শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সমস্যায় জর্জরিত বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

মীর রাসেল, চবি থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পর ভর্তি হতে এসে দেখলাম ‘বাংলাদেশ স্টাডিজ’ নামে একটা নতুন বিভাগ চালু হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার প্রবল ইচ্ছা থেকে নতুন এই বিভাগে ভর্তি হই।
কিন্তু প্রথম থেকেই বিভিন্ন সমস্যার সাথে মোকোবেলা করতে হচ্ছে আমাদের। বিভাগে কোন স্থায়ী শ্রেণীকক্ষ নেই, পর্যাপ্ত স্থায়ী শিক্ষক নেই, গ্রন্থাগারে পর্যাপ্ত বই নেই এবং সেমিনার থাকলেও সেখানে কোন কর্মচারী নেই। এতোগুলো সঙ্কট নিয়ে একটা বিভাগ কেন চালু করা হলো? এমন প্রশ্ন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বিপ্লবের।
তিনি আরও বলেন, এ বিভাগের সাথে অন্য যে দুটি বিভাগ চালু হয়েছিল সেখানে ৪/৫ জন শিক্ষক রয়েছেন কিন্তু আমাদের কোন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এসব সমস্যার কারণে আমাদের পড়ালেখার যেমন ব্যঘাত ঘটছে তেমনি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কর্মকাÐে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়ছি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে কলা অনুষদের অধীনে বাংলাদেশ স্টাডিজ এবং সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ডেভেলাপমেন্ট স্টাডিজ ও ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগ তিনটির অনুমোদন দেয়। একই শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগে ৫০ জন, ডেভেলাপমেন্ট স্টাডিজে ৩০ জন এবং ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগে ৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়। তবে অন্য দুটি বিভাগ শুরু থেকে শ্রেণিকক্ষ পেলেও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয় কলা অনুষদের গ্যালারিতে।
তবে বিভিন্ন বিভাগের অনুষ্ঠান থাকলে গ্যালারিতেও ক্লাস করতে পারে না তারা। তখন শিক্ষকদের কক্ষে কিছু শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে কিছু শিক্ষার্থী বসে ক্লাস করতে হয়। এমনকি গ্যালারিতে ক্লাস করার সময় কোন অনুষ্ঠান থাকলে ক্লাস অর্ধেক করে বের হয়ে যেতে হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীরা যে গ্যালারিতে বসে ক্লাস করে সেটাও জরাজীর্ণ। গত ১৬ তারিখ ক্লাস করার সময় ছাদ থেকে বেশ কয়েক টুকরা কংক্রিট ভেঙ্গে পড়ে। তবে কক্ষের খালি স্থানে পড়ায় বড় রকমের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় শিক্ষার্থীরা।
এছাড়া একসাথে চালু হওয়া অন্য দুটি বিভাগে ৪/৫ করে শিক্ষক থাকলেও এখানে বিভাগীয় সভাপতি একমাত্র স্থায়ী শিক্ষক। শিক্ষক কম হওয়ায় সবসময় ঠিকমতো ক্লাসও হয়না। বিভাগের সেমিনারে অল্পসংখ্যক বই রয়েছে তবে বই চুরি হওয়ার ভয়ে শিক্ষার্থীদের সেখানে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। সেমিনার পরিচালনার জন্য কোন কর্মচারীও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ফারজানা আফরোজ বলেন, অনুষদ নবীন বরণ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অনুষ্ঠানে আমরা সাংস্কৃতিক কর্মকাÐে অংশ নিতে চাইলে স্যার আমাদের বলেন নতুন বিভাগের শিক্ষার্থী তোমরা এসব পারবে না। আর আমাদের অতিথি শিক্ষকদের কাছে কোন বিষয়ে গেলে তারা বলেন আমাদের শিক্ষার্থী আছে তোমাদের এগুলো দেখার সময় কই। দ্রæত শ্রেণীকক্ষের ব্যবস্থা এবং স্থায়ী শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি। আমাদের বিভাগের শিক্ষক হলে অবশ্যই আমাদের কথা ভাববেন এবং অমাদের কথা শুনবেন।
কলা অনুষদের ডিন ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মো: সেকেন্দার চৌধুরী দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ভবনটা প্রায় ৫০ বছর আগের তাই এখানে একটু সমস্য হচ্ছে। শুধু বাংলাদেশ স্টাডিজের না আরও বেশ কয়েকটি বিভাগের শ্রেণীকক্ষ সঙ্কট রয়েছে। আমরা কোন সমস্যার কথা শুনলে সাথে সাথে সমাধান করার চেষ্টা করি। তবে দ্বিতীয় কলাভবনের কাজ সম্পন্ন হলে শ্রেণীকক্ষ সঙ্কট নিরসন হবে। সেমিনারে যেতে দেওয়া হয় না এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কে যেতে পারে না সেটার নাম না বললে আমি এ বিষয়ে কিছু বলব না। শিক্ষক সঙ্কটের বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Rafid Mahmud ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৪৭ পিএম says : 0
এখানে প্রশাসনের গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট। তাই, শিগ্রই কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি..
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন