দিন দিন আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এজেন্ট ব্যাংকিং। বাড়ির পাশে কম খরচে ব্যাংকিং সেবা পাওয়ার ফলে বেড়েই চলেছে আমানত, এজেন্ট ও আউটলেটের সংখ্যা। ২০১৮ শেষে এক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে তিন হাজার ১১২ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মোট আমানত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ১১২ কোটি টাকা। তিন মাস আগে আমানত ছিল ২ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা। আর এক বছর আগে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ছিল ১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকা। এ হিসাবে তিন মাসে আমানত বেড়েছে ৫৩৫ কোটি টাকা বা প্রায় ২১ শতাংশ। আর এক বছরে বেড়েছে এক হাজার ৭১৩ কোটি টাকা বা দ্বিগুণেরও বেশি। এককভাবে সবচেয়ে বেশি আমানত থাকা আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে রয়েছে ৯২৮ কোটি টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকে রয়েছে ৮২৭ কোটি টাকা। আর ব্যাংক এশিয়ায় রয়েছে ৬৯৬ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রথমের দিকে শুরু করা ব্যাংকগুলোই এখন ভালো অবস্থানে রয়েছে। সম্ভাবনা দেখে নতুন করে অনেক ব্যাংক যুক্ত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২১টি ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি নিয়েছে, কার্যক্রমে এসেছে ১৯টি। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংক। আমানত সংগ্রহে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে এগিয়ে থাকলেও এজেন্ট ও আউটলেট বিবেচনায় এগিয়ে আছে ব্যাংক এশিয়া। ডিসেম্বর পর্যন্ত সব ব্যাংক মিলে চার হাজার ৪৯৩ এজেন্টের বিপরীতে আউটলেট রয়েছে ৬ হাজার ৯৩৩টি। এর মধ্যে ব্যাংক এশিয়ার আউটলেট রয়েছে দুই হাজার ৫৬৬টি। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ডাচ-বাংলা ব্যাংকের রয়েছে দুই হাজার ১৫০টি। পর্যায়ক্রমে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের রয়েছে ৫৬৩টি, ইসলামী ব্যাংকের ৩০৫টি এবং মধুমতি ব্যাংকের রয়েছে ২৮১টি। এছাড়া আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের রয়েছে ২০০টি করে আউটলেট।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে সব মিলিয়ে অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ লাখ ৫৭ হাজার। তিন মাস আগে ছিল ২০ লাখ ২৯ হাজার। এক বছর আগে মোট অ্যাকাউন্ট ছিল ১২ লাখ ১৪ হাজার। অর্থাৎ এক বছরে অ্যাকাউন্ট দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। আর তিন মাসে বেড়েছে ২১ শতাংশ। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১১ লাখ ৮৭ হাজার রয়েছে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাত লাখ ৪৯ হাজার রয়েছে ব্যাংক এশিয়ায়। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ এক লাখ ৩৬ হাজার অ্যাকাউন্ট রয়েছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে।
উল্লেখ, ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে কম খরচে সেবার আওতায় আনতে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের পর এজেন্ট ব্যাংকিং প্রচলন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারির পরের বছর ব্যাংক এশিয়া প্রথমে এ সেবা চালু করে। এজেন্ট পয়েন্ট থেকে আমানত সংগ্রহ,ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ, সুবিধাভোগীর কাছে রেমিট্যান্সের অর্থ পৌঁছে দেওয়া, ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় ভাতাভোগীকে অর্থ প্রদান, অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স জানা, অ্যাকাউন্ট ফরম সংগ্রহ, ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ডের আবেদন ফরম এবং চেক বই সংগ্রহ করতে পারেন গ্রাহকরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন