রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সেই সাব্বিরই দেখালেন, ‘সম্ভব’

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:২৭ এএম

ছায়া সঙ্গী হয়ে ছিল বিতর্ক। যাচ্ছিলেন বাজে সময়ের মধ্য দিয়ে। জায়গা হারিয়েছিলেন দলে। ছয় মাসের একটি নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে না হতে পেয়েছিলেন ছয় মাসের আরেক নিষেধাজ্ঞা। এই শাস্তি পুরোপুরি ভোগ করলে খেলা হতো না নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। শাস্তি কমানোয় সুযোগ পান ওয়ানডে সিরিজের দলে। বিতর্ক হয়েছে দলে নেয়ার সেই প্রক্রিয়াটা নিয়েও। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে সাব্বির রহমানকে বারবার নিজের প্রতিজ্ঞার কথা জানাতে হয়েছে, তিনি ভালো খেলেই সব প্রশ্নের উত্তর দেবেন।
সেটি তিনি দিলেনও। গতকাল টিম সাউদিকে পুল করে এক রান নিয়ে পূর্ণ করলেন সেঞ্চুরি। তিন অঙ্ক ছুঁয়েই শূন্যে লাফ, উইকেটে চুমু এঁকে, পরে এক হাতে ব্যাট উঁচিয়ে আরেক হাত দিয়ে ইশারা করে কী যেন বলতে চাইলেন। যেটির একটা অর্থ হতে পারে- ‘আমার ব্যাট কথা বলতে জানে’!’ অর্থ যেটিই হোক, ইনিংসটা যে তাঁকে ঘিরে নানা প্রশ্নের উত্তর, সন্দেহ নেই! ইনিংসটা খেলে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে নিজের অন্তর্ভুক্তিও প্রায় নিশ্চিত করলেন সাব্বির।
আগের দুই ম্যাচে শুরুটা বড় করতে না পারা মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবার সফল হলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো পৌঁছালেন তিন অঙ্কে। প্রথম ম্যাচে করেন ১৩, পরেরটিতে ৪৩। তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে এল আরাধ্য সেঞ্চুরি। ১১০ বলে ১২ চার ও দ্ইু ছক্কায় ১০২ রান করে আউট হন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
২০১৪ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া সাব্বিরের লেগেছে ৫১ ইনিংস। তিন সংস্করণ মিলিয়ে এটি তার ১১৩তম ইনিংস। বাংলাদেশের চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে পঞ্চাশ বা তার বেশি ইনিংস খেলার পর তিনি পেলেন তিন অঙ্কের দেখা। প্রথম সেঞ্চুরির আগে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৭ ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ২০০৭ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়ার আট বছর পর ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ রান করেন তিনি। বাংলাদেশের আরেক ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহিম নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ৮৬তম ইনিংস। ৫৬তম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন অলক কাপালী।
দশম ওভারে বাংলাদেশ ৪০ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসা সাব্বির ফিরতে পারতেন শূন্য রানে। টিম সাউদির বলে তার পুলে ডিপ ফাইন লেগে ক্যাচ ধরতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ছক্কা বানিয়ে দেন লকি ফার্গুসন। জীবন পাওয়ার পর আর পেছনে তাকাতে হয়নি, চোখধাঁধানো সব শটে এগিয়ে নেন দলকে। ষষ্ঠ উইকেটে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের সঙ্গে ১০১ রানের জুটিতে দলকে টেনে তুলেন খাদের কিনারা থেকে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার দ্রæত বিদায়ের পর মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে গড়ে তুলেন ৬৭ আরেকটি ভালো জুটি। সাত চার ও এক ছক্কায় ৫৯ বলে পঞ্চাশ পঞ্চাশ স্পর্শ করেন সাব্বির। দাপুটে ব্যাটিংয়ে পেরিয়ে যান আগের সেরা ৬৫। তিন অঙ্কে পৌঁছান ১০৫ বলে। তার ব্যাটেই আড়াইশর কাছাকাছি যায় বাংলাদেশের সংগ্রহ। তবে তার লড়াকু ব্যাটিংয়ের পরও ৮৮ রানে জিতে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছে নিউজিল্যান্ড।

সিরিজে বাংলাদেশ
ব্যাটিং ম্যাচ রান সর্বোচ্চ গড় স্ট্রাইক ১০০/৫০
সাব্বির রহমান ৩ ১৫৮ ১০২ ৫২.৬৬ ৮১.০২ ১/০
মোহাম্মদ মিঠুন ২ ১১৯ ৬২ ৫৯.৫০ ৭৪.৮৪ ০/২
সাইফউদ্দিন ৩ ৯৫ ৪৪ ৩১.৬৬ ৬৯.৮৫ ০/০
মেহেদী মিরাজ ৩ ৭৯ ৩৭ ২৬.৩৩ ৯৭.৫৩ ০/০
সৌম্য সরকার ৩ ৫২ ৩০ ১৭.৩৩ ১১০.৬৩ ০/০
মুশফিকুর রহিম ৩ ৪৬ ২৪ ১৫.৩৩ ৫৯.৭৪ ০/০
মাহমুদউল্লাহ ৩ ৩৬ ১৬ ১২.০০ ৪৯.৩১ ০/০
মাশরাফি মুর্তজা ৩ ২৪ ১৩ ১২.০০ ৬৮.৫৭ ০/০
তামিম ইকবাল ৩ ১০ ৫ ৩.৩৩ ২৭.৭৭ ০/০
মুস্তাফিজুর রহমান ৩ ৫ ৫* ৫.০০ ২৭.৭৭ ০/০
রুবেল হোসেন ১ ৩ ৩ ৩.০০ ১০০.০০ ০/০
লিটন দাস ৩ ৩ ১ ১.০০ ১৮.৭৫ ০/০

বোলিং ম্যাচ উই. সেরা গড় ইকো ৪/৫
মুস্তাফিজুর রহমান ৩ ৪ ২/৪২ ৪২.৭৫ ৬.৩৩ ০/০
মেহেদী মিরাজ ৩ ২ ১/৪২ ৬৩.৫০ ৫.২৫ ০/০
মাশরাফি মুর্তজা ৩ ১ ১/৫১ ১২১.০০ ৪.৯৩ ০/০
সাইফউদ্দিন ৩ ১ ১/৪৮ ১৩৫.০০ ৫.৮৬ ০/০
রুবেল হোসেন ১ ১ ১/৬৪ ৬৪.০০ ৭.১১ ০/০
মাহমুদউল্লাহ ৩ ১ ১/২৭ ৮০.০০ ৮.০০ ০/০
সাব্বির রহমান ৩ ০ ০ ০ ৬.২৭ ০/০
সৌম্য সরকার ৩ ০ ০ ০ ৯.০০ ০/০
*অন্তত এক ওভার বোলিং করা

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন