রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দ্রুততম ফিফটি ফরহাদ রেজার

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

আদতে বোলার, কিন্তু প্রয়োজনে ব্যাট হাতেও জ্বলে উঠতে সিদ্ধ হস্ত। এখন পুরোদস্তুর অলরাউন্ডার। ব্যাট হাতে বর্তমানে আছেন উড়ন্ত ফর্মে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং যাদুতে সবাইকেই বুঁদ করে রেখেছিলেন। বোলিং করতে গিয়ে ব্যাটিংয়ে যে মরিচা ধরেনি সেটা গত বিপিএলেও টের পাওয়া গিয়েছিল। গতকাল দেখা গেল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেও। চলতি আসরের সেরা বোলারের ব্যাট থেকেই এল লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্রুততম ফিফটি! পরে বল হাতেও দ্যুতি ছড়িয়ে মাত্র এক রানের রোমাঞ্চকর এক জয় দিয়ে দিনটি নিজের করে নিয়েছেন ফরহাদ রেজা।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এদিন এমনই ঝড় তুললেন তাতে উড়েই গেল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। প্রাইম দোলেশ্বরের এই অলরাউন্ডার ফিফটি করেছেন মাত্র ১৮ বলে। তার আগে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি ছিল নাজমুল হোসেন মিলনের। ২০০৭ সালে জাতীয় লিগের একদিনের ম্যাচে ঢাকা বিভাগের হয়ে মাত্র ১৯ বলে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে ফিফটির দেখা পেয়েছিলেন।
আগের রাতের ঝড় আর বৃষ্টিতে হোম অব ক্রিকেটের সবগুলো উইকেট ভিজে গিয়েছিল। তা শুকাতে শুকাতে খেলা শুরু হলো দুপুরে। ম্যাচের দৈর্ঘ্যও নেমে অঅসে ২৬ ওভারে। ১টায় শুরু হওয়া ম্যাচের ১৯তম ওভারে উইকেটে নেমেছিল, দলের রান তখন ১৩৭। মাঠ ছাড়লেন ২৫তম ওভারে, ততক্ষণে দলের রান ২৩৩। ৭ ওভারেই যে প্রাইম দোলেশ্বর ৯৬ রান তুলতে পেরেছে তাতে মূল অবদান ফরহাদের। ২০ বলে ৫৬ রান তুলেছেন ফরহাদ। তাতে ৩ চার ও ৬ ছক্কা। এ ঝড়ের মাঝেই ১৮ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন। তাতেই ভেঙেছে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের ফিফটির রেকর্ড। ফরহাদ ছাড়াও এদিন ঝড় তুলেছেন ইমরান উজ-জামান, ৫৪ বলে করেন ৭৫ রান। আর শেষ দিকে সাদ নাসিমের ৩৬ বলে ৫১ রানের ক্যামিওতেই ২৩৯ রানের পাহাড় গড়ে দোলেশ্বর।

ব্যাট হাতে ঝলকের পর নিজের কাজটিও ঠিক ঠাকই করলেন ফরহাদ। বল হাতে নিলেন গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট। শেখ জামাল অধিনায়ক নুরুল হাসানকে (২০ বলে ৩৭) দিয়ে শুরু। পরে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার আগেই ফিরিয়েছেন তানবির হায়দারকেও (২৫ বলে ৩৬)। শেষ দিকে রোমাঞ্চের দিকে মোড় নেয়া ম্যাচের গতিও পাল্টে দেন ‘ম্যাচ উইনার’ তাইজুল ইসলামকে (৩) ফিরিয়ে। এক উইকেট হাতে রেখেও লক্ষ্য থেকে এক রান আগে থামে জামালও। তার সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে উইকেট নেয়া আরেক পেসার আবু জায়েদ রাহিও ঝুলিতে পুরেছেন ৩ শিকার।

রেজার রেকর্ডের দিন অনুমিতভাবেই সবার আগে সুপার সিক্সে নাম লিখিয়েছে উড়তে থাকা আবাহনী। বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দায়িত্বশীল ফিফটি করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। রান পেয়েছেন সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। মাঝারি লক্ষ্য তাড়ায় আবাহনীর স্পিনারদের সামনে দাঁড়াতেই পারে নি খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতি। ২৬২ রান তাড়ায় ৩২.৫ ওভারে ১৩০ রানে গুটিয়ে যায় খেলাঘর। ম্যাচটি ১৩২ রানে জিতেছে শিরোপাধারীরা।

দিনের অপর ম্যাচে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কাছে পাত্তাই পায়নি বিকেএসপি। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটের দারুণ এক জয় দিয়ে আবাহনীর পর সুপার সিক্স নিশ্চিত করেছে নাঈম ইসলামের দল। দারুণ বোলিংয়ে পাঁচ উইকেট নিয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালে রাখলেন রিশি ধাওয়ান। শট খেলা সহজ নয় এমন উইকেটে দলকে রান তাড়ায় পথ দেখালেন মুমিনুল হক। সুপার সিক্স নিশ্চিতে ম্যাচে মিশে থাকল মাত্র ৭ রানের জন্য তার সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ। ১৮২ রানের লক্ষ্য ৩০ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে নাঈম ইসলামের দল।

দোলেশ্বর-শেখ জামাল, মিরপুর
প্রাইম দোলেশ্বর : ২৬ ওভারে ২৩৯/৬ (ইমরান ৭৫, সাইফ ৩৬, সাদ ৫১, ফরহাদ ৫৬; তাইজুল ১/৫০, সাকিল ৩/৪০, ইলিয়াস সানি ১/৩৩, জিয়াউর ১/৩০)। শেখ জামাল : ২৬ ওভারে ২৩৮/৯ (ইমতিয়াজ ৩৪, অনুষ্টুপ ৪৪, সোহান ৩৭, জিয়াউর ৪৬, তানবীর ৩৬; আবু জায়েদ ৩/৪৮, ফরহাদ ৩/৩৫, সাদ ১/২৯, আরাফাত জুনি. ২/২১)। ফল : দোলেশ্বর ১ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : ফরহাদ রেজা।

আবাহনী-খেলাঘর, সাভার
আবাহনী : ৪৮.৪ ওভারে ২৬২ (জহুরুল ২৫, সৌম্য ১২, শান্ত ৬০, সাব্বির ৪৯, মিরাজ ৪৭; রবিউল ৫/৬৪, ইফরান ৩/৪২, মাসুম ১/৩৯, রবি ১/২৮)। খেলাঘর : ৩২.৫ ওভারে ১৩০ (কমল ৩২, মাহিদুল ২২, ইফতেখার ৩৬*; আরিফুল ১/১৭, মাশরাফি ০/২৪, নাজমুল ২/১৪, সানজামুল ৪/৩৬, মিরাজ ২/১৮, মোসাদ্দেক ১/৯)। ফল : আবাহনী ১৩২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : নাজমুল হোসেন শান্ত।

বিকেএসপি-রূপগঞ্জ, ফতুল্লা
বিকেএসপি : ৫০ ওভারে ১৮১/৯ (নওরোজ ৩৮, ফাহাদ ২০, শামিম ৫২, আমিনুল ১৩, কাইয়ুম ১১, সাদমান ১৫; ধাওয়ান ৫/৫১, শহীদ ১/৩০, মুক্তার ২/২৯)। রূপগঞ্জ : ৪৫ ওভারে ১৮২/৫ (মারুফ ২৭, মুমিনুল ৯৩, নাঈম ৩১; তানজিম ১/৩৩, সুমন ২/৩২, কাইয়ুম ২/২৮)। ফল : রূপগঞ্জ ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : ঋষি ধাওয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন