অনেকেরই একটি ভুল ধারণা আছে যে যক্ষা শুধু ফুসফুসেই হয়। এটি একবারেই ভুল ধারণা। কয়েকটি অঙ্গ বাদে প্রায় সব অঙ্গেই যক্ষা হতে পারে। কিডনীতেও যক্ষা হয়। যে জীবানু দিয়ে ফুসফুসে যক্ষা হয় সে জীবানু দিয়েই কিডনীতেও যক্ষা হয়। জীবানুটির নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস। এটি একটি ব্যাকটেরিয়া যেটি খুব ধীরে সংখ্যায় বৃদ্ধি পায়। এইডস রোগীদের কিডনীতে যক্ষা হবার সম্ভাবনা বেশী। কিডনীতে যক্ষা হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমনঃ
১। জ্বর, ২। কাঁপুনি, ৩। অরুচি, ৪। ওজন কমে যাওয়া, ৫। অস্বস্তি, ৬। কিডনীতে ব্যাথা, ৭।বার-বার প্রস্রাবে সংক্রমন। অনেক সময় প্রথম দিকে কোন উপসর্গ থাকেনা। পরে বিভিন্ন উপসর্গ শুরু হয়।
কিডনীর যক্ষা ডায়াগনসিস একটু কঠিন। চট করে কারো ডায়াগনসিস করা দুরূহ। বার-বার প্রস্রাবে ইনফেকশন হছে অথচ কালচার করে কোন জীবানু পাওয়া যাছেনা তখন যক্ষার কথা মনে রাখা উচিত। কিডনীতে যক্ষা সাধারণতঃ ফুসফুসে যক্ষার জটিলতা হিসেবে হয়। সুতরাং, ফুসফুসে যক্ষা আছে কি-না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কফ পরীক্ষা, এক্স-রে এবং রক্তের পরীক্ষা করা উচিত। কিডনীর যক্ষা ডায়গনসিসের জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, আইভিইউ, রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করা হয়।
কিডনীর যক্ষার চিকিৎসাও কঠিন। ফুসফুসের যক্ষায় যে চারটি ওষুধ ব্যবহৃত হয় কিডনীর যক্ষাতেও সে চারটি ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ওষুধগুলো হছে রিফামপিসিন, আইসোনিয়াজিড, ইথামবিউটল ও পাইরাজিনামাইড। প্রথম দু’মাস চারটি ওষুধই খেতে হয়। শেষ চার মাস রিফামপিসিন এবং আইসোনিয়াজিড খেতে হয়। এসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক। কিন্তু এইডস রোগীর যদি কিডনীতে যক্ষা হয় তবে আরো বিপদ। সেক্ষেত্রে ওষুধ খেতে হবে ৯ মাস। কিছু ক্ষেত্রে সার্জারীও লাগতে পারে।
ফসুফুসের বাইরে যক্ষার মধ্যে কিডনীতে যক্ষা অনেক বেশী হয়ে থাকে। সবারই এ বিষয়ে ধারণা থাকা উচিত। কারণ, বাংলাদেশে যক্ষা রোগী প্রচুর। ফুসফুসে যক্ষার জটিলতা হিসেবে তাই কিডনীতেও যক্ষা হতেই পারে।
ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন