বর্তমানে ইউটিউবে অনেকেই কাজ করছেন । রীতিমত একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে এটি ! এই হুজুগের তালে গা ভাসিয়ে অনেক এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। করছেন না হালাল হারামের চিন্তা ও । আমি এই পোস্টে চেষ্টা করবো কিভাবে হালাল ভাবে ইউটিউবে কাজ করা যেতে পারে সেই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করতে।
আসলে সত্যি কথা হল,বর্তমানে ১০০ % হালাল ইনকাম করা এক মহা দূরহ কাজ । কোন কোন ক্ষেত্রে তো রীতিমত অসম্ভবও বটে !
তাহলে কি করবেন এখন ? হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন ?
যেহেতু পুরোপুরি হালাল ভাবে আয় করা অনেক কঠিন । তাই আপনি আপনার সাধ্যমত চেষ্টা করবেন যাতে আপনার আয়টা হালাল হয়,যতটুকু সম্ভব । কিছু ভুল ভ্রান্তি হবেই। কিন্তু আপনি সবসবময় চেষ্টা করবেন হারাম থেকে দূরে থাকতে । আপনার এই প্রচেষ্টাই তো আল্লাহ পাক চান। আমি আসলে কি বুঝাতে চাচ্ছি, আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন ।
এবার দেখি এসবের সমাধান কিভাবে করা যেতে পারে ?
১.তথ্যভিত্তিক বা শিক্ষামুলক ভিডিও করুনঃ
বিনোদন মুলক ভিডিও করলে কম বেশি হারামের সংমিশ্রণ ঘটার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে । তাহলে উপায় ?
তথ্য ভিত্তিক ভিডিও নিয়ে কাজ করলে এটা যেমন লং টাইম লাস্টিং একটি চ্যানেল হবে। তেমনি অনেক নাজায়েজ বিষয় থেকে দূরে থাকা সহজ হবে । যেমনঃ How to , Top Ten, Narration, Story Telling,Tutorial Based
উদাহরণ দেখুনঃ
https://www.youtube.com/watch?v=7sLr2SY7CfQ
২. ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকঃ
আমরা সাধারণত বিভিন্ন ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ইউজ করি , যেগুলো আসলে জায়েজ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায় ! তো কি করবেন এখন ?
এখেত্রে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক দিতে পারেন বিভিন্ন নাশিদ এর ভোকাল ভার্সন আছে । ওগুলো চাইলে ইউজ করতে পারেন । হারাম থেকে কিছুটা হলে ও বাঁচবেন।
উদাহরণ দেখুনঃ https://youtu.be/AoSLtAzoCTE
৩.ইমেজ ইউজঃ
ইমেজ ইউজ করার জন্য দেখি অনেক রকম ফন্দি করতে হয় অনেক ভাই কে । কিন্তু ওই ইমেজটা তো আসলে আপনারই না ! যাই করেন সেটা কি বৈধ হবে ?
তাহলে উপায় কি ?
উপায় হল ফ্রি ইমেজের অনেক গুলো সাইট আছে । আপনি ওখান থেকে নিতে পারেন । কারন ওগুলো বিনামূল্যে ইউজ করার পারমিশন আছে ।
উদাহরন দেখুনঃ http://www.freeimages.com
৪. সফটওয়্যার ইউজঃ
আমরা যেসব সফটওয়্যার ইউজ করি ভিডিও বানানোর জন্য, ওগুলো সাধারণত প্যাচ, ক্র্যাক সহ আরও নানা উপায়ে ব্যাবহার করতে হয় । কিন্তু এটা কি জায়েজ ? এগুলো তো পেইড সফট । এভাবে ইউজ করা মানে হচ্ছে তাদেরকে ঠকানো ! তাহলে উপায় ?
উপায় হল ওপেন সোর্স সফট ইউজ করা । নেটে সার্চ দিলে নানা ওপেন সোর্স সফট পাবেন ।এই ধরনের সফট গুলো বিনামূল্যে বিতরণের জন্যই তৈরি করা। খালি খালি কেন পাপ কামাবো আমরা ?
উদাহরণ দেখুনঃ
https://www.blender.org/download/
৫.তথ্য ইউজঃ
ধরুন আপনি একটি টপ টেন ভিডিও বানাতে চাচ্ছেন। কিন্তু আপনি তো এইসব ইনফো জানেন না । তাহলে কই পাবেন ? আরেকজনের ভিডিও থেকে চুরি বা অন্য কোন ফন্দি ? কোন দরকার নাই ।
তাহলে উপায় ?
এখানে ও উপায় হল ওপেন সোর্স এর ওয়েব সাইট গুলো ইউজ করতে পারেন ! যেমন উইকিপিডিয়া,উইকিহাউ ।
উদাহরণ দেখুনঃ
আর যদি এখানে না পান তাহলে টপ টেন রিভিউজ নামে একটা সাইট আছে, ওখান থেকেও নিতে পারেন ।
উদাহরণ দেখুনঃ
কিন্তু ভিডিও ডেসক্রিপশনে তথ্য সুত্র দিতে ভুলবেন না যেন । এতে এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন !
এক.
আপনার ভিডিওতে আপনি যে তথ্য দিলেন তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে । তথা, আপনার ভিডিওর অথরিটি বাড়বে।
দুই .
আপনি যে ওদের তথ্য ইউজ করলেন তার ক্রেডিট দিয়ে দিলেন । ওরা ও একটা ব্যাকলিঙ্ক পেল।
৬. অপ্রাসঙ্গিক ট্যাগঃ
অনেক ভাই তার ভিডিও তে ইচ্ছে মত ট্যাগ ব্যাবহার করেন। এতে করে ভিউয়ারদের কে কি ধোঁকা দেওয়া হল না ? মানুষকে ঠকানো এটা কি জায়েজ ?
উপায় কি ?
এটার উপায় পানির মত সহজ । প্রাসঙ্গিক ট্যাগ ইউজ করুন । অতিরিক্ত ট্যাগ দেওয়া ভাল নয় । অল্প দিন, রিলিভেন্ট দিন ।
৭.ভুলভাল টাইটেলঃ
ভিডিও হল একটার, টাইটেল দিয়ে রাখলেন আরেকটার ! এভাবে ভিউয়ারদেরকে ধোঁকা দিয়ে যে আয় হবে সেটা কি জায়েজ হবে ভাইয়া ?
উপায় কি ?
এটার উত্তর ও সহজ । রিলিভেন্ট টাইটেল দিন । ভিতরে যা আছে, তাই দিন । কোন বাটপারি করার দরকার নাই।
৮.উল্টাপাল্টা থাম্বনেইলঃ
ভিতরে আছে আবুলের নাটক। থাম্বনেইল দিলেন জোসনার নাটক ! না দেখলে মিস !
এভাবে আর কত দিন ?
আকর্ষণীয় থাম্বনেইল দিতে হবে। তার মানে এই নয় যে যা খুশি তাই দিবেন। সঠিক থাম্বনেইল দিন। এক্ষেত্রেও ফ্রি ইমেজের সাইট গুলোকে ব্যাবহার করতে পারেন ।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে হালাল রিজিকের উপায় করে দিন । আল্লাহ হাফেজ ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন