শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

স্থবির সাইক্লিংয়ের কর্মকাণ্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশের বেশ ক’টি ক্রীড়া ফেডারেশন কয়েকবছর ধরে চলছে অ্যাডহক কমিটির অধীনে। নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষে যেখানে নতুন নির্বাচন দেয়ার কথা, সেখানে তা না দিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি) অ্যাডহক কালচার ধরে রেখেছে! আর এসব অ্যাডহক কমিটিতে নানা কারণে জায়গা করে নিয়েছেন অযোগ্য কিছু ক্রীড়া সংগঠক। তাদের পদচারণায় বেশ ক’বছর ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গন মুখরিত হলেও যোগ্য সংগঠকের অভাবে অনেক ডিসিপ্লিনের নিয়মিত আসরগুলো এখন অনিয়মিত হয়ে গেছে। দেশে বর্তমানে ৭টি ক্রীড়া ফেডারেশন ও একটি সংস্থা চলছে অ্যাডহক কমিটির অধীনে। এগুলো হলো- বাংলাদেশ টেনিস ফেডারেশন, কাবাডি, ভারোত্তোলন, শ্যুটিং, সাইক্লিং, অ্যাথলেটিক, হকি ফেডারেশন ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থা।
এসব ফেডারেশনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি সাইক্লিং। প্রায় দু’বছর আগে এই ফেডারেশনে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষে আগের সভাপতি মিজানুর রহমান মানুকে রেখে গঠিত হয় অ্যাডহক কমিটি। যে কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে আসেন পারভেজ হাসান। একবছর পরে মানুকে বাদ দিয়ে নতুন সভাপতি করা হয় হকি ফেডারেশনের সাবেক সহ-সভাপতি শফিউল্লাহ আল মুনিরকে। কিন্তু নতুন অ্যাডহক কমিটি আসার পর দু’বছরে সাইক্লিং ফেডারেশন করতে পেরেছে মাত্র দু’টি জাতীয় প্রতিযোগিতা। এছাড়া তারা চোখে পড়ার মতো কোনো কার্যক্রমই হাতে নিতে পারেনি এই সময়ে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষে প্রায় স্থবির হয়ে আছে সাইক্লিংয়ের কর্মকাণ্ড। সম্প্রতি তারা ভারতে খরচাবিহীন একটি কোচেস কোর্সে কোটা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত আমন্ত্রনমূলক কোর্স হলেও একজনের কোটা নষ্ট হয়েছে বাংলাদেশের। দু’জন সাইক্লিস্ট যাওয়ার কথা থাকলেও যেতে পেরেছেন মাত্র একজন। আর লেবেল ১ ও ২ কোচেস কোর্স করতে না চাইলেও ইচ্ছার বিরুদ্ধে তা করতে হয়েছে স্থানীয় অভিজ্ঞ কোচ ও সাইক্লিং ফেডারেশনের সদস্য ওয়লিউর রহমানকে। অভিযোগ রয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাঁচজনের (দুই সাইক্লিষ্ট ও তিনজন কোচ) যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দিল্লিতে গেছেন মাত্র দু’জন। আর এতেই প্রশ্ন উঠেছে বর্তমান কমিটির দায়িত্বশীলদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে।
গত বছরের ১২ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন সাইক্লিং ইন্টারন্যাশনালের (ইউসিআই) কোচিং কোর্স। যেখানে বাংলাদেশ থেকে দু’জন জুনিয়র সাইক্লিস্ট ও তিনজন কোচের আমন্ত্রণ এসেছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সুবর্ণা বর্মন ও বাগেরহাটের ফয়সালের নাম পাঠানো হয় সাইক্লিষ্ট হিসেবে। তবে জুনিয়র সাইক্লিষ্টের শর্ত থাকায় শেষ পর্যন্ত যেতে পারেননি সুবর্ণা। এতে সময়ও কেটে যায়। শেষ মূহূর্তে আর সুবর্ণার বদলী কাউকে পাঠানো যায়নি। তাই দু’জনের কোটা থাকলেও খেলোয়াড় হিসেবে দিল্লিতে যান শুধু ফয়সাল। তিনজন কোচের কোটা থাকলেও গিয়েছিলেন ওয়ালিউর রহমান। ওয়ালিউর বলেন, ‘দু’জন সাইক্লিষ্টের মধ্যে শুধু ফয়সাল গেছেন দিল্লিতি। জাতীয় সাইক্লিংয়ে ১০০০ মিটার স্প্রিন্টে দ্বিতীয় হয়েছিল সে। এছাড়া তিনজন কোচের কোচেস কোর্স করতে যাওয়ার কথা থাকলেও হামিম ও আশরাফ যায়নি। আমি না চাইলেও লেবেল ১ ও ২ কোর্স করতে হয়েছে বাধ্য হয়ে।’ তিনি আরো বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে কোচিং হলে সব কিছুই ইংরেজিতে হয় বলে সুবর্ণা ছাড়া অন্য কাউকে আর নির্বাচন করতে পারেনি ফেডারেশন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখলাম, বিভিন্ন দেশের ইংরেজি ভাষায় অদক্ষরাও এসেছেন। যাদেরকে সাইকেলের মাধ্যমে হাতে কলমে শিক্ষা দেয়া হয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদক পারভেজ হাসান বলেন, ‘সুবর্ণাই আমাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন। কিন্তু শেষ মূহুর্তে তার বয়স নিয়ে যখন সমস্যায় পড়লাম, তখন ইউসিআই থেকেই বলা হয়েছে, সুবর্ণার পরিবর্তে অন্য কোনো সাইক্লিস্ট পাঠানোর প্রয়োজন নেই। সেই কোটা পূরণ হয়ে গেছে।’
এদিকে গত বছরের আগস্টে অনুষ্ঠিত হওয়া জাতীয় সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপের কোন অফিসিয়ালের টাকা আজো দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও গত বছর ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত ট্র্যাক এশিয়া কাপ সাইক্লিং চ্যাম্পিয়নশিপে নিজের গাঁট থেকে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ করলেও তা এখনো ফেডারেশন থেকে ফেরত পাননি বিজেএমসির সাইক্লিং কোচ মো: আবদুল কুদ্দস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন