রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

মোচিকে অসন্তোষ, আখ চাষীদের পাওনা ২৭ কোটি টাকা

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:১২ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলের ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের (মোচিক) আখ চাষিদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমে মিলের কাছে কৃষকের পাওনা দাড়িয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা। চলতি মাড়াই মৌসুম শুরু হওয়ার পর প্রথম কিস্তিতে কৃষকদের ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত ১২ কোটি টাকা পরিশোধ করা হলেও এখনো বাকি রয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা। গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে ১৩ জানুয়ারী পর্যন্ত আখ চাষীদের পাওনা পরিশোধ না করায় মিল এলাকায় চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। চাষীরা প্রায়ই পাওনা টাকার জন্য বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে। টাকা না পেয়ে অনেক চাষী লাগানো আখ নষ্ট করে দিয়ে সেই জমিতে ধান চাষ শুরু করেছেন। নাজুক এই পরিস্থিতিতে মিলে উৎপাদিত চিনি বিক্রি না হওয়াকে দায়ী করছেন মিলটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউছুপ আলী শিকদার। আখচাষী কল্যাণ সমিতির সভাপতি জহুরুল ইসলাম জানান, মোবারকগঞ্জ সুগার মিলে আখ চাষীদের বকেয়া পাওনা আদায়ের দাবিতে একাধিকবার তারা স্বারকলিপি পেশ করেছেন। কিন্তু তাদের দাবী মানা হচ্ছে না। ফলে কালীগঞ্জের প্রায় সাড়ে ৫ হাজার আখচাষী হতাশ হয়ে পড়েছেন। মিল সুত্র থেকে জানা গেছে, গত ২০১৭-১৮ মৌসুমে উৎপাদিত ৪শ ৫০ মেট্রিক টন চিনি গুদামে পড়ে আছে। আর চলতি মৌসুমে উৎপাদিত চিনি যোগ হয়েছে আরো ৫ হাজার ৩শ ৯ মেট্রিক টন। ১৩ ফেব্রুয়ারী সকাল পর্যন্ত ২০১৮-১৯ মাড়াই মৌসুমে ৪ হাজার ৮শ ৫৯ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হয়েছে। সব মিলিয়ে মিলের গুদামে প্রায় ২৬ কোটি ৫৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার চিনি অবিক্রিত রয়েছে। এছাড়া দুই কোটি টাকা মুল্যোর প্রায় ২ হাজার মেট্রিক টন চিটাগুড় পড়ে আছে। আখচাষী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ করিম মন্টু জানান, প্রতি কেজি চিনি মিলগেটে বিক্রি হয় ৫০ টাকা। মিলগেটের বাইরে বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ টাকা কেজি। যে কারনে মিলের তালিকাভুক্ত ডিলাররা এ মিলের চিনি কিনতে অপারগতা প্রকাশ করে আসছে। আর চিনি বিক্রি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছে মিলটি। কালীগঞ্জের বুজিডাঙ্গা মুন্দিয়া গ্রামের আখচাষী মোহন জানান, এবছর সে ৬ বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছে। ইতিমধ্যে চার বিঘা জমির আখ মিলে সরবরাহ করেছেন। যার পাওনা প্রায় দেড় লাখ টাকা। কিন্তু তিনি পেয়েছেন মাত্র ১০ হাজার টাকা পেয়েছে। এ ভাবে হাজা হাজার কৃসকের বকেয়া পড়ে আছে। মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউছুপ আলী শিকদার জানান, মিল গোডাউনে প্রায় ৩০ কোটি টাকার বেশি চিনি অবিক্রিত পড়ে রয়েছে। চিনি বিক্রি না হওয়ায় চাষীদের আখ বিক্রির পাওনা পরিশোধ করা যাচ্ছে না। চলতি মৌসুমে চিনিকলটি সচল রাখতে ৩৪ কোটি টাকা ভর্তুকি চাওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের কাছে। কিন্তু দুই মাস হতে চললেও এখনো কোন টাকা পাওয়া যায়নি। তবে টাকার ব্যবস্থা হলে আগে কৃষকদের টাকা পরিশোধ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন