দেশের ফুটবলাঙ্গনে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ ঘটলো। ঢাকা মহানগরীর ক্লাবগুলোকে নিয়ে গঠিত হলো বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন নামে এই সংগঠনের। আপাতত এর কার্যক্রম রাজধানীতে সীমাবদ্ধ থাকলেও পরে তা ছড়িয়ে পড়বে দেশব্যাপী। গতকাল ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। নতুন গঠিত বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনোনীত হয়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো: রুহুল আমিন। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সভাপতি আলহাজ্ব একেএম মমিনুল হক সাঈদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক মোজাফফর হোসেন পল্টু, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাবেক সভাপতি এসএ সুলতান টিটু, জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার ও বাফুফের সহ-সভাপতি বাদল রায়, সাবেক তারকা ফুটবলার হাসানুজ্জামান খান বাবলু, আবদুল গাফফার, ইমতিয়াজ সুলতান জনি, ক্রীড়া সংগঠক ইঞ্জিনিয়ার নাসির উদ্দিন চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবুল, শেখ মারুফ হাসান, আবু হাসান চৌধুরী প্রিন্স, মাজহারুল ইসলাম তুহিন ও আজফারুজ্জামান সোহরাব।
নিজ বক্তব্যে বাফুফে সহ-সভাপতি বাদল রায় বলেন,‘বেশ কিছুদিন ধরেই প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের খেলা বন্ধ রেখেছে বাফুফে। লিগগুলো সচল করতে যখন পৃষ্ঠপোষক হিসেবে সাইফ পাওয়ারটেক এলো, তখন হঠাৎ করেই কমিটি ভেঙ্গে দেয় বাফুফে। এই ক্লাবগুলোর আর্তনাদ ও চিৎকার আমি শুনতে পাই। তাই এখানে এলাম। এসে দেখি ক্লাবগুলো সবাই একত্র হয়ে কাজ করার কথা ভাবছে।’ তিনি যোগ করেন,‘বাফুফের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নিজের মতো করেই দেশের ফুটবলকে চালাচ্ছেন। তার অনেক কাজই প্রশ্নবিদ্ধ। উনি নিজে ফুটবল উন্নয়নে কাজ করেননি। কাউকে করতেও দেননি। তাই গেল ১২ বছরে দেশের ফুটবল ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি চাই ক্লাবগুলো বেঁচে থাকুক। ক্লাব বেঁচে থাকলেই ফুটবলের উন্নয়ন ঘটবে। আমি মনে করি নতুন সংগঠন বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন কাল (আজ) থেকেই বাফুফের বিরুদ্ধে ফাইট করবে।’
ঘরোয়া ফুটবলের যৌবন হারিয়েছে আগেই। গৌরবও আজ বিলিন। স্টেডিয়ামে দর্শক নেই। আগের মতো ফুটবলের কদরও নেই। তাই দেশের মৃতপ্রায় ফুটবলকে জাগিয়ে তুলতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন ক্লাব কর্মকর্তারা। তারই অংশ বাংলাদেশ ফুটবল ক্লাব অ্যাসোসিয়েশন। যেখানে মিলিত হয়েছেন প্রিমিয়ার, চ্যাম্পিয়নশিপ, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বিভাগের অধিকাংশ ক্লাবই। ৬৯টি ক্লাবের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ৫৫ ক্লাবের কর্মকর্তারা।
প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক পল্টু বলেন, ‘এক সময় ফুটবলের জন্য আমার প্রেস বিক্রি করতে হয়েছিল। কতই না সুখের ছিল ফুটবলের হারানো সেই দিনগুলো। কতটা আশায় বসে থাকতেন সবাই খেলা দেখার জন্য। অথচ আজ ফুটবল প্রায় মৃত। কেউ যায় না খেলা দেখতে। তাই ফুটবলের উন্নতি করতে হলে সবাইকে এক হতে হবে। আজকের এই উদ্যোগ আমার কাছে ভালো লেগেছে।’
সংগঠনের সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘৭/৮ বছর ধরে তৃনমূল পর্যায়ে কোন খেলা নেই। আমরা জেলা ও বিভাগীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন বেশ ক’টি জেলায় লিগ চালিয়েছি। ২০১৬ সালে বাফুফের সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু ব্যক্তিস্বার্থে সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছে বাফুফে। দেশের ফুটবলের উন্নয়ন ঘটাতে হলে দায়িত্বশীলদের ত্যাগী হয়ে নি:স্বার্থ কাজ করে যেতে হবে। আমরা ক্লাবগুলো একত্র হয়েছি ফুটবলের হারানো যৌবন ফিরিয়ে আনতে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন