স্পোর্টস ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় কোপা আমেরিকার জন্য চূড়ান্ত দল ঘোষণা করেছেন আর্জেন্টিনা কোচ জেরার্ডো মার্টিনো। চমক হয়ে এসেছে ২৩ সদস্যের সেই দলে সাবেক ম্যানচেস্টার সিটি ও জুভেন্টাস তারকা কার্লোস তেভেজ ও জুভেন্টাসের হয়ে দুর্দান্ত সময় কাটানো পাওলো দিবালার নাম না থাকাটা।
কার্লোস তেভেজের জাতীয় দলের ভাগ্যটা খারাপ বলতেই হয়। ২০১৪ বিশ্বকাপে কোচ জেরার্ডো মার্টিনোর দলে জায়গা হয়নি তার, গেল বছর কোপা আমেরিকার দলে জায়গা হলেও খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি। এরপর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সময় দলে চোটগ্রস্থ খেলোয়াড়ের তালিকা লম্বা হওয়াতে ডাক পেলেও চোটের খাতায় নাম ওঠে তারও। সেই সুযোগে আর্জেন্টিনা দলের জার্সি গায়ে চড়ান পাওলো দিবালা।
গেল মৌসুমে জুভেন্টাসকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে তুলতে অগ্রণী ভুমিকায় ছিলেন তেভেজ। তারও আগে ছিলেন ইংলিশ ক্লাব ম্যানসিটিতে। এক দশক ইউরোপে কাটানোর পর নিজের প্রথম ও স্বদেশী ক্লাব বোকা জুনিয়ার্সে নাম লেখান ৩২ বছর বয়সী স্ট্রাইকার। দলকে ২০১৫ প্রিমিরা ডিভিশন শিরোপা জয়ে ছিল তার মুখ্য ভুমিকা। গেল বুধবার কোপা লিবার্তোদরেসের সেমি-ফাইনালে তুলতেও সামনে থেকে নেতৃত্য দেন তেভেজ। এরপরও মার্টিনোর দলে যায়গা জয়নি তার। অবশ্য জাতীয় দলের জার্সি গায়ে খুব বেশি সফল বলা যাবে না তেভেজকে। ৭৬টি ম্যাচে অংশ নিয়ে করেছেন মাত্র ১৩ গোল।
সেই হিসেবে দিবালার বাদ পড়াকে বিষ্ময় বলতেই হয়। তেভেজের পরিবর্তে জুভেন্টাসের মত দলে নেওয়া হয় তাকে। প্রথম দিকে মানিয়ে নিতে হিমশিম খেলেও দ্রæতই নিজেকে মেলে ধরেন ২২ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার। লিগে প্রথম দিকে ধুকতে থাকা তুরিনের দলটি যে সম্ভব্য শেষ ৭৮ পয়েন্টের মধ্যে ৭৬-ই নিজেদের দখলে নিয়ে টানা পঞ্চম শিরোপা জিতল তাতে বড় অবদান দিবালার। অভিষেক মৌসুমেই ৪৫ ম্যাচে করেন ২৩ গোল। লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলতাদাও তিনি।
এছাড়া মার্টিনোর দলে সম্ভব্য সকলেই আছেন। আক্রমণে লিওনেল মেসির, সার্জিও আগুয়েরো, গঞ্জালো হিগুয়েইনের সাথে আছেন গত ফেব্রæয়ারিতে পিএসজি থেকে চীনা ক্লাবে নাম লেখানো এজেকুয়েল লাভেজ্জি। আছেন হাভিয়ের মাচেরানো এবং পিএসজির দুই তারকা এঞ্জেল ডি মারিয়া ও হাভিয়ের পাস্তোরে। তবে তিন গোলরক্ষকের তালিকায় জেরোনিমে রুয়ির না থাকাটাও কিছুটা বিষ্ময়ের। গত দুই মৌসুমে রিয়াল সোসিয়াদের হয়ে দুর্দান্ত সময় কাটান রুয়ি।
১৯৯৩ সালে পর থেকে বড় কোন টুর্নামেন্ট জেতেনি আর্জেন্টিনার সিনিওর জাতীয় দল। ২০১৫ সালে কোপার ফাইনালে স্বাগতিক চিলির কাছে পেনাল্টি ভাগ্যে হেরে যায় তারা। ২০১৪ সালের ফাইনালে গিয়েও অতিরিক্ত সময়ের গোলে হার মানতে হয় মেসির দলকে। ১৯১৬ সালে বুয়েন্স আয়ার্সে বসেছিল প্রথম আসর। সেবারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েই আসরের সবচেয়ে সফল দল (মোট ১৫ বার)। ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। আগামী ৩ রা জুন শুরু হবে শতবর্ষী উপলক্ষে কোপার এই বিশেষ আসর। মেসির সামনে সুযোগ দলের দীর্ঘ দিনের শিরোপা অপেক্ষাটা ঘোচানো। চাওয়াটা যতটা আর্জেন্টাইনদের, তার চেয়ে বেশি যেন ফুটবলের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন