জাহেদ খোকন : ২০১০ ঢাকা এসএ গেমস হকিতে ব্রোঞ্জপদক জিতলেও এবার বাংলাদেশের লক্ষ্য ও আশা রৌপ্য জেতা। দেশের মাটিতে না পারলেও ভারতের মাটিতে এই ডিসিপ্লিনের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন লাল-সবুজদের। শুধু এসএ গেমসেই নয়, দক্ষিণ এশিয় হকির যে কোন আসরে ভারত-পাকিস্তানের মতো স্বীকৃত শক্তি থাকার কারণে বাংলাদেশকে বরাবরই তৃতীয়স্থানের জন্যই লড়তে হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের সামনে পড়ে শ্রীলংকা। এই দলটির বিপক্ষে সব সময়ই সেরা বাংলাদেশ। তাই ঢাকা এসএ গেমসে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ব্রোঞ্জপদক জিততে দেখা গেছে বাংলাদেশকে। আর ভারতকে ট্রাইব্রেকারে হারিয়ে ১১তম এসএ গেমসের স্বর্ণপদক জিতেছিলো পাকিস্তান। তবে এবার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বিশ্ব হকিতে ভারত ও পাকিস্তান এখন অনেকটাই ম্রিয়মান। শ্রীলংকার সঙ্গে লড়াইয়ে বাংলাদেশই জয়ী হয়। তাই গৌহাটি-শিলং এসএ গেমসে এবার লড়াইয়ের গতিটা আরও বাড়াতে চান বাংলাদেশ জাতীয় হকি দলের কোচ মাহবুব হারুন। গৌহাটির ভেটাপাড়ার মৌলানা তয়বুল্লাহ হকি স্টেডিয়ামের নীল টার্ফে খেলবে লাল-সবুজরা। সে লক্ষ্যে ২ জানুয়ারি অভিজ্ঞ ও তরুণদের মিশেলে শক্তিশালী দলই গঠন করেছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। ১৮ জন খেলোয়াড়সহ ২৬ সদস্যের বাংলাদেশ হকি দল গৌহাটি যাচ্ছে নিজেদের সেরা পারফরমেন্স দেখাতে। দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পেয়েছেন সারোয়ার হোসেন। তার ডেপুটি হিসেবে আছেন অসীম গোপ। এছাড়া অভিজ্ঞ জাহিদ হোসেন, আশরাফুল ইসলাম, ইমরান হাসান পিন্টু, রেজাউল করিম বাবু, ফরহাদ আহমেদ সিতুল, খোরশেদুর রহমান, তাপস বর্মন, হাসান জুবায়ের নিলয়, রোমান সরকার, ফজলে হোসেন রাব্বি, সাব্বির হোসেন, মইনুল ইসলাম, পুস্কর ক্ষিসা মিমো, রাসেল মাহমুদ জিমি, মিলন হোসেন ও কৃষ্ণ কুমার দাস তো রয়েছেনই এসএ গেমসের দলে। স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছে আবু সাইদ নিপ্পন, বেলাল হোসেন, নাঈম উদ্দিন ও দ্বীন ইসলাম ইমনকে। প্রধান কোচ মাহবুব হারুনের সহকারী হিসেবে তারিকউজ্জামান নান্নু, ম্যানেজার মাহবুব এহসান রানা এবং সহকারী ম্যানেজার হিসেবে মোফাজ্জল হোসেন যাচ্ছেন গৌহাটিতে।
আসন্ন এসএ গেমসে জাতীয় দলের প্রস্ততি ও লক্ষ্য নিয়ে কোচ মাহবুব হারুনের সঙ্গে কথা বললে, তিনি সন্তুষ্টির সঙ্গে কিছুটা হতাশার সুরও বাজালেন। বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘শারীরিকভাবে এখন আমরা এসএ গেমসের ম্যাচ খেলতে প্রস্তুত। সমস্যা হল কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই আমাদের গৌহাটি যেতে হচ্ছে। গেমসের আগে ফেডারেশনের কাছে আমরা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার আবেদন করেছিলাম। কর্মকর্তারা বলেছিলেন, মালয়েশিয়া কিংবা ভারতের যে কোনো একটি দলের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচের আয়োজন করবেন। কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে এটা আর সম্ভব নয়। হাতে সময়ই নেই।’
মাহবুব হারুন আরো বলেন, ‘জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো ঠিকই সূচি অনুযায়ী হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় লিগ অনেকদিন বন্ধ ছিল। আর লিগ মাঠে না থাকলে জাতীয় দলের উপর এর প্রভাব পড়ে। এখন ধরুন লিগ শুরু হবে। লিগ শুরুর পরের টুর্নামেন্টগুলোর প্রস্তুতি পর্ব আরো ভালো হবে। সেখানে ফলও ভালো হবে। আমি চ্যালেঞ্জটা উপভোগ করি। মাঝখানে বিদেশী কোচ ছিলেন। এখন আবার আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। জাতীয় দলে কোচিংটা ইনজয় করি। যার কারণে আবারো ফিরে এসেছি।’ আসন্ন গেমসে দলের সম্ভাবনা নিয়ে মাহবুব হারুন বলেন, ‘এসএ গেমসে আমরা অ্যাটাকিং খেলব। মালয়েশিয়াতে অনূর্ধ্ব-২১ এশিয়া কাপে যেভাবে খেলেছি ঠিক সেভাবেই। ওখানে অবশ্য প্রস্তুতি ঘাটতি ছিল। কিন্তু এসএ গেমসে আমরা ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার সঙ্গে খেলব। ম্যাচের সূচীতে ভালোই বিরতি রয়েছে। ছেলেরা নিজেদের প্রস্তুত করতে যথেষ্ট সময় পাবে। এখন ভারত ও পাকিস্তান যদি তাদের দ্বিতীয় সারির দল পাঠায়, সেক্ষেত্রে রুপা জেতার একটি সুযোগ তো নিবোই। আর তা জিততেও পারবো আশাকরি। আর ওই দু’দেশ তাদের জাতীয় দল পাঠালে, গ্যারান্টি দিয়ে কিছুই বলতে পারছি না। চেষ্টা থাকবে ভালো করা।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন