সিলেট অফিস : সিলেটে বিভিন্ন বেভারেজ কোম্পানির কিছু অসাধু কর্মকর্তা স্থানীয় ডিলার বা ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে অধিক মুনাফা লাভের আশায় মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয় নতুন ভুয়া সিলের মাধ্যমে বাজারজাত করে। র্যাব-৯, সিপিসি-১ (সিলেট ক্যাম্প) এর কাছে এ রকম সংবাদ আসে। গোপন এই সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুরমার নাভানা সিএনজি স্টেশনের পার্শ্ববর্তী আল-নুর কমিউনিটি সেন্টারের নিচ তলায় ভগবতী এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালায় র্যাব।
ভগবতী এন্টারপ্রাইজ কোকাকোলা, ফান্টা, ¯প্রাইট-এর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লি. এর স্থানীয় পরিবেশক। র্যাব-৯ এর উপ-পরিচালক মেজর এস এ এম ফখরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে শুক্রবার গভীর রাতে ওই অভিযানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয়ের বোতল ও ক্যানে নতুন মেয়াদের সিল দেওয়ার সময় ভগবতী এন্টারপ্রাইজের মালিক, কোকাকোলা কোম্পানির এরিয়া সেলস অফিসার ও সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভসহ ৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হচ্ছেন-গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার দক্ষিণ শাহাবাজ গ্রামের এম এ আউয়ালের ছেলে আলতাফ হোসেন বিপ্লব (৩১), দক্ষিণ সুরমার ঝালুপাড়ার দিলিপ পালের ছেলে দেবাশীষ পাল (২১) এবং হবিগঞ্জের লাখাই থানার মাদনা বাজার গ্রামের মন্টু রায়ের ছেলে রাজু রায় (৩০)। র্যাব জানায়, কোমল পানীয় সাধারণত ৩-৪ মাসের মেয়াদে বাজারে ছাড়া হয়। বিভিন্ন সাইজের বোতল ও ক্যানের মাধ্যমে বাজারজাতকৃত এসব পানীয়ের গায়ে কালো কালিতে মেশিনের মাধ্যমে উৎপাদনের তারিখ, সময়, ব্যাচ ও মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লেখা থাকে। কোম্পানি অনুমোদিত ডিলারদের মাধ্যমে বাজারে খুচরা পর্যায়ে এগুলো বিক্রয় করা হয়। অবিক্রিত মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয় ডিলারদের মাধ্যমে বাজার থেকে কোম্পানিতে ফেরত পাঠানোর কথা থাকলেও অবৈধভাবে মুনাফা অর্জনের জন্য কোম্পানিরই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ইন্ধনে ও সহযোগিতায় নতুন মেয়াদের সিল মেরে ওইসব মেয়াদোত্তীর্ণ পানীয় ফের বাজারজাত করা হয়। এসব মেয়াদোত্তীর্ণ পানীয় পান করে স্বাস্থ্যগত বিপর্যয়ের হুমকির মধ্যে পড়েন জনসাধারণ। র্যাব আরো জানান, আটককৃত ব্যক্তিরা পুরাতন মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয়ের বোতল পরিষ্কার করে, রিমুভার বা স্পিরিট টিস্যু দিয়ে ঘষে বোতলের গা হতে পুরাতন তারিখ মুছে ফেলে ভুয়া সিল ব্যবহার করে নতুন মেয়াদের তারিখ লাগাচ্ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা এসব নতুন মেয়াদের পণ্য বাজারজাত করা হতো বলে জানিয়েছে। র্যাব-৯ এর উপ-পরিচালক মেজর এসএএম ফখরুল ইসলাম খান জানান, এ ধরনের কার্যকলাপ বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ এর ২৫(গ) ধারা, নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ এর ২৯ ধারা, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ এর ৫১ ধারা আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি আরো জানান, জনস্বার্থে র্যাব এসব অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখবে। এ ঘটনার পেছনে আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন