উত্তর : খাদ্য গ্রহন করলে শুধু ক্ষুধা নিবারণ হয় না। খাদ্য গ্রহন করলে ইবাদত করা হয়। ক্ষুধার্ত ব্যক্তিকে আহার দেয়া কিংবা মেহমানদারিতা করা রাসূলের সুন্নত। আল্লাহর প্রদত্ত রিজিক থেকে খাদ্য খেলে আল্লাহ খুশি হন। যে সব কাজ করলে আল্লাহ খুশি হন। সে সব কাজই বেশি বেশি করতে হবে। যে খাদ্য খেতে নিষেধ করা হয়েছে, তা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। কারণ আল্লাহর প্রত্যেকটি হুকুম পালন করা এক একটি ইবাদত। এরূপ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক নেক আমল রয়েছে, যা পালন করলে আমল নামায় নেকী বৃদ্ধি পায়। এরশাদ হয়েছে,‘ হে মানুষ ! জমিনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য প্রকাশ্যে শত্রæ।’ (সূরা বাকারা:১৬৮)।
হালাল খাবার মানুষের শরীর ও মন সুস্থ রাখে। হালাল খেলে শরীরে অসুখ-বিসুখ হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। হালাল খাদ্য খেলে অন্তরে প্রশান্তি আসে। ইবাদত করার জন্য মনের মধ্যে প্রফুল্লতা আসে। হালাল বস্তু খেয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, আল্লাহ রিজিক বাড়িয়ে দেন। এরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনগণ! আহার কর আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দিয়েছি তা থেকে এবং আল্লাহর জন্য শোকর কর, যদি তোমরা তাঁরই ইবাদত কর।’ (সূরা বাকারা: ১৭২)।
হালাল বস্তু উপার্জন করা বা খোঁজ করা মুসলমানদের জন্য একান্ত অপরিহার্য। খাদ্য গ্রহণের সঙ্গে ইবাদত কবুল হওয়ার বিষয়ে সরাসরি ত্রকটি সম্পর্ক রয়েছে। যেমনটি নামাজ আদায়ের পূর্বে জায়গা পাক, শরীর পাক ও গায়ের পোশাক পরিচ্ছেদ পাক-পবিত্র করে নিতে হয়। তা না হলে নামাজ কবুল হয় না। ঠিক একই ভাবে হালাল খাদ্য গ্রহন না করলে ইবাদত কবুল হয় না। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘অন্যান্য ফরজের মতো হালাল রুজি তালাশ করাও একটি ফরজ।’ (সুনানে কবরি: ৬/১১৬৯৫)। হযরত আবূ হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘মানব জাতির কাছে এমন এক জামানা আসবে, যখন মানুষ রুজি-রোজগারের ব্যাপারে হালাল-হারামের কোনো বিচার বিবেচনা করবে না।’ (বোখারি:৭০১৯)। হযরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে গোশত হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। হারাম খাদ্য দ্বারা গঠিত দেহের জন্যে জাহান্নামের আগুনই উত্তম।’ (শরহে মিশকাতুল:৫/২৭৭২)। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘হারাম পথে উপার্জন করে বান্দা যদি তা দান করে তবে আল্লাহ সে দান কবুল করেন না। প্রয়োজন পূরণের জন্যে সে সম্পদ ব্যয় করলে তাতেও কোনো বরকত হয় না। সে ব্যক্তি যদি সেই সম্পদ রেখে মারা যায়, তাহলে তা তার জাহান্নামে যাবার পাথেয় হবে। আল্লাহ অন্যায় দিয়ে অন্যায়কে মিটান না। বরং তিনি নেক কাজ দিয়ে অন্যায়কে মিটিয়ে থাকেন। নিশ্চয়ই মন্দ দিয়ে মন্দকে দূর করা যায় না।’ ( মিশকাত)।
ঈমান আনয়নের পর পরই নেক আমল করা শুরু করতে হয়। মুসলমানের জিন্দেগী হলো ঈমান ও আমলের জিন্দেগী। প্রতিদিনের নেক আমল গুলো জান্নাতের পথ প্রসস্ত করে। হারাম তথা নিষিদ্ধ বস্তু আহার করে ইবাদত করলে, ঐ ইবাদত পন্ডশ্রম বা ফলাফল শুণ্য হবে। পরকালে জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে। দুনিয়াতে হারাম বা অবৈধ সম্পদ উপার্জনের জন্য কিংবা হারাম বস্তু গ্রহণের কারণে নানা প্রকার সমস্যায় পড়তে হবে। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা হালাল রুজি-রোজগার তালাশকারী ব্যক্তির ওপর বরকত দান করুক। আল্লাহ তায়ালা হালাল বস্তু গ্রহণকারী ব্যক্তির জন্য জান্নাতের পথ সহজ করে দিন। আমীন।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন