অনুশোচনার পারদ
এমরুল হোসাইন
মাঝে মাঝে লজ্জার চাদরে ঢেকে যায় হৃদয়
যখন দেখি মনকাড়া হরেক রকম অনুষঙ্গ
তোমার চারপাশ ঘিরে রেখেছে
ভাবিÑ কেন যেন?
হয়তো তোমার কষ্টের বোঝাটা ভারী করার জন্যই
পৃথিবীতে আসা!
এক লাফে অনুশোচনার পারদ উঠে আসে
খাদ থেকে চূড়ায়!!
জন্মান্ধ
আকলিমা আক্তার রিক্তা
যে হৃদয়ের চোখ জাগেনি
কি করে সে হৃদয় রমণীর ভালোবাসা বুঝবে?
রমণী এক প্রার্থনা
রমণী এক যুদ্ধ
রমণী এক নদী
রমণী শ্রেষ্ঠ সুন্দরী
রমনীর সিত ভালোবাসা পাওয়া মানে
জীবনসংগ্রামের পথে আরামদায়ক শীতলতা পাওয়া।
রমণী এক মায়ার পাহাড়
রমণী ভালোবাসার মূর্তি
রমণী পূর্ণ প্রেমিকা
রমণী জাতির জননী
যে হৃদয় রমণীকে আবিষ্কার করেনি
সে হৃদয় যেন জন্মান্ধ।
পানাম নগর
শাহাদাৎ শাহেদ
এক প্রাচীন নগরীর সাক্ষী আমি
তার নোনাধরা ইটের খাঁজে ঈসা খাঁ
মুসা খাঁসহ কত জনের
গায়ের গন্ধ লেপ্টে থাকতে দেখেছি
এখানে নাবালক পাতার কাছে জানতে
পেরেছি ক্লোরোফিলের উন্মুক্ততা
আজো মিলিয়ে যায়নি
আর প্রযুক্তির খোঁড়া যুক্তি তুলে বারবার
উপড়ে ফেলা হয়েছে পুরান
দেয়ালে গজায়মান আগাছা
হয় তো বড় হয়ে ছায়া দেবার লক্ষ্যে মাটি
ফেটে ওঠা বুনো বটের চারা
খুপড়িগুলোর জবানে জীর্ণ বালুকণার কানে কানে শুনেছি
পূর্বপুরুষের কাম
পাগলামির যতসব স্যাঁতসেঁতে ব্যাকরণ
হে আল্লাহ
প্রকৃত ধ্বংসের হাত থেকে
বাঁচিয়ে তুলুন এ নগরকে
বিশ্বাস করুন এখানে গতকাল আমি
ঈসা খাঁর ঘোড়ার খুরের ধ্বনি শুনেছি
টানাপড়েনের টান
মিতুল সাইফ
চোখ মুছলেই মোছে না সব কিছু
উড়ে যায় খেয়াল খুশির ডানা।
যত বেশি ভুলতে চেষ্টা করো
তত বেশি আঁকড়ে ধরে স্মৃতি।
বিষাদের সানাই বাজিয়ে কেউ
এনে দেয় আবার দু’চোখে জল
খেলতে খেলতে পার হযে যায় দিন
কত কিছু মন করে নেয় জমা।
হিসেবের তোয়াক্কা না করো
তবু কত অংক সামনে আসে
হিসেবের উত্তর মেলে না
ডেকে যায় পথ ভুল করা গান।
গুলতানি আড্ডায়
ইবন সাকিব
উ™£ান্ত কবিদের গুলতানি
আড্ডায় কখনো নিন্দাবাক্যের তুমুল ঝড় ওঠে
নানা নিশানায় ছুড়ে মারে তিক্ত কথার সুতীক্ষè শর-
আর ঈর্ষার মেঘের পিঠে বিদ্যুৎ রেখা আস্ফালন যেন
কিলবিল করে ছুটে চলে সাপের জিহ্বার মত;
কালো মেঘের আড়ালে থেকে
বজ্রপাতের মত আঘাত হেনে কখনও
বৃক্ষ বা প্রাণীর নিধনযজ্ঞে মেতে ওঠার অপপ্রয়াসে লিপ্ত হতে চায়।
অথচ এ বিদ্যুৎ আলোর কোনো রকম স্থায়িত্ব নেই,
তাড়াতে পারে না অন্ধকার :
বরং আঁধার ঘনীভূত করে চলে ক্রমাগত,
তবু সূর্যের আলোর প্রতিপক্ষে নেয় অবস্থান।
কর্মহীন সময় ওখানে নিভৃতে কেবল কাঁদে
ওসব সময়জ্ঞানহীন উ™£ান্তদের একদিন
ধিক্কার জানিয়ে জায়গা বদল করে নেয় নিস্ফল সময়,
ওদের বেফাঁস মুখে নিয়ন্ত্রণহীন কথার তুবড়ি শুনে
শ্রোতারা নিঃশব্দে দ্রুত কেটে পড়ে;
কখনো ওদের কা-জ্ঞানহীন পঙ্ক্তি নিশাচর শিয়ালের চিৎকার
অপেক্ষা অধিক শ্রুতিকটু মনে হয়।
নিজে কবি না হলেও কবিতায় আছে ভালোবাসা ষোল আনা-
দায়িত্বশীল তাবৎ কবিকে তাই জানাই বিন¤্র শ্রদ্ধা।
ঋণী আছি
শাহীন খান
এ সবুজ গাছপালা চিনি তাকে চিনি
তার কাছে আমি কতো হয়ে আছি ঋণী
ঋণী আছি তারাদের, সর্বহারাদের
আকাশেরও তাই
পাখিদের কাছে এতো, দীঘিদের কাছে কতো
জুড়ি তার নাই!
ঋণী আছি সাগরে, চোখ কালো ডাগরে
পৌষের শীত
খুব বেশি ঋণ নিয়ে লিখে চলি গীত!
ধান ক্ষেত, পাট ক্ষেত
নেই কোথা মতভেদ
শর্ষের ফুলে ফুলে
নদ নদী কূলে কূলে
দখিনা মিঠে বায়ু
তারও কাছে ঋণী আয়ু!
স্বপনের কাছে আরো
হয়ে আছি ঋণী গাঢ়ো
ঋণী আছি মেঘে মেঘে, আর ঋণী আবেগেতে
বৃষ্টির ধারায়
সোনামণি খুকু খোকা, চাঁদ, তারা থোকা থোকা
বৃক্ষ চারায়।
ঋণী আছি সবেতে, যা-ই আছে ভবেতে
যে দিকে তাকাই
বিধাতার কাছে ঋণে মাথাটা বোঝাই ॥
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন