শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বিএনপি নয়, সরকার উৎখাতে প্রস্তুত জনগণ -রিজভী

প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বর্তমান সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, যে সরকারের জনসমর্থন থাকে না, সেই সরকার যেকোনো সময় পড়ে যেতে পারে। সরকার উৎখাতে বিএনপি নয়, জনগণই প্রস্তুত। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
‘নীলনকশার অংশ হিসেবে বিএনপি বিদেশীদের সহায়তায় সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে’ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী আহম্মেদ বলেন, জনসমর্থনহীন অবৈধ এ সরকারকে বিদায় করার জন্য দেশী-বিদেশী কোনো ষড়যন্ত্রের প্রয়োজন নেই। এসময় মন্ত্রীর ওই বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যা, অসত্য ও বানোয়াট বলে দাবি করেন তিনি।
আওয়ামী সরকারের কোনো জনসমর্থন নেই দাবি করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপি জনগণকে নিয়ে রাজনীতি করে, জনসমর্থিত দল। তারা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কেন করবে? বরং আওয়ামী লীগ জনবিচ্ছিন্ন দল। জনগণ থেকে তারা একেবারেই দূরে চলে গেছে। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি।
তিনি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতা থেকে নেমে যাক, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক, তখন দেখা যাবে কে জনপ্রিয়।
ফাঁসির দ-প্রাপ্তদের ক্ষমা করে দেয়ায় খুনিরা উৎসাহিত হচ্ছে দাবি করে রিজভী আহম্মেদ বলেন, হালাকু খাঁর সৈন্যবাহিনীর মতো প্রবল পরাক্রান্ত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হাতে চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটলেও একের পর এক মাফ পেয়ে যাওয়ায় শাসক দলের সন্ত্রাসীরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে পড়ছে। তারা লুটতরাজ, দখলবাজি আর চাঁদাবাজি করতে গিয়ে সারা দেশে খুনের উৎসবে মেতে উঠেছে।
বর্তমান সরকারের শাসনামলে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িতরা প্রেসিডেন্ট ক্ষমায় মৃত্যুদ- থেকে অব্যাহতি পেয়েছে উল্লেখ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত মোট ২৫ জন মৃত্যুদ-াদেশ পাওয়া আসামি প্রেসিডেন্টের ক্ষমা পেয়েছেন। এর মধ্যে ২২ জনকেই ক্ষমা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
তিনি বলেন, লক্ষ্মীপুরের বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম হত্যাকা-ে লক্ষ্মীপুরের গডফাদার ও আওয়ামী লীগ নেতা তাহেরের ছেলের ফাঁসি মওকুফ করা হয়েছে। নাটোরের আলোচিত গামা হত্যা মামলায় ২০ আসামির ফাঁসির দ- দেয়া হলেও প্রেসিডেন্ট মওকুফ করে মুক্তি দেয়ার পর আওয়ামী লীগ নেতারা আসামিদের ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করেছে। এ দৃশ্য দেখে দেশবাসী হতবাক হয়েছে।
নাটোরের জনপ্রিয় বিএনপি নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুর হত্যাকারীরাও সাজা মওকুফ পেয়ে বীরদর্পে এখন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশে এখন নিয়মনীতির বালাই নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাসক দলের জন্য এক রকম, বিরোধী দলের জন্য চলে অন্য রকম। আইন থাকলেও সেটা নিজেদের মতো করে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিরোধী দলের  নেতাকর্মীদের দমনে মরিয়া হয়ে উঠলেও বড় বড় অপরাধে দ-িত হয়েও বহাল তবিয়তে রয়েছেন শাসক দলের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীরা। তারা বরাবরই সংবিধান, আইনকানুন ও নিয়মনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাচ্ছেন।
‘ফরিদপুরের যুবলীগ নেতার মৃত্যুদ- মওকুফ, ফাঁসির দড়ি সরিয়ে নেয়া হলো মাত্র এক দিন আগে’ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের উদ্ধৃতি দিয়ে রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী হলেই ফাঁসির দ-সহ সব দ- মাফ। এ যেন বর্তমান অবৈধ সরকারের আমলে একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, যুবলীগের নেতা আসলাম ফকিরকে ফাঁসিকাষ্ঠ থেকে রেহাই দেয়া এবং তাকে এমনকি কারাগার থেকে মুক্ত করতে কর্তৃপক্ষের বিশেষ তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে।  কেননা, তার সাজা মওকুফের আবেদন করা হয়েছে দুবার। প্রথমবার সেটা নাকচ হয়েছিল, দ্বিতীয়বার গৃহীত হয়। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত একজন আসামির প্রাণভিক্ষার আবেদন একবার নাকচ হলে সেটা আবার কিভাবে গৃহীত হয়? প্রশ্ন রাখেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, শাহ ওয়ারেছ আলী মামুন, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন