প্রতিষ্ঠার পর থেকে বছরের পর বছর শুধু পুরুষদের নিয়ে শরীরগঠন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে এসেছে বাংলাদেশ শরীরগঠন ফেডারেশন। এবার এ অবস্থান থেকে সরে এসেছে তারা। তাদের সিদ্ধান্ত খুব শিঘ্রই দেশে নারী ও শিশুদের নিয়ে তা আয়োজন করা হবে শরীরগঠন প্রতিযোগিতার। নতুন বছরের শুরুতেই এমন সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অ্যামেচার শরীরগঠন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। অবশ্যই শালীনতা বজায় রেখে এবং বাংলাদেশের গ্রহনযোগ্য কস্টিউম পড়েই এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিবেন নারীরা। নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশের অনেক নারীই এখন স্বাস্থ সচেতন। তারা নিয়মিত জিম করে থাকেন। তাদের অনুরোধেই আমরা নারীদের শরীরগঠনের আয়োজন করবো। অবশ্যই তা সীমাবদ্ধ পোষাকের মধ্যে থেকেই। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী মে মাসে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে।’
দেশের বিভিন্ন ক্রীড়া ডিসিপ্লিনে পুরুষ ও নারী খেলোয়াড়রা নিয়মিত অংশ নিয়ে থাকেন। ব্যাতিক্রম ছিল শরীরগঠন। শারিরিক শক্তি প্রদর্শনের খেলা বক্সিং, কুস্তি, কারাতে, জুডো, উশু এমনকি ভারোত্তোলনেও রয়েছেন নারী ক্রীড়াবিদ। শুধু ছিল না বডিবিল্ডিংয়ে। এবার সেই খরাও ঘুচতে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলামের কথা, ‘সকল ডিসিপ্লিনেই প্রতিযোগিতা হয়। পুরুষ-নারী, বালক-বালিকা, তরুণ-তরুণীরা অংশ নেন। শুধু আমাদের বডিবিল্ডিংয়েই এতোদিন ছিল না নারীদের প্রতিযোগিতা। এমন ভাবনা থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই নারী বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতা করার। বর্তমানে দেশের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মহিলারা নিয়মিত জিম করে থাকেন। যে কারণে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলাশহরগুলোতে গড়ে উঠেছে আধুনিক মানের ব্যায়ামাগার। এ সকল জিমে যারা ইনস্ট্রাকটর হিসেবে রয়েছেন মুলত তাদের নিয়েই হবে এই প্রতিযোগিতা। তাছাড়া শিক্ষার্থীরাও থাকবেন প্রতিযোগিতায়। বাড়তি আকর্ষন হিসেবে থাকবে শিশুদের ইভেন্টও।’
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের মহিলারাও সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রীড়াক্ষেত্রে তাদের বিচরণ চোখে পড়ার মতো। মেয়েরা শরীরগঠন প্রতিযোগিতায় আসলে সেটা কতটা গ্রহণযোগ্য হবে এবং কেমন কস্টিউমের ব্যাবহার হবে। এমন প্রশ্নের উত্তরে নজরুল বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যতটুকু শালীনতা বজায় থাকা জরুরী ততটুকু ঠিক রেখেই হবে নারীদের এই প্রতিযোগিতা হবে। তবে হ্যা ক্রীড়ার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড়তো সকলকেই দিতে হবে। সমালোচনা অতীতে ছিল, আছে এবং থাকবে। মেয়েদের এগিয়ে চলার পথে সকলেই একটু নমনীয় হলে এবং এটিকে একটি খেলা হিসেবে দেখলে আশা করছি মহিলা শরীরগঠন প্রতিযোগিতা অনন্য উচ্চতায় পৌঁছবে। সবাই এটাকে গ্রহণ করবেন ক্রীড়াসুলভ মনোভাব নিয়ে।’ তিনি যোগ করেন,‘
শরীরগঠনের অনেকগুলো ধাপ রয়েছে। যেমন- ফিজিক, ফিটনেস, মডেল ইত্যাদি। শুধু বিকিনি পরেই শরীরগঠন করতে হয় অনেকেই এমন ধারণা করেন। যেটি মোটেও ঠিক নয়। প্রথমবারের মতো এই প্রতিযোগিতায় ২৫ থেকে ৩০ জন মহিলা বডিবিল্ডার অংশ নেবেন বলে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন। তাই আমরা আগ্রহী হয়েছি। আশাকরি অন্য ডিসিপ্লিনগুলোর মতই নারী শরীরগঠন প্রতিযোগিতাকে সবাই স্বাগত জানাবেন।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন