আল আমিন ম-ল, গাবতলী (বগুড়া) থেকে : বগুড়ার গাবতলীতে পুরোদমে বোরো ধান কাটা-মাড়াইয়ের উৎসব চলছে। এ জন্য ধান কাটার প্রধান উপকরণ কাস্তে শাণ (ধার) দিতে কৃষক-শ্রমিক এখন কামারদের দোকানে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এ উপজেলার প্রায় ২০ থেকে ২৫টি হাট-বাজারে কামারদের দোকানে এখন শুধু চলছে কাস্তে তৈরি ও শাণ দেয়ার কাজ। বর্তমান কাস্তে তৈরির উপকরণ লৌহজাতদ্রব্য ও জ্বালানির জন্য কয়লার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে কাস্তের দাম বেড়েছে। প্রতিটি কাস্তে ১শ’ ৫০ টাকা থেকে ২শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক-শ্রমিকরা ধান কাটার মৌসুমে পুরাতন কাস্তে শাণ বা ধার দিচ্ছেন। প্রতিটি কাস্তে ৫০ টাকা থেকে ৮০ টাকা দিয়ে ধার দিতে হচ্ছে। কাগইল হাসপাতাল ও হাইস্কুল সংলগ্ন এলাকায় কামার গোবিন্দ চন্দ্র ও শান্ত মহন্ত জানান, এখন আমরা কাস্তে শাণ দিতে ব্যস্ত সময় পাড় করছি। দম ফেলানোর সুযোগ নেই। এ সময় আমাদের সুদিন। গাবতলীর কৃষকদের প্রধান ফসল ধান। এ ধান কাটতে প্রয়োজন হাজারো কাস্তে। তাই আগে-ভাগেই কৃষক ও শ্রমিকরা কাস্তে ক্রয় ও শান দিতে কামারদের কাছে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। এলাকার কামাররা জানান, প্রতিদিন ৫০ থেকে ৭৫টি কাস্তে শাণ বা ধার দিয়ে হাজার টাকা আয় করছেন তারা। ফলে বোরো মৌসুমে এখন কামার’দের সুদিনের বাতাস বইছে। তারা আরো জানান, এখন ধান কাটার মৌসুম হওয়ায় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়েছে। বোরো মৌসুম চলে গেলে আবার আমাদের কাজ কমে যাবে। তখন অলস সময় কাটাতে হবে। কৃষি অধিদপ্তর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে গাবতলী উপজেলার ১১টি ইউনিয়নসহ পৌরসভায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯০ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন (ধান)। এর মধ্যে উফসী জাতের ১৪ হাজার ৯শ ৫০ হেক্টর জমিতে ও হাইব্রীড জাতের ৩ হাজার ২শ’ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইতোমধ্যে অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে ১৮ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের চেয়ে ১শ’ ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ আশা করছেন এ বছরে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। গাবতলী উপজেলা কৃষি অফিসার আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার জানান, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক পরামর্শের ফলে এ বছরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছেড়ে যাবে। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাগন ধান গাছের রোগবালাই দমনে কৃষকদের তথ্য ও পরামর্শ দিচ্ছেন। আশা করছি আগামীদিনে বোরো ধান চাষ ও উৎপাদন আরো বাড়বে। এছাড়াও কৃষক ধানের বাম্পার ফলনের জন্য ক্ষতিকারক পোকা নিধনে আলোক ফাঁদ ও পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোঃ নাজমুল হক ম-ল জানান, উপজেলা জুড়ে পুরোদমে কৃষকরা বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু করেছে। এ বছরে ধানের ভাল ফলন হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন