শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ব্রেক্সিট অচলাবস্থা বিশ্বাসসযোগ্যতা হারাচ্ছে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট

দি টেলিগ্রাফ | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

যুক্তরাজ্যে এক নাটকীয় পরিস্থিতিতে ইউরোপের সাথে ব্রিটেনের বন্ধন লালনের পক্ষে থাকা ‘রিমেইনারস’ এবং ব্রেক্সিটের পক্ষের লড়াকু সৈনিক ‘লিভারস’ উভয়েই আকস্মিকভাবে নিজেদের একই নৌকার আরোহী হিসেবে দেখতে পেয়েছে। যুযুধান দু পক্ষকেই অবশ্যই আবারো ব্রিটিশ পার্লামেন্টে যেতে হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র উত্থাপিত পরিকল্পনা তিন দফা প্রত্যাখ্যান করেছে পার্লামেন্ট। মনে হচ্ছে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট উপলব্ধি করেছে যে তা জনগণের স্বার্থে কাজ করছে। পরিহাসের বিষয়, যে পার্লামেন্ট নিজেকে ‘পার্লামেন্ট সমূহের জননী’ বলে গর্ববোধ করে সেই পার্লামেন্ট নিয়ে নাগরিকরা অধিক মোহমুক্ত হতে পারছে না। সমন্বিত ভ্রান্তি নিরসনের কারণ যথেষ্টই দৃশ্যমান। যারা ই ইউতে থেকে যেতে ইচ্ছুক তারা হতাশ এ কারণে যে, তাদের মতে যে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে তা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই শুরু করা হয়েছে। আবার যারা তিন বছর আগে ব্রেক্সিটের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন তারাও সমানভাবে হতাশ। প্রধানমন্ত্রী মে’র অযোগ্যতার কারণে পার্লামেন্টে বিষয়টির ফয়সালা না হওয়ায় ব্রেক্সিটের সপক্ষে আন্দোলনে গতি সামান্যই।
পার্লামেন্ট ও জনগণের মধ্যকার এই ক্রমবর্ধমান ফাটল পূর্ব অনুমানকৃত। সংসদীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পার্লামেন্ট হচ্ছে গণতন্ত্রের সৃদৃঢ়স্থল। এটি হচ্ছে জনগণের ইচ্ছার প্রতি সম্মান প্রদানের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের মূর্তপ্রতীক। ব্রেক্সিট ডামাডোলকে কেন্দ্র করে একটি পথ খুঁজে বের করার বারংবার ব্যর্থতা ব্রিটেনের পার্লামেন্টের বিশ^াসযোগ্যতাকে বিনষ্ট করছে। বস্তুত একটি নিরপেক্ষ সংস্থা পরিচালিত জনমত জরিপের ফল এ ধরনের ক্ষয়ের প্রমাণ বহন করছে। ৮১ শতাংশ ব্রিটিশ সম্ভবত বিশ^াস করে যে দেশের শাসকরা ব্রেক্সিট বিষয়টি খারাপ ভাবে মোকাবেলা করেছেন। পার্লামেন্টে অভ্যন্তরীণ দ্ব›েদ্বর যে রূপ পরিলক্ষিত হয়েছে তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্রিটেনের ভাবমর্যাদাকে অবনত করেছে। আরো বেশি শংকাজনক যা তা হচ্ছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সাথে অবিচ্ছেদ্য ভাবে সম্পৃক্ত একটি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদাহানি, যা আসলে বিশে^র কিছু স্থানে যেমন দেখা যায় সে রকম ক্যারিশম্যাটিক নেতাদের অভ্যুদয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে। সংসদীয় প্রতিষ্ঠানের উপর ব্যক্তির বিজয় গণতন্ত্রের ধ্বংসের অন্যতম লক্ষণ।
এদিকে ব্রেক্সিট নিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিনের সঙ্গে দেখা করতে পারেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
মে বলেছেন, তিনি করবিনের সঙ্গে কথা বলে ১০ এপ্রিলের মধ্যে পার্লামেন্টে ভোটের আয়োজন করতে চান যে ইইউ কখন ব্রেক্সিট নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসবে।
থেরেসা মে আশা করছেন তিনি ও করবিন মিলে নতুন একটি ব্রেক্সিট চুক্তির মাধ্যমে ইউরোপ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন এবং এমপিদের সমর্থন নিতে পারবেন। করবিন জানিয়েছেন কাস্টমস ইউনিয়ন ও কর্মীদের অধিকারই তার কাছে সবচেয়ে আগে। অন্যদিকে দুই দলেরই একদল এমপি নোডিল ব্রেক্সিট বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার সঙ্গে সাত ঘণ্টার বৈঠক শেষে থেরেসা মে ঘোষণা দেন তিনি করবিনের সঙ্গে দেখা করবেন। একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কথা বলে ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর প্রস্তাব দেবেন।
তবে মে’র এমন সিদ্ধান্তে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনসহ দলের অন্যান্য নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তবে করবিন জানান, তিনি খুবই খুশি যে থেরেসা মে অচলাবস্থা কাটাতে নিজের দায়িত্ব বুঝতে পেরেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন