রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সেই আগ্রাসী ব্যাটিংয়েই বাজিমাত

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০২ এএম

শুরুটা হলো দুর্দান্ত। ৫.৩ ওভারে আসে দলীয় ফিফটি। ঝড়ো শুরু করে দেয়া তামিম-লিটনের পথেই হেঁটেছে বাকিরা। সৌম্য, সাকিব, মাহমুদউল্লাহর ঝড়ে ১০.১ ওভারে ১০০ রান থেকে ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের সংগ্রহ ২১১! রান পাহাড় তাড়া করতে নেমে শেষ ওভার পর্যন্ত লড়াই করেও শেষ রক্ষায় হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। সফরকারীদের ১৭৫ রানে অল আউট করে ৩৬ রানের জয়ে সিরিজে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ। এই মিরপুরেই ১-১ সমতা ফেরা সিরিজের ফয়সালা আগামীকাল শেষ টি-টোয়েন্টিতে।

গতকাল শেরে বাংরা স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব আল হাসান। ব্যাটসম্যানরা গড়ে দিয়েছিলেন রেকর্ড সংগ্রহ। তাতে অবদান ছিল সাকিবের। বোলাররা মাঝেমধ্যে খেই হারালেও জ্বলে উঠলেন সাকিব। ব্যাট হাতে শুরুতে ঝড় তুলেছিলেন লিটন দাস। তিনে নেমে সৌম্য সরকার ধরে রাখেন গতি। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাণ্ডব চালান সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। আগে ব্যাট করে প্রথমবার দুইশ রান পার হয় বাংলাদেশ। রান তাড়ায় ক্যারিবিয়ানরা চেষ্টা করেছে ঝড় তোলার। কিন্তু বারবারই বাগড়া দিয়েছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ২৬ বলে অপরাজিত ৪২ রানের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক বল হাতে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

আর মাত্র ৫টি রান তুলতে পারলেই টি-২০তে নিজেদের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডটি গড়া হয়ে যেত সাকিব আল হাসানের দলের। গত মার্চেই নিদাহাস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কার দেয়া ২১৪ রানের লক্ষ্য ২ বল হাতে রেখেই পেরিয়ে যাওয়া সংগ্রহটি এখনও শীর্ষে। সেটি না হলেও জয়ের জন্য এই সংগ্রহ যে কঠিন পথ সেটি বোঝা গিয়েছিল উইন্ডিজ ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই।

সিলেটে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আগ্রাসী ব্যাটিংই কাল হয়েছিল বাংলাদেশের। গতকাল সেই একই মনোভাবের সঙ্গে মিশে থাকল আত্মবিশ্বাস। ফলও এলো হাতে হাতে। ঝড়ো শুরু করে দেয়া তামিম-লিটনের দেখানো পথেই হাঁটে বাকিরা। বাংলাদেশও পায় দলীয় ঝড়ো শতক। তবে এই তিনজনের বিদায়ে হঠাৎ ধ্বস বাংলাদেশ শিবিরে। ১০.১ ওভারে যেখানে এক উইকেট হারানো স্বাগতিকদের সংগ্রহ ছিল ১০০। ১৩ ওভার শেষে সেটিই কিনা ৪ উইকেটে ১২০!

শুরু থেকেই হাত খুলে ব্যাটিং করছিলেন দুই ওপেনার। প্রথম চার ওভারেই ৪২ রান সংগ্রহ করে টাইগারদের সূচনাটা হয়েছিল দারুণ। তবে আক্রমণে স্পিন আসতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। ফ্যাবিয়েন অ্যালেনের প্রথম বলেই আউট হয়েছেন ওপেনার তামিম ইকবাল। শর্ট মিডউইকেটে শেল্ডন কট্রেলের হাতে সহজ ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরমুখী হন এ ওপেনার। ১৬ বল ১৫ রান করেছেন তিনি।

দারুণ সূচনা এনে দিয়ে তামিম আউট হলেও থামেনি টাইগারদের আক্রমণ। মাত্র ৫.৩ ওভারে (৩৪ বলে) আসে দলীয় হাফসেঞ্চুরি। পাওয়ার প্লের ছয় ওভার শেষে বাংলাদেশ তোলে ৬২ রান। যেখানে লিটন দাসের অবদান ১৯ বলে ৪১। ওশেন টমাসের বলে ছক্কা মেরে দলীয় ফিফটি স্পর্শ করেন এই ওপেনার। আর কিছু পরেই ২৬ বলে চার মেরে নিজের ফিফটিও তুলে নেন মারমুখি এই ব্যাটসম্যান।

সেই ঝড়ে সামিল হন সৌম্য সরকারও। ক্রিজে এসেই ক্যারিবীয় বোলারদের তুলোধুনো করতে থাকেন দুই প্রান্ত থেকেই। তাদের ঝড়ে ১০.১ ওভারে দলীয় ১০০ পূর্ণ করে বাংলাদেশ। তবে খুব বেশিদূর এগোয়নি এই জুটি। কট্রেলের বলে এক্সট্রা কভারে দুর্দান্ত এক ক্যাচে সৌম্যকে ফেরালে ভাঙে ৬৮ রানের ২য় উইকেটের এই জুটি। তার ২২ বলে ৩২ রানের ইনিংসটি ৩টি চার ও একটি ছক্কায় মোড়ানো। ঐ ওভারেই লিটনও পরিণত হন একই বোলারের শিকারে। সরাসরি বোল্ড হবার আগে ৩৪ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ৬০ রানের ঝড়ো ইনিংস।
এক ওভারে দুই উইকেট হারানো বাংলাদেশ চাপে পড়ে মুশফিক চটজলদি বিদায়ে। মাত্র এক রানেই মিড উইকেটে থমাসের বলে অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল। ভগ্ন ইনিংস মেরামতের কাজটি দক্ষ হাতে সেরেছেন সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৫ম উইকেটে অধিনায়ক আর সহ-অধিনায়কের ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে টি-২০তে নিজেদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ তোলে বাংলাদেশ। ২৬ বলে সাকিবের ৪২ রানের ইনিংসটি ৫টি চার ও একটি ছক্কায় মোড়ানো। রিয়াদ ছিলেন আরো বিদ্ধংসী, ২১ বলে ৭ চারে তুলেছেন ৪৩ রানের ঝড়।

টি-২০তে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলীয়
স্কোর প্রতিপক্ষ ভেন্যু
২১৫/৫ শ্রীলঙ্কা কলম্বো,২০১৮
২১১/৪ উইন্ডিজ ঢাকা, ২০১৮
১৯৩/৫ শ্রীলঙ্কা ঢাকা, ২০১৮
১৯০/৫ আয়ারল্যান্ড বেলফাস্ট, ২০১২
১৮৯/৫ নিউজিল্যান্ড ঢাকা, ২০১৩

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন