সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

চাল নিয়ে চালবাজি

মো. মোমিনুল ইসলাম মুন, তানোর থেকে: | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

রাজশাহীর তানোরে সরকারী ভাবে চাল সংগ্রহের নামে চলছে ব্যাপক চালবাজি। মিল চালু না থাকলেও অধিক টাকার বিনিময়ে দেয়া হয়েছে বরাদ্দ।
চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়ম হলেও টাকার কাছে নীরবতা পালন করছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে ইচ্ছেমত অনিয়ম করলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রকৃত মিলারেরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। এমন কি টন প্রতি নেয়া হয়েছে বিশাল অঙ্কের টাকা। ফলে মিলারেরাও বাহির থেকে নিম্নমানের চাল আমদানি করে দিয়েছে গুদামে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে সরকারী ভাবে চাল সংগ্রহের উদ্বোধন করা হয় ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে। উপজেলার দুটি গুদামে ২৭টি চাল কলের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় সাড়ে প্রায় ১৮’শ ৪৩ মে.টন। সূত্র জানায় উপজেলায় ৮থেকে ১০টির মত চালকল চালু রয়েছে। যাদের চালু ছিলনা তাদেরকে নামমাত্র কিছু আসবাবপত্র লাগিয়ে দেয়া হয় বরাদ্দ। একাধিক বৈধ মিলার জানান, ভোটের আগে চালের দাম কম ছিল ওই সময় বেশির ভাগ চাল সংগ্রহ হলেও গুদাম কর্মকর্তারা অস্বীকার করেন। চালের দাম কম থাকায় গুদাম কর্মকর্তারা টনপ্রতি ১৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়েছে। আবার ফাইনাল বিলের জন্য ১০ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। দুচারজন বাদে বাকিরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁসহ বিভিন্ন মোকাম থেকে নিম্ন মানের চাল কম দামে কিনে গুদামে দিয়েছেন যা সরেজমিন তদন্ত করলেই থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে।
আমেন চালকলের মালিক রাকিব ভোটের আগে বিকেলের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের চালকল থেকে চাল কিনে দেন। খাদ্য গুদামের বস্তায় চাল আসলে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে আটকে দেন পরে নেতাদের তদারকিতে ছাড় দেয়া হয়।
এ নিয়ে রাকিবের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানিয়ে দেন চালকল থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে। বরাদ্দ পেয়েছি টাকার বিনিময়ে যেখান থেকে পারি চাল দিলেই হল। এক বৈধ মিলার নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন যারা খাদ্য গুদামের সাথে ব্যবসা করেন মূলত তারাই প্রায় মিল কিনে গির্জার চাল টিয়ারের চাল কাগজ বদল করে গুদামেই রেখে দিচ্ছেন। তানোর খাদ্য অফিস জানায়, কামারগা গুদামে বরাদ্দ ছিল ৬দশমিক ৩৫ টন সংগ্রহ হয়েছে ৩ দশমিক ৫০ মে.টন এবং গোল্লাপাড়া গুদামে বরাদ্দ ছিল ১২ দশমিক ৭ মে.টন সংগ্রহ হয়েছে ৮দশমিক ৫০ মে.টন। সরকারী ভাবে ৩৬টাকা কেজি দরে নেয়া হয়েছে চাল । আরেক মিলার জানান বিভিন্ন জায়গা থেকে ২৮টাকা কেজি দরে কিনে ভাড়া সহ ঊর্ধ্বে ২৯-৩০ টাকা কেজি পড়েছে। কিন্তু গুদাম কর্মকর্তাকে দিতে হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। হাজি সেলিম প্রায় ১০টির মত মিল ক্রয় করেছেন বলে একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান। তার মাধ্যমেই মূলত বেশি চাল নেয়া হয়েছে। তার অবশ্য নিজের মিল রয়েছে। এ নিয়ে হাজি সেলিম ক্রয়ের কথা অস্বীকার করে জানান, আমাকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দেয়া হয়েছে। কে আপনাকে পঙ্গু করলে জানতে চাইলে শুধু বলেন এসব বুঝে নিতে হয়।
এ নিয়ে গোল্লাপাড়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার তারিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাওয়া হয় চালু নেই এসব মিলারেরা কিভাবে বরাদ্দ পেয়ে চাল দিচ্ছেন তিনি জানান সব কিছুই বুঝেন। গুদাম কিভাবে চলে কিভাবে চাল সংগ্রহ হয় বলে সবই জানা বলে এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা বিকাশ জানান, আমি নতুন এসেছি কেউ যদি এসব নিয়ে অভিযোগ করেন তাহলে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
তানোর উপজেলার নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মহা. গোলাম রাব্বী জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন