বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

উত্তাপহীন ‘কোপা ক্ল্যাসিকো’

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

কোপা দেল রের সেমিফাইনালে মুখোমুখি বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। অপেক্ষ ছিল জমজমাট শ্বাসরুদ্ধকর একটা ম্যাচের। কিন্তু ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে দুই চিরপ্রতিদ্ব›দ্ধীর লড়াইটা ফুটবল রোমান্টিকদের মন ভরাতে পারল না। আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণ, পাল্টাপাল্টি গোলের রোমাঞ্চ, মাঠে ফুটবলারদের যুদ্ধংদেহী মনোভাব- পরশুর রাতে ন্যু ক্যাম্পে এর কিছুই দেখা যায়নি। ১-১ ড্রয়ের ম্যাচে দুই দলই মাঠ ছাড়ে জয়ের মত এক ধরণের চাপা সান্ত¦না নিয়ে। স্বাগতিক বার্সার সান্ত¦না পিছিয়ে থেকেও হার এড়ানো, আর রিয়ালের পাওয়া মহামূল্যবান অ্যাওয়ে গোল।
শুরুতেই বার্সেলোনা সমর্থকদের পুড়তে হয় আশাভঙ্গের বেদনায়- দলে থাকলেও একাদশে নেই মেসি। ফিলিপ কুতিনহোর বদলি হয়ে ৬৩ মিনিটে যখন মাঠে নামেন ম্যাচের স্কোরলাইন তখন ১-১। চোটের সঙ্গে লড়াই করা আর্জেন্টাইন জাদুকর দলকে এগিয়ে নিতে চেষ্টা করলেও সেই চেষ্টা সফলতার মুখ দেখেনি। ম্যাচ শেষে কোচ ভালভার্দে বলেন, ‘তার (মেসির) অস্বস্তি ছিল। আজ (পরশু) সে তুলনামুলকভাবে ভালো ছিল কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম তার দ্বিতীয়ার্ধে নামাটাই ভালো হবে। সে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারক হতে পারত। কারণ আমরা জানি বল পেয়ে যে কোন সময় সে বিপদ তৈরি করতে পারে।’ মেসি অবশ্য বিপদ তৈরি করতে পারেননি। এজন্য দ্বিতীয় লেগের দিকে তাকিয়ে ভালভার্দে, ‘ বার্নাব্যুতে আমাদের গোল করতেই হবে।’

কাতালান সমর্থকদের বেদনার রং নীল বর্ণ ধারণ করে ম্যাচের শুরুতেই। শুরু থেকেই বার্সাকে চেপে ধরা রিয়াল ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই গোল পেয়ে যায়। করিম বেনজেমার কাট পাস কাছ থেকে মাপা শটে জালে পাঠিয়ে দেন লুকাস ভাসকেজ। ৯৯ হাজার দর্শক ধারণক্ষম স্টেডিয়ামের একাংশে মুহূর্তেই নেমে আসে পিনপতন নীরবতা।

গোল খাওয়ার পর ঘুম ভাঙে টানা চার ও সব মিলে রেকর্ড ৩০ বারের চ্যাম্পিয়ন বার্সার। তবে বার্সার প্রতিটা আক্রমণ রিয়ালের ডি বক্সে এসে খেই হারিয়ে ফেলছিল। মেসি নেই। ওউসমান দেম্বেলেও একই কারণে মাঠের বাইরে। আক্রমণের পুরো দায়ীত্ব ছিল বার্সার ইতিহাসের সবচেয়ে দামি খেলোয়াড় কুতিনহোর। কিন্তু ব্রাজিল মিডফিল্ডার আশার অর্ধেক প্রতিদানও দিতে পারেননি। প্রতিপক্ষে ডি বক্সের সামনে বার বার খেই হারাতে দেখা যেছে তাকে। বল হারিয়েছেন, বিনিময়ে বল কাড়তে পারেনি সেভাবে। গোলে শটই নিতে পারেন মাত্র দুইবার, একটি গেছে পোস্টের উপর দিয়ে, আরেকটি সহজেই ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। মেসির সঙ্গে জুটিটাও ইদানিং সেভাবে জয় উঠছে না ব্রাজিল তারকার। ম্যাচ শেষে তাই স্পেনের গণমাধ্যমগুলো ধুয়ে দিয়েছে কুতিনহোকে। ১৬০ মিলিয়ন ইউরো দামের খেলোয়াড়ের পারফর্ম্যান্স এই! আরো বড় ভয়ের কথা হলো, দিনকে দিন পারফর্ম্যান্স যাচ্ছে নিচের দিকে!

শেষ পর্যন্ত ৬৩ মিনিটে কুতিনহোকে তুলে নিতে বাধ্য হন কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে। একই সময় ইভান রাকিটিচের বদলি নামেন আর্তুরো ভিদাল। কিন্তু তাতেও ম্যাচের ভাগ্যে পরিবর্তন আনতে পারেননি ভালভার্দে। বার্সা গোলটি শোধ দেয় ৫৭ মিনিটে। লুইস সুয়ারেজের শট পোস্টে লেগে ফিরলে সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়ে যান ম্যালকম। দুরপাল্লার জোরালো শটে বল জালে পাঠিয়ে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচান দলের এই আরেক ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার।
দ্বিতীয়ার্ধে রিয়ালের খেলার ভাষা বলছিল, গোল দিতে না পারলেও তারা খেতে চায় না। লক্ষ্যটা পরিষ্কার, সেক্ষেত্রে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ফিরতি পর্বে সুবিধাজনক অবস্থানেই থেকেই মাঠে নামা যাবে। অবশ্য বার্নাব্যুর দলটি বুঝিয়েছে, গত কয়েক মাসের দুর্দশা কাটিয়ে তারা গুছিয়ে উঠছে। কোচ সান্তিয়াগো সোলারিও খুশি প্রথম এল ক্ল্যাসিকো ম্যাচে হার এড়াতে পেরে, সেটাও আবার ন্যু ক্যাম্পে, ‘দারুণ একটা ম্যাচ হলো। খেলোয়াড়রা দারুণ খেলেছে। উভয় দলের সমর্থকদের জন্যই ম্যাচটা উপভোগ্য ছিল।’
বার্সা আপাতত দম ফেলার ফুসরত পাচ্ছে। বোরবার রাতে লা লিগায় ম্যাচ খেলতে অ্যাথলেটিক বিলবাও ভ্রমণ করবে ভালভার্দের দল। কিন্তু রিয়ালের সেই সুযোগ নেই, কালই লিগ ম্যাচে মাদ্রিদ ডার্বি মহারণ। সোলারির দলের সামনে সুযোগ নগর প্রতিদ্ব›দ্ধী অ্যাটলেটিকোকে হারিয়ে ও সরিয়ে পয়েন্ট তালিকায় দুই নম্বরে উঠে আসার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন