বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

খেলোয়াড় ফেরত চেয়ে শেখ জামালের আল্টিমেটাম

প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনকে (বাফুফে) ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে। অধিনায়ক মামুনুল ইসলামসহ জাতীয় দলের ৯ ফুটবলারকে নিজেদের দাবি করে তাদের ফেরত চেয়ে গতকাল বাফুফেকে এই আল্টিমেটাম দেয় তারা। যদি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে খেলোয়াড় ফেরত না পায় তাহলে আসন্ন এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলবে না শেখ জামাল। শুধু তাই নয়, এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে অংশ না নেয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দলটি। পাশাপাশি যেসব ফুটবলার তাদের কাছ থেকে পারিশ্রমিকের অগ্রিম টাকা নেয়ার পরও ‘বাফুফের ষড়যন্ত্রে’ অন্য ক্লাবে নাম লিখিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে শেখ জামাল। কাল ক্লাব প্যাভিলিয়নে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়াকে এ সব তথ্য দেন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের। তিনি বলেন, ‘সদ্য সমাপ্ত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে হারার পর জাতীয় দলের ফুটবলারদের আর ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ যেতে  দেয়া হয়নি। পরে বাফুফের সহযোগিতায় বিভিন্ন ক্লাব আমার খেলোয়াড়দের নিজের তাঁবুতে নিয়ে গেছে। অথচ এর আগের দিন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের সঙ্গে সাড়ে তিন ঘণ্টার সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিলো, শেখ জামালের  খেলোয়াড়রা সেখানেই ফিরবে। বাফুফের পক্ষপাতমূলক আচরণে আমরা অবাক হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অবস্থাদৃষ্টে বুঝছি বাফুফে কয়েকটি ক্লাবের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। তারা চায় না শেখ জামাল হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতুক এবং এএফসি কাপের চূড়ান্ত পর্বে ভালো খেলুক। জাতীয় দলে খেলা আমাদের যে সব খেলোয়াড় অন্য ক্লাবে চলে গেছেন তারা সবাই ২০১৫-১৬ মৌসুমের জন্য শেখ জামালের কাছ থেকে তাদের পাওনা ও পারিশ্রমিকের এক-তৃতীয়াংশ অগ্রিম হিসেবে নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন এক ক্লাব থেকে টাকা নিয়ে কিভাবে তারা অন্য ক্লাবে নাম লেখায়। বাফুফের সহযোগিতা না থাকলে কি ফুটবলাররা এমন সাহস দেখাতে পারবেন।’
এ সময় ক্লাবের পক্ষ থেকে মামুনুল ইসলামের নেয়া টাকা গ্রহণ করার রসিদ সংবাদ সম্মেলনে পড়ে শোনানো হয় এবং  দেখানো হয়। এতে দেখা যায় যে, মামুনুল ২০১৪-১৫ মৌসুমে জামালের কাছে পাওনা ১১ লাখ টাকাসহ ২০১৫-১৬ মৌসুমের জন্য অগ্রিম হিসেবে তার প্রাপ্য ৫০ লাখ টাকার ৩৩ শতাংশ ১৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকা অগ্রিম গ্রহণ করেন। মনজুর কাদের বলেন, ‘খেলোয়াড়রা অন্য ক্লাব থেকে যে অগ্রিম টাকা নিয়েছিলো তা আমরা বাফুফেকে ফেরত দিয়েছি। আমার দলের খেলোয়াড়রা তাদের কর্মকা-ের ভুল স্বীকার করে ক্লাবকে চিঠি দিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন। একজন খেলোয়াড় যখন এক ক্লাবে এক মৌসুম খেলেন তখন দল দলের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হওয়ার আগে সেই ক্লাবেই থাকেন। এতোদিন এটিই হয়ে আসছে। কিন্তু বাফুফের সহযোগিতায় কিছু ক্লাব এবার সেই ধারা ভঙ্গ করলো। আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের ফুটবলারদের ফেরত চাই। বাফুফের সভাপতি যেসব আশ্বাস দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়ন চাই। নাহলে এএফসি কাপে শেখ জামালের না খেলার দায় বাফুফেকেই নিতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন এবং তার বর্তমান কমিটির দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে আনেন মনজুর কাদের। তিনি বলেন, ‘বাফুফের বর্তমান কমিটির সদস্যরা শুধু ফিফা আর এএফসিতে দৌড়ঝাপে ব্যস্ত। ৮ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে ফুটবলের কি উন্নতি করেছে তারা। ফিফা ও এএফসি থেকে গত আট বছরের যে শত কোটির টাকার অনুদান এসেছে, তার কতটা ফুটবলের উন্নয়নে কাজে লাগিয়েছেন।’ সম্মেলনে শেখ কামাল টুর্নামেন্ট এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ নিয়েও কথা বলেন জামাল সভাপতি। তিনি বলেন,‘ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সন্তান শেখ কামাল। তার নামে একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন হবে, আর সেই টুর্নামেন্টের প্রাইজমানি এক কোটি টাকার কম হবে। সেটা মানতে পারিনি বলে টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি শেখ জামাল। আর অংশ নেবোই বা কেমন করে, টুর্নামেন্টে আমাদের তো আমন্ত্রণই জানানো হয়নি।’
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে ছেলেখেলা বলে উল্লেখ করেন কাদের। নিম্নমানের দল এবং ক্লাবগুলোকে যদি সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে, তাহলে শেখ জামালের মতো একটা চ্যাম্পিয়ন দলকেও তো খেলানো যেতে পারত অনেকটা অনুযোগের সুরে বলেন তিনি। এছাড়া বাফুফের গত নির্বাচনে সালাউদ্দিনকে জিতিয়ে আনা, জেলা লিগ কমিটির চেয়ারম্যান থাকাকালীন জেলার ফুটবল উন্নতির জন্য নিজের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ও নিটল-নিলয় স্পন্সর থেকে আরো এক লাখ টাকা জোগাড় করে দেয়ার কথাও জানান মনজুর কাদের। সেই সঙ্গে কাজী সালাউদ্দিনের নিজস্ব কোনো কাউন্সিলর পরিচয় নেই বলে মিডিয়াকে জানান এই ফুটবল সংগঠক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন