সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিনোদন প্রতিদিন

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কিছু সদস্য ইউটিউবের নামে চলচ্চিত্রের বদনাম করছে

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০২২, ১২:০৮ এএম

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) এখন সিনেমা সংশ্লিষ্ট মানুষের চেয়ে ইউটিউবারদের ভিড় বেশে পরিলক্ষিতি হচ্ছে। এই ইউটিউবাররা এফডিসিতে ঘুরে ঘুরে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট নামকাওয়াস্তে লোকজন এবং শিল্পী সমিতির একশ্রেণীর সদস্য যাদের কোনো অবস্থান নেই, তাদের দিয়ে অপ্রীতিকর কথাবর্তা বলিয়ে ভিউ বাড়ানোর অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। সমিতির কিছু সদস্যও ইউটিউব খুলে ভিউ বাড়ানোর আশায় সমিতির প্রতিষ্ঠিত সদস্যদের ব্যক্তিগত বিষয় কুরুচিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করছে। অন্যদিকে ইউটিউবারদের সঙ্গে যারা কথা বলছে, তারা নিজেদের লাইম লাইটে আনার জন্য তথাকথিত ইউটিউবারদের সঙ্গে চলচ্চিত্রের প্রতিষ্ঠিত নায়ক-নায়িকা সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করছে। ইউটিউবাররাও সেগুলোর অশ্লীল শিরোনাম দিয়ে প্রচার করছে। এতে সংশ্লিষ্ট নায়ক-নায়িকার যেমন ভাবমর্যাদা বিনষ্ট হচ্ছে, তেমনি চলচ্চিত্রেরও বদনাম হচ্ছে। এফডিসিতে ইউটিউবারদের দৌরাত্ম এবং তথাকথিত শিল্পী পরিচয়দানকারীদের কথা বলার কারণে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকে এখন এফডিসি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। তারা এর কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না। বলা হয়ে থাকে, এই ইউটিউবারদের অনেকে শিল্পী নামধারী এবং অনেকে চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে এফডিসিতে প্রবেশ করে। তারা ইউটিউবিংয়ের নামে পুরো চলচ্চিত্রকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরছে। এ নিয়ে অনেক বিশিষ্ট অভিনেতা ও নির্মাতা এফডিসিতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা দেওয়ান নজরুল। তিনি বলেন, ইউটিউবার নামধারী একটি শ্রেণী এফডিসি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মনে হয়, তারাই ইন্ডাস্ট্রির সবকিছু। এরা যা খুশি তা বলে যাচ্ছে। তাদের থামানোর যেন কেউ নেই। কেউ থামানোর উদ্যোগও নিচ্ছে না। এদের কারণে মানসম্মানের ভয়ে এফডিসি যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছি। পরিচালক বজলুর রাশেদ চৌধুরী বলেন, পাঁচ মাস ধরে এফডিসি যাই না এই তথাকথিত ইউটিউবারদের দৌরাত্মের কারণে। অথচ আমার জীবনের অর্ধেক সময় এফডিসিতে কেটেছে। যেভাবে ভিউয়ের আশায় তথাকথিত ইউটিউবাররা চলচ্চিত্রের লোকজনকে নিয়ে অপ্রকাশযোগ্য কথাবার্তা বলে বেড়ায়, তা শুনে রুচিতে বাঁধে। এদের এখনই সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করা দরকার। এ ব্যাপারে সাংবাদিক ভাইয়েরা আশা করছি উদ্যোগ নেবেন। পরিচালক এম এন ই¯পাহানি বলেন, এখন মন চাইলেও এফডিসিতে গিয়ে আড্ডা মারতে পারি না। যেখানেই যাই ইউটিউবারদের দৌরাত্ম। গেলেই কেউ না কেউ এসে বুম ধরে বসে বিব্রতকর বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে বসে। কোনো সেন্সর নেই। যদিও আমাদের অনেকে ইউটিউবারদের সাথে কথা বলে নিজেকে ধন্য মনে করছেন। তবে যেসব বিষয় নিয়ে কথা বলেন, তা যে চলচ্চিত্রের ক্ষতি করছে, তা ভাবছেন না। তারা নিজেদের লাইম লাইটে আনার জন্য চলচ্চিত্রের ক্ষতি করে হলেও, তা করছেন। এটা খুবই দুঃখজনক। তিনি বলেন, সম্প্রতি মৌসুমী ইস্যুতে এদের কয়েকজন যে ভাষায় ইউটিউবে অশালীন কথাবার্তা ছড়িয়েছেন তাতে করে বাড়িতেও কথা শুনতে হচ্ছে আমাদের। অথচ আমাদের সমিতিগুলো নিশ্চুপ। এফডিসি কর্তৃপক্ষ চোখ বুঁজে আছে। সিনিয়র অভিনেত্রী অঞ্জনা বলেন, আমি মহাবিরক্ত। সম্প্রতি শিল্পী সমিতির তিন সদস্য (সাদিয়া মির্জা, মিজান এবং জামাল পাটোয়ারী) ইন্ডাস্ট্রিকে সমাজ জঘন্যভাবে হেয় করে ইউটিউবে তুলে ধরছে। একজন শিল্পী হিসেবে তাদের এই অপকর্মে আমি অপমানবোধ করছি। রাস্তাঘাটে কথা শুনতে হচ্ছে। শিল্পী সমিতি কেন এসব জঘণ্যদের আশ্রয় দিয়ে বিতর্কিত হবে? এদের বিরুদ্ধে সমিতিকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অরুণা বিশ্বাস বলেন, জাতির জনকের হাতে গড়া এফডিসিকে যখন একদল অদম্য মেধাবী নিজেদের সৃষ্টি দিয়ে কোটি কোটি দর্শক তৈরি করে গেছেন, তখন একশ্রেণীর তথাকথিত ইউটিউবার শিল্পীসহ নানা প্রসঙ্গে অপ্রকাশযোগ্য ভাষায় কথা বলছে। কানাডায় গিয়ে এসব নিয়ে অসংখ্যবার প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছি। বিশেষ করে শিল্পী সমিতির কিছু নামধারী শিল্পী যদি এ কাজ করে, তখন কিছু বলার থাকে না। এদের বিরুদ্ধে সমিতির উচিৎ কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। এই দুষ্টুদের অবশ্যই এফডিসি থেকে বের করে দিতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন