ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গৌরীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আত্মীয়কে দেখতে এসেছেন আম্বিয়া খাতুন। বাড়িতে ফেরার পথে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ব্যস্ত মহাসড়ক পার হলেন তিনি।
ফুট ওভারব্রিজ কেন ব্যবহার করলেন না? জানতে চাইলে মধ্যবয়সী এই মহিলা বলেন, ‘পায়ের গোড়ালিতে ব্যাথা। শুনেছি ঢাকার অনেক এলাকায় ওভারব্রিজেই নাকি চলন্ত সিঁড়ি আছে। এখানেও সেটা হলে খুবই ভালো হয়’। শত শত মানুষ এভাবে পার হতে দেখা যায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে। পথচারীদের বেশিরভাগই সময় বাঁচাতেই এভাবে চলার কথা বলেছেন। আবার কেউ কেউ বলছেন, সিঁড়ি ভাঙতে কষ্ট হয়। এ জন্য চলন্ত সিঁড়ি লাগানোর দাবি জানাচ্ছেন বেশিরভাগই পথচারী।
পথচারী সাইফুল ইসলাম বলেন, দিনে অনেকবারই মহাসড়কের এপার থেকে ওপারে যাতায়াত করতে হয়। সময় বাঁচাতে ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করি না। শর্টকাট পারাপারের জন্য নিচ দিয়েই সহজেই পার হয়ে যাই। ঝুঁকি রয়েছে কিন্তু জরুরি মুহূর্তে সেটা মনে থাকে না।
পথচারীদের এই সামান্য কষ্ট বাঁচানোর চেষ্টার কারণে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বিঘি্নত হয়। পাশাপাশি প্রাণঘাতি দুর্ঘটনাও ঘটে নানা সময়। কিন্তু যেন ভ্রুক্ষেপ নেই কারও। ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করার আরেকটি বড় কারণ হলো এর অবস্থান। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অনেক জায়গায় ফুট ওভারব্রিজ দূরে থাকায় পথচারীরা নিচ দিয়ে পার হয়। মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম, চান্দিনা, মাধাইয়া ও গৌরীপুর এলাকায় দেখা যায়, অধিকাংশ লোকজন ফুট ওভারব্রিজ এড়িয়ে নিচ দিয়ে পারাপার হচ্ছেন।
অবশ্য পথচারীদের অনেক অভিযোগ, দিনের বেলায় প্রচন্ড রোদের তাপের কারণে অনেকে এইসব ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করে না। আবার ফুট ওভারব্রিজে লাইটের কোন ব্যবস্থা না থাকায় এইসব রাতের বেলা ভবঘুরে ও মাদকাসক্তের দখলে থাকে। এছাড়া রাতে ছিনতাইকারীদের ভয়ে ওভারব্রিজ ব্যবহার করতে চান না বলে অনেকেই জানান।
এ বিষয়ে চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী রুপা বলেন, পড়াশোনার করার কারণে প্রায় প্রতিদিনই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পার হয়ে কলেজে যেতে হয়। ফুট ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপার হতে হয়। কিন্তু চান্দিনা মহাসড়কের ওপর যে ফুট ওভারব্রিজটি রয়েছে সেটাতে প্রায়ই সময় বখাটে ছেলেদের আড্ডা মারতে দেখা যায়। এছাড়াও ফুট ওভারব্রিজটির দু’পাশের রেলিংগুলো রাজনৈতিক ব্যানার, ফেস্টুন দিয়ে রাখায় উপরের কিছুই নিচ থেকে দেখা যায় না। তাই আমার মত অনেকেই বাধ্য হয়ে মহাসড়কের উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবুল কালাম আজাদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, মহাসড়কে ঝুঁঁকিপূর্ণ পারাপার দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। সবারই এমন অভ্যাস পরিহার করা অত্যন্ত জরুরি। জীবনের চেয়ে সময়ের মূল্য বেশি হতে পারে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন