অর্থনৈতিক রিপোর্টার : জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুফল দেশের নিম্নআয়ের মানুষ পায়নি বলে দাবি করেছে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন বাংলাদেশ ক্যাব। সংগঠনটি বলেছে, ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি তিন টাকা কমানোয় ব্যবসায়ীরা বছরে ৯৯০ কোটি টাকার সুফল পাচ্ছেন। এর ফলে যে পরিবহন ভাড়া ও অন্যান্য খরচ কমার কথা তা সমন্বয় হয়নি।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যাবের পক্ষ থেকে এই দাবি করা হয়। এতে ক্যাবের সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, তেল বিক্রি করে সরকারের যে লাভ হচ্ছে তা আলাদা একটি তহবিলে রাখা উচিত। এতে আগামীতে ভোক্তাদের ওপর চাপ পড়বে না।
গোলাম রহমান বলেন, রমজানে পণ্য-দ্রব্যের দাম বাড়ানোর অভিযোগ ওঠে। তাই এই বদনাম এড়াতে এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী চালাকি করে রমজান আসার এক-দুই মাস আগেই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, রমজান ও বাজেটকে সামনে রেখে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেটের কারসাজিতে ইতিমধ্যে বাজারে প্যাকেটজাত লবণের দাম কেজিপতি ১০ থেকে ১৫ টাকা, রসুন কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা এবং চিনি কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা বাড়িয়েছে। হঠাৎ এভাবে দাম বাড়ানোর কোনো যুক্তি নেই। কারণ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে বর্তমানে দেশে প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মজুদ, উৎপাদন ও আমদানি সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে।
ক্যাব সভাপতি বলেন, ১৯৯০-এর দশক থেকে এ দেশে জোরেশোরে মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা হচ্ছে। এখন গুটিকয়েক ব্যবসায়ী প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের আমদানি ও উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করছে। এ ছাড়া গড়ে উঠেছে পণ্যভিত্তিক এসোসিয়েশন। প্রতিযোগিতা হ্রাস ও আইনি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় বাজার বিভাজনের মাধ্যমে অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে সময় ও সুযোগ বুঝে পণ্যের দাম বাড়িয়ে আসছে। এ প্রবণতা রোধে সুষ্ঠু তদন্ত করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় শাস্তি দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে রমজান শুরুর আগেই ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (টিসিবি) কাজ শুরু করতে হবে।
এ সময়ে নকল, ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্য যাতে বাজার সয়লাব হতে না পারে সেজন্য নিয়মিত মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করতে হবে। বাজেটে সকল নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের বিক্রয়মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের প্রস্তাবে তীব্র সমালোচনা করে গোলাম রহমান বলেন, এ প্রস্তাব কোনো অবস্থাতেই বাস্তবসম্মত নয়। এতে জিনিসের দামের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে। ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ বাড়বে। এতে অসৎ ব্যবসায়ীরা লাভবান ও জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ প্রস্তাব সরকারের জনকল্যাণমুখী নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন