রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঝালকাঠি -রাজাপুর মহাসড়কের উন্নয়ন কাজে ধূলায় অতিষ্ঠ জনসাধারণ

রাজাপুর ( ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৩:০০ পিএম

ঝালকাঠি - রাজাপুরে মহাসড়কের উন্নয়ন কাজে ধূলায় অতিষ্ঠ জনসাধারণ মানুষ
রমজান মাসে দেখা যায় রাস্তার পার্শে দোকান গুলোতে পর্দা টানিয়ে বিক্রি করতে। কিন্তু এখন রমজান মাস না হলেও ঝালকাঠি ও রাজাপুরের আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশের দোকানগুলো পলিথিনের বেড়া দিয়ে বেচা বিক্রি করছে দোকানীরা। শুধু দোকানীরাই না, রাস্তার পাশের ঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও পলিথিন টানিয়ে রাখা হচ্ছে।

কারণ একটাই, ধূলার অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া। ১২৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ঝালকাঠি কালিজিরা থেকে ভান্ডারিয়া পর্যন্ত (ঝালকাঠি জেলার অংশ) ৩৮ কি.মি. সড়ক ২০ ফুট থেকে ২৪ ফুট চওড়া করে রাস্তা প্রশস্ত করণ কাজ চলছে। ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান বিল্ডার্স, ওরিয়েন ট্রেডার্স ও অহেদ কনস্ট্রাকশন এ কাজ বাস্তবায়ন করছে। ২০১৯ সালের মধ্যে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন মেয়াদকাল ধরা হয়েছে।
এ কার্যক্রমে প্রকৌশল অধিদপ্তর ও ঠিকাদারের নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও সেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে শিক্ষার্থী, পথচারী, বৃদ্ধ, শিশুসহ এলাকাবাসী পড়েছে সীমাহীন দুর্ভোগে নাভিশ্বাস উঠেছে জনসাধারনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রায়। প্রকল্পের ধূলা ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রাখেননি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। আবার কাজ শেষেও ‘উন্নয়নস্থল’ থেকে উড্ডয়ন ধুলা কীভাবে প্রসমিত হতে পারে এ ব্যাপারে মাথা ব্যাথা নেই কারোরই।
ফলে এ সকল প্রকল্পে ধূলা উড়তেই থাকছে। সড়কের চলমান উন্নয়নের মধ্যেই ঝাঁকুনি দিয়ে চলছে গাড়ি, উড়ছে ধুলা সড়কের দোকানপাট, গাছ-গাছালিতে ধুলার আস্তর পড়ে আছে। ধুলায় মাখামাখি হয়ে চলছেন পথচারিসহ স্কুলগামি শিশুরা। দিনে দিনে এই অবস্থা ভয়াবহ হয়ে এর মাত্রা প্রতি কিউবিক মিটারে হয়তো ৯০০ মাইক্রোগ্রামে পৌঁছেছে (১০ মাইক্রোমিটার ব্যাসের থেকেও বড় বস্তুকণা), ধারনা করা হচ্ছে যা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মাত্রার হবে হয়তো।

সড়ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে ২০১৮ সনের প্রায় ১ বছর আগে সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। ধীরগতিতে কাজের অগ্রসর হওয়ায় ধূলায় নাকাল সড়কটি ও চলাচলকারি মানুষগুলো। আঞ্চলিক মহাসড়কের এই উন্নয়ন কাজের ধীরগতিতে রাজাপুর উপজেলার প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়ক এখন ধূলার রাজ্যে পরিণত হয়েছে।
এ কারণে সড়কের পাশে অবস্থিত বিভিন্ন দফতর, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়িতে বসবাসরত মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এছাড়া সড়ক উন্নয়ন কাজের মান নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে ক্ষোভ। ধূলা আর ধূলি বস্তুকণা সহনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি থাকায় শ্বাসতন্ত্র-সংক্রান্ত বিভিন্ন রোগে ভুগছে এলাকাবাসী। প্রকল্পের যথাযথ সমন্বয়, সুষ্ঠুতা ও সময়-ব্যবস্থাপনা না হওয়ায় উন্নয়ন স্বস্তির বদলে অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে এ উন্নয়ন। জনকল্যাণ নিশ্চিত করার জন্যই উন্নয়ন পাশাপাশি জনস্বাস্থ্য, নির্মল পরিবেশ, স্বস্তিবিধানও এর অংশ।

এই ধুলার দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে কোনো প্রযুক্তি হাতে না থাকলেও পানি ছিটানোর নির্দেশনা উন্নয়ন কাজগুলোর ঠিকাদারদের দেওয়া আছে বলে সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। পানি ছিটানোর বিশেষ গাড়ি (স্পেশাল ওয়াটার বাউজার) দিয়ে সড়কগুলোতে সকাল-দুপুর দুইবেলা পানি ছিটানো হবে।

এলাকাবাসী দাবি জানিয়েছে, যাত্রী, চালক, পথচারী ও আশপাশের মানুষ সবার কথা ভেবে প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাসহ কর্তাব্যক্তিরা সদয় দৃষ্টি দিবেন এবং সংশ্লি¬ষ্টরা পানি ছিটানোর কাজটি করবেন।

এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খান বিল্ডার্স এর প্রোপাইটর মাহফুজ খান এর কাছে জানতে চাইলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৯৪৩২৫৭১২৪) একাধি বার কল দিয়ে চেষ্টা করলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন জানান, উন্নয়নকাজের ফলে সৃষ্ট ধূলা নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রযুক্তি নেই। তবে আমরা নিয়মিত ঠিকাদারদের পানি ছিটানোর কাজটি করার জন্য তাগিদ দিয়ে থাকি। সংশ্লিষ্টরা পানি ছিটানোর কাজটি ঠিকমত করছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে সত্যি। তিনি এ ব্যাপারে বিশেষ খেয়াল রাখছেন বলে দাবী করেন।। এলাকাবাসী উর্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন