কখনও টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ, হেরে গেছে টি-টোয়েন্টিতে। কখনও ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিতেছে তো হেরে গেছে টেস্টে। এবার সুযোগ এসেছে কোনো দেশকে তিন সংস্করণেই সিরিজ হারানোর অনির্বচনীয় স্বাদ পাওয়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিতলেই একটি প্রথমের দেখা পেয়ে যাবে বাংলাদেশ। প্রধান কোচ স্টিভ রোডস জানান, এই কীর্তি গড়তে মাঠে নিজেদের উজাড় করে দেবে তার শিষ্যরা। গতকাল ম্যাচের আগের দিনের অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে রোডস জানান, এই সম্ভাবনায় তারা রোমাঞ্চিত, ‘অবশ্যই সম্ভব। আমরা নিজেদের সেরা চেষ্টাই করবো। ওদের তিনটা সিরিজেই হারাতে আমাদের খুব ভালো লাগবে। এই দলটি ভারতের বিপক্ষে সিরিজে ম্যাচ জিতেছে, আমাদের বিপক্ষেও সিরিজে ম্যাচ জিতেছে। অবশ্যই ওরা কোনো সিরিজ না জিতে ক্যারিবিয়ানে ফিরে যেতে চাইবে না। তাই এটা হবে ভীষণ কঠিন। আমি বাংলাদেশের সব ক্রিকেট ভক্তকে বলতে পারি, তিনটি সিরিজেই জিততে আমরা নিজেদের উজাড় করে দেব।’
দুই দলের সবশেষ দেখায় ক্যারিবিয়ানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রোডস এতটাই শক্তিশালী মনে করেন যে, দেশের মাটিতেও বাংলাদেশকে এগিয়ে রাখছেন না তিনি, ‘ফেভারিট কে? আমি ঠিক নিশ্চিত নই। আমরা ওয়ানডেতে ভালো খেলেছি, সেখান থেকে অনেক আত্মবিশ্বাস নিতে পারি। আমরা টেস্ট সিরিজে ভালো খেলেছি। আমরা চেয়ে বেশি কিছু চাইতে পারতাম না।’
দুই দলের সবশেষ দেখায় ক্যারিবিয়ানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। রোডসের লক্ষ্য এর পুনরাবৃত্তি। তবে অন্য যে কোনো সংস্করণের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানো সবচেয়ে কঠিন বলে মনে করেন বাংলাদেশ কোচ, ‘টি-টোয়েন্টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা ফরম্যাট। ওরা এই সংস্করণে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ওদের হারানো খুব কঠিন হবে। ওদের আমরা ক্যারিবিয়ানে হারিয়েছিলাম, সেটা ছিল আমাদের জন্য বিশেষ এক জয়। এটা কিছুটা অপ্রত্যাশিত ছিল তবে ছেলেরা ফ্লোরিডায় খুব ভালো করে সিরিজ জিতেছিল।’
ক্যারিবিয়ানে টেস্ট সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশের কাছে অন্য দুই সংস্করণে সিরিজ হেরেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশে এসে হেরেছে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ। রোডস মনে করেন, একের পর এক হারে আহত দলটি মরিয়া থাকবে চিত্রটা পাল্টাতে, ‘টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য ওদের দলে নতুন কয়েকজন এসেছে। আমার মনে হয় এই দলটি খুব কঠিন একটি প্রতিপক্ষ হবে। এটা এমন একটা সংস্করণ যা ওরা খুব ভালো করে জানে।’
প্রতিপক্ষকে সমীহ করে সিরিজ জয়ের ছক কষছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ। শিষ্যদের কাছে তার চাওয়া আরেকটি চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স, ‘জিততে আমরা নিজেদের সেরাটা দেব। ছেলেরা সব সময় তাই করে। দারুণ সব পারফরম্যান্সে ওরা আমাকে বিস্মিত করে চলেছে। এখন আমরা কিছুটা ধারাবাহিকতা পেয়েছি। এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য খুব ভালো খবর।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অলিগলি সব চেনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। একমাত্র দল হিসেবে এই সংস্করণে তারা জিতেছে দুটি বিশ্বকাপ। এমন একটি দলের বিপক্ষে জেতটা সহজ হবে না বলেও মানছেন কোচ, ‘আমরা চাই ছেলেরা টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারাক। এই সংস্করণে ওরা আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে। টি-টোয়েন্টিতে ওরা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। আমাদের পরিকল্পনা মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়া আর সিরিজ জেতা। আমরা খুব করে এটা চাই। টেস্ট, ওয়ানডের চেয়ে এই সংস্করণে আমরা আরও লড়াকু ক্রিকেট খেলতে চাই কারণ, টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অসাধারণ।’
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ
ম্যাচ বাংলাদেশ উইন্ডিজ টাই/পরি.
৯ ৪ ৪ ০/১
সর্বাধিক ম্যাচ
বাংলাদেশ : মুশফিক/তামিম, ৯টি করে
উইন্ডিজ : রামদিন/রাসেল/স্যামুয়েলস, ৭টি করে
অধিনায়ক হিসেবে
বাংলাদেশ : মশিফিক/সাকিব, ৪টি করে
উইন্ডিজ : ড্যারেন স্যামি, ৪টি
সর্বোচ্চ দলীয়
বাংলাদেশ : ১৮৪/৫ লডারহিল, ৫ আগস্ট ২০১৮
উইন্ডিজ : ১৯৭/৪ ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর ২০১২
সর্বনিম্ন দলীয়
বাংলাদেশ : ৯৮ ঢাকা, ২৫ মার্চ ২০১৪
উইন্ডিজ : ১৩২/৮ ঢাকা, ১১ অক্টো. ২০১১
বড় জয়
বাংলাদেশ : ১৯ রানে এবং ৬ উইকেটে
উইন্ডিজ : ৭৩ রানে এবং ৭ উইকেটে
সর্বাধিক রান
বাংলাদেশ : তামিম ইকবাল, ৯ ম্যাচে ২২৭
উইন্ডিজ : মারলন স্যামুয়েলস, ৭ ম্যাচে ২২৬
সেরা ইনিংস
বাংলাদেশ : তামিম ইকবাল ৮৮*, ১০ ডিসে. ২০১২ ঢাকা
উইন্ডিজ : মারলন স্যামুয়েলস ৮৫*, ১০ ডিসে. ২০১২ ঢাকা
সর্বাধিক ফিফটি
বাংলাদেশ : তামিম ইকবাল, ৯ ম্যাচে ২টি
উইন্ডিজ : মারলন স্যামুয়েলস, ৭ ম্যাচে ২টি
সিরিজে সর্বাধিক রান
বাংলাদেশ : সাকিব আল হাসান, ৩ ম্যাচে ১০৩
উইন্ডিজ : আন্দ্রে রাসেল, ৩ ম্যাচে ৯৯
সেরা জুটি
বাংলাদেশ : তামিম/রিয়াদ ১৩২* (২য় উই.), ১০ ডিসে. ২০১২ ঢাকা
উইন্ডিজ : স্মিথ/গেইল ৯৭ (১ম উই.), ২৫ মার্চ ২০১৪ ঢাকা
সর্বাধিক উইকেট
বাংলাদেশ : সাকিব আল হাসান, ৭ ম্যাচে ১১টি
উইন্ডিজ : কেমো পল, ৩ ম্যাচে ৬টি
সেরা বোলিং
বাংলাদেশ : সাকিব আল হাসান, ৪-০-৩৪-৪
উইন্ডিজ : স্যামুয়েল বদ্রি, ৪-০-১৫-৪
সিরিজে সর্বাধিক উইকেট
বাংলাদেশ : মুস্তাফিজুর রহমান, ৩ ম্যাচে ৮টি
উইন্ডিজ : কেমো পল, ৩ ম্যাচে ৬টি
সর্বাধিক ক্যাচ
বাংলাদেশ : লিটন/রিয়াদ/সাকিব/তামিম, ৩টি করে
উইন্ডিজ : ডোয়াইন ব্রাভো, ৩ ম্যাচে ৩টি
সর্বাধিক ডিসমিসাল
বাংলাদেশ : মুশফিকুর রহিম, ৯ ম্যাচে ১০টি
উইন্ডিজ : দিনেশ রামদিন, ৭ ম্যাচে ৬টি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন