বঙ্গমাতা অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলা আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে আসরকে ঠিকই স্মরণীয় করে রাখলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। তবে লাওসকে সঙ্গে নিয়েই এ কাজটি করলো লাল-সবুজরা। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬ টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল বাংলাদেশ ও লাওসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি। কিন্তু ঘুর্ণিঝড় ফণী’র প্রভাবে তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। ৪৩ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ফণী’র অগ্রভাগ শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে। মূল আঘাত আসার কথা মধ্যরাতে। কিন্তু তার আগেই প্রবল বর্ষণের কারণে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের মাঠ ভিজে কিছুটা ভারি হয়ে যায়। বিকেল পৌনে ৪টায় শুরু হয় বৃষ্টি। টানা ২৫ মিনিট ভারি বর্ষণের পর থামলেও ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি চলেছে নিয়মিতই। এর মধ্যেই চলতে থাকে ফাইনাল ম্যাচের আয়োজন। তবে বড় আকারে ঘুর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানতে পারে-এমন শঙ্কায় হঠাৎ করেই আয়োজক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সিদ্ধান্ত নেয় বঙ্গমাতা গোল্ডকাপের ফাইনাল বাতিলের। ম্যাচ শুরুর নির্ধারিত সময়ের ২০ মিনিট পর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের প্রেসবক্সে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে ফাইনাল বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানান বাফুফে’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং স্থানীয় সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী এমপি। এসময়ই তিনি ফাইনালে অংশ নেয়া দু’দল বাংলাদেশ ও লাওসকে যুগ্ম-চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করেন। বাফুফে’র কর্মকর্তারা ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে ছিলেন লাওস অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের ম্যানেজার গলদানসুক তুবশিনবেয়ার।
দুই দলকে যুগ্ম-চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হলেও ট্রফি পাবে কারা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তর সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘আমরা লটারির মাধ্যমে ঠিক করবো ট্রফি কারা পাবে। তবে ৪০ হাজার ডলার (চ্যাম্পিয়ন ২৫ হাজার ও রানার্সআপ ১৫ হাজার) প্রাইজমানি সমানভাগে দু’দলকে ভাগ করে দেয়া হবে।’
বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ম্যাচ বাতিলের মতো আবহাওয়া ছিল না। যদিও মাঠ কিছুটা ভারি ছিল। তারপরও এ মাঠে খেলা চলতো। কিন্ত কেন ম্যাচ শুরু না করেই বাতিল করা হলো? এমন প্রশ্নের উত্তর দেন টুর্নামেন্টের স্বত্বাধিকারী কে-স্পোর্টসের সিইও এম ফাহাদ করিম। তিনি বলেন, ‘যখন ফাইনাল শুরু হওয়ার কথা ঠিক তখনই ফণী আঘাত হানে। দেশের ১৯ টি জেলার মানুষ এখন বিপদমুক্তির জন্য প্রার্থনা করছে। আমি বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই আমাদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাই ফাইনাল বাতিল করে যুগ্ম-চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করা হয়েছে।’ লাওসের ম্যানেজার গলদানসুক তুবশিনবেয়ার বলেন,‘আমরা বাফুফের এমন সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাই। তবে ফাইনাল খেলতে প্রস্তুত ছিল আমার দল।’ আজ দেশে ফিরে যাচ্ছে লাওস অনুর্ধ্ব-১৯ নারী দল।
এদিকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি কারা পাবে তা লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ হওয়া সহ প্রাইজমানি দু’দলকে সমানভাগে ভাগ করে দেয়া হলেও দর্শকদের টিকিটের মূল্য ফেরত দেয়া হবে কিনা তা জানায়নি বাফুফে। গাঁটের টাকা খরচ করে প্রায় দু’হাজার দর্শক গ্যালারীতে টিকিট কেটে প্রবেশ করেছিলেন বাংলাদেশ-লাওস হাইভোল্টেজ ফাইনাল দেখতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন