বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

আনন্দবাজারের প্রতিবেদন : ঢাকার রাস্তায় ছোট্ট সুপারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১১:১২ এএম

পরনে নীল পোশাক, গলায় বাঁধা লাল স্কার্ফ উড়ছে পিছনে। যেন সুপারম্যান হাজির ঢাকার রাস্তায়। বনানীর জতুগৃহ এফ আর টাওয়ারে লাগা আগুনের লেলিহান শিখার সঙ্গে দমকলের কর্মীরা যখন লড়েছেন, জলের পাইপের লিক বন্ধ করে দাঁতে দাঁত চেপে বসে ছিলেন সুপারম্যান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে লাগা আগুন ২৫টি প্রাণ নিয়ে নিয়ন্ত্রণে এসেছে সন্ধ্যা পেরোতেই। দমকল, পুলিশ তো ছিলই, ছিলেন সেনা, নৌ এবং বিমান বাহিনীর সদস্যরাও। কিন্তু সাধারণ মানুষও যে পিছিয়ে ছিলেন না, সেই ছবি রাতেই ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছোট্ট একটি ছেলে এক দলা প্লাস্টিক নিয়ে লিক বন্ধ করতে বসে রয়েছে দমকলের জলের পাইপের ওপরে। সেই ছবিই কার্টুনে ফিরে আসে, ছোট্ট ছেলেটি যেন সুপারম্যান!তবে ঢাকার সুপারম্যান যে নেহাতই ছোট্ট, বয়স বড়জোর ১০ কি ১১! ফেসবুকে প্রথম তার পরিচয় জানান বনানীতে দায়িত্বে থাকা পুলিশের সার্জেন্ট সোহেল রানা-‘আরে এ যে নাইম!’ জানিয়েছেন, ছেলেটি থাকে কড়াইল বস্তিতে। মাঝে মাঝে এসে আলাপ জমায় পুলিশ বক্সে।

তার বাবা অন্য কোথাও বিয়ে করে সংসার করছে। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করে। মামি খেতে দিলে খেতে পায়, না হলে জোটে না। এর মধ্যেও বস্তির আনন্দ স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে, কারণ বড় হয়ে সে পুলিশ হতে চায়। সার্জেন্ট লিখেছেন, ‘আমরা তাকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিই। আমার সঙ্গে থাকতে ভালবাসে সে। তার দুঃখের কথা বলে। ছোট্ট ছেলে, কিন্তু বড় সুন্দর কথা বলে নাইম।’

গতকাল দুপুরে ৩২ নম্বরের এফ আর টাওয়ারে আগুন ছড়িয়ে পড়তে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ে। নাইমও বসে থাকেনি। লম্বা পাইপ এঁকে বেঁকে যে জল নিয়ে আসছে, দমকলের কর্মীরা তা ছড়িয়ে আগুন নেভাতে চেষ্টা করছেন। তেমনই একটা পাইপে একটা ফুটো দেখতে পেয়ে প্রথমে হাতে করে চেপে ধরে নাইম। তাতেও জল বেরিয়ে আসছে দেখে শুয়ে পড়ে সেটা বুকে চেপে ধরে। সেই সময়ে কিছু প্লাস্টিক এনে দেয় কেউ। তা দিয়েই অদম্য জেদে লিক বন্ধ করে বসেছিল ছোট্ট ছেলেটি। টানা কয়েক ঘণ্টা। শুক্রবার সকাল হতেই খোঁজ পড়ে নাইমের। পুলিশ গিয়ে নিয়ে আসে তাকে। মুখে লাজুক হাসি নিয়ে বলে, ‘‘আমি মানুষের সাহায্য করেছি। মানুষের উপকার করার চেষ্টা করেছি।’’ যেন- এ আর কী! সে দিন অনেক মানুষই কিন্তু ঘটনাস্থলে ভিড় জমিয়েছিলেন মোবাইলে ছবি আর নিজস্বী তুলতে। সে ভিড় সরাতে হিমশিম খেয়েছে দমকল আর পুলিশ। তার ছবি যে ভাইরাল হয়েছে, নাইম কি জানে? ঘাড় নেড়ে সে বলে, ‘‘হ, আমি শুনসি। আমারে অনেকে কইসে!’’ লাজুক কণ্ঠেই নাইম পাশে দাঁড়ানো সার্জেন্ট রানাকে দেখিয়ে জানিয়েছে, ‘‘আমি বড় হয়ে এই স্যারের মতো হইতে চাই। পুলিশ হইতে চাই। পুলিশ হইলে মানুষের সাহায্য করা যাইব!’’
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Nannu chowhan ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১১:২৮ এএম says : 0
We pray & hope noiem will be helpful police,who will able to help recover the bad
Total Reply(0)
sanowar rahman ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:১৭ পিএম says : 0
ইন্ডিয়া বাংলাদেশের প্রশংসা করছেন না। তারা বাংলাদেশকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করছে।বাংলাদেশের এত উন্নতি হয়েছে যে ছেলেটিকে সুপারম্যান বানানো হয়েছে পানি নেভানোর জন্য।
Total Reply(0)
Ahmed hossain khan ৩০ মার্চ, ২০১৯, ৩:১৩ পিএম says : 0
Naimer poiyas dekhe amr chuke jol ase, dua kori o jeno lekha pora kore boro hoy a sristir seba kore hase.
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন