আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) কাছে বেশ কয়েরকটি বড় প্রতিযোগিতা আয়োজনের আবেদন করে রেখেছিল ভারতের জাতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (এনওসি)। এই তালিকায় ২০২৬ সালে দিল্লিতে যুব অলিম্পিক ও ২০৩০ সালের এশিয়ান গেমস অন্যতম। এমনকি ২০৩২ সালে প্রথমবারের মত বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনেও আগ্রহী ছিল ভারত। কিন্তু তাদের সেই রঙিন স্বপ্নে জল ঢেলে দিয়েছে আইওসি।
সম্প্রতি দিল্লতে শুরু হওয়া শুটিং বিশ্বকাপে পাকিস্তানি শুটারদের ভিসা না দেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়ানীতি ভঙ্গ করে ভারত। এই কারণে ভারতের এনওসির করা সকল আবেদন বাতিল করে দিয়েছে আইওসি।
বৃহষ্পতিবার থেকে দিল্লিতে শুরু হয়েছে শুটিং বিশ্বকাপ। বাংলাদেশও এই ইভেন্টে অংশ নিচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানকে সেখানে অংশগ্রহণ করতে খেলোয়াড় ও অফিসিয়ালদের ভিসা অনুমদন দেয়নি ভারত। এটা যে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার রেশ তা না বললেও চলে। হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জাওয়ান নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রথম থেকেই পাকিস্তানি মদদকে দায়ী করছে ভারত। অন্যদিকে, এই ঘটনায় তাদের হাত নেই বলে শুরু থেকেই জানিয়ে আসছে পাকিস্তান।
কিন্তু ভারত তা মানবে কেন! শিল্প-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে ক্রীড়াঙ্গনেও পাকিস্তানকে বয়কট করার রাস্তায় হাঁটছে ভারত। আসন্ন আইসিসি বিশ্বকাপেও পাকিস্তানকে বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির বেশ ক’জন সাবেক খেলোয়াড় ও বোর্ড কর্তা। যা স্পষ্ট আন্তর্জাতিক ক্রীড়ানীতির লঙ্ঘন। আর এই ব্যাপারটিই মেনে নিতে পারছে না আইওসি।
অলিম্পিক চার্টারের নিয়ম বলছে, রাজনৈতিক কারণে কোন দেশ নির্দিষ্ট কোন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ আটকাতে পারবে না। এমনকি কোন টুর্নামেন্টে রাজনৈতিকভাবে বৈরী কোন দেশ থাকলেও তাদের বিপক্ষে খেলা বয়কট করা যাবে না। শুটিং বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে এই নিয়ম মেনে চলেনি ভারত। যে কারণে ভারতের উপর ক্ষেপেছে আইওসি। ভারতকে স্পষ্ট হুমকিও দিয়ে তারা জানিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে এই অবস্থার পরিবর্তন না হলে ভারতে কোন ‘অলিম্পিক ইভেন্ট’ অনুষ্ঠিত হবে না।
প্রতিযোগিতায় কেন পাকিস্তানি শুটারদের ভিসা দেওয়া হয়নি তা জানতে চেয়েছিল আইওসি। ভারত সরকারের সঙ্গে তারা এ ব্যাপারে কথা বলে অনুরোধ জানায় পাকিস্তানকে ভিসা দেওয়ার। কিন্তু ভারতীয় কতৃপক্ষ ইতিবাচক সাড়া না দেওয়ায় ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সব ধরণের আলোচনা স্থগিত ঘোষণা করে তারা। শুধু তা-ই নয়, আগামীদিনে ভারত আইওসির কাছে যে সব প্রতিযোগিতা আয়োজনের আবেদন করে রেখেছিল, সেগুলোও বাতিল হয়ে গেছে।
এক বিবৃতিতে আইওসি জানায়, ‘সমস্যা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর থেকে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোন পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলকে ভারতে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের ব্যাপারে কোন সমাধানে পৌঁছানো যায়নি। তাই, ভারতের এনওসি এবং সরকার দেশটিতে ভবিষ্যতে যে সব অলিম্পিক রিলেটেড ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজনের আবেদন করেছিল তা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইওসি এক্সিকিউটিভ বোর্ড।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন