সাতক্ষীরার কলারোয়া থেকে আটক প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রের ২৯ জনের মধ্যে ২১জনকে দুই বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বাকী আটজন অভিভাবক হওয়ায় তাদের সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমিনুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের এই দণ্ড দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, প্রশ্নফাঁস চক্রের হোতা কুষ্টিয়ার পরানখালী গ্রামের আব্দুল হালিম (৩৯), সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জাপাঘাটের আফতাবুজ্জামান (৩৫), একই গ্রামের আমিরুল ইসলাম (৩৫), আশাশুনির চেউটিয়া গ্রামের মনিরুল ইসলাম (৩৫) ও কাকবাসিয়া গ্রামের তরিকুল ইসলাম (৩৫), কুন্দড়িয়া গ্রামের সুমেন্দ্র ঘোষ (৩০), শ্যামনগরের গোবিন্দপুর গ্রামের হাফিজুর রহমান, একই গ্রামের আব্দুল হালিম (২৩), হুমায়ুন কবীর (২৭), আশাশুনির লাউতাড়া গ্রামের সন্নাসী কুমার সরকার (২৮), কাকবাসিয়া গ্রামের রিয়াছাদ আলী (২৯), চেউটিয়ার দিদারুল ইসলাম (৩০), সাতক্ষীরা সদর উপজেলার হাছিমপুরের বিশ্বজিৎ ঘোষ (৩০), আশাশুনিন প্রতাপনগরের সাইফুল্লাহ (২৯), শ্যামনগরের গোবিন্দপুরের সানজিদা বকুল (১৯), আশাশুনির মহিষকুড়ের নাজমুন নাহার (২৯), কল্যাণপুর গ্রামের রাবেয়া (২৫), চেউটিয়া গ্রামের সেলিনা খাতুন (২৬), তুয়ারডাঙ্গার তানিয়া সুলতানা (২৬) ও গোকুলনগরের সুমাইয়া খাতুন (২২) ও সদর উপজেলার রসুলপুরের মুস্তারিয়া (২১)।
এর আগে শুক্রবার (২৪ মে) দুপুরে র্যাব-৬ এর সাতক্ষীরা ক্যাম্পে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সৈয়দ মো. নুরুসসালেহীন ইউসুফ।
এ সময় তিনি বলেন, কুষ্টিয়ার পরানখালী গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল হালিম (৩৯), কলারোয়ার কীডস ক্লাব কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও জনতা ব্যাংক সেনেরগাতি শাখার ম্যানেজার আফতাবুজ্জামান (৩৫), কৃষি ব্যাংক কলারোয়া শাখার অফিসার মনিরুল ইসলাম, রামচন্দ্রপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আমিরুল ইসলাম ও আশাশুনির রইচউদ্দিনের ছেলে স্কুল শিক্ষক তরিকুল ইসলাম এই প্রশ্ন ফাঁস চক্রের মূল হোতা।
তাদের কাছে প্রাপ্ত প্রশ্ন ও শুক্রবার সকালে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবুহু মিলে গেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (২৫ মে) সকালে কলারোয়া থানার পার্শ্ববর্তী একটি ভবনে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের উত্তর ঠিক করার কাজে নিয়োজিত অবস্থায় পরীক্ষার্থী ও প্রশ্ন ফাঁস চক্রের এসব সদস্যকে আটক করা হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে তারা জড়ো হয় কলারোয়া উপজেলা সদরের সোনালী সুপার মার্কেট ভবনের কীডস ক্লাব সেন্টারে। সেখানে তারা রাত্রিযাপন করে। রাতভর এবং সকালে মোবাইল ফোনে তাদের কাছে আসা প্রশ্নপত্র ব্লাকবোর্ডে লিখে সাথে সাথে তার উত্তরও নির্দেশ করা হতে থাকে। অংশগ্রহণেচ্ছুরা তা শিখে নিতে থাকেন।
এমন খবর পেয়ে র্যাব সদস্যরা ভবনটি ঘিরে ফেলে। সেখান থেকে প্রথমে ২২ জন পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও ৭ জনসহ ২৯ জনকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্রটি প্রত্যেকের সাথে ১২ লাখ টাকার চুক্তিতে এই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন