। সামান্য এলকোহল সেবনেও অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই এটি মনে করার কোনো কারণ নেই যে অল্প একটু খেলে কোনো সমস্যা হবে না। উপরোক্ত বিষয়ে সর্বসাধারণের আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
ডাঃ মোঃ ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল: ০১৮১৭৫২১৮৯৭
ই-মেইল : dr.faruqu@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন