শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

দ্রুততম কিশোর উজ্জ্বল, কিশোরী তানজিলা

প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : হাজী নুরুল ইসলাম মুন্সি স্মৃতি জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে দ্রæততম কিশোর ও কিশোরীর খেতাব জিতেছেন নরসিংদীর উজ্জ্বল চন্দ্র সূত্রধর এবং বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)’র তানজিলা আক্তার। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে আসরের ১০০ মিটার স্প্রিন্টে উজ্জ্বল ১০.৮৩ সেকেন্ড ও তানজিলা ১৩.১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে দৌড় শেষ করে সেরার খেতাব জিতেন।
সব অ্যাথলেটদের মত উজ্জ্বলেরও স্বপ্ন ছিলো জাতীয় পর্যায়ে সাফল্য পেয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখা। ২০১৩ সালে স্বপ্নপূরণের প্রথম ধাপটি অতিক্রম করেন এই অ্যাথলেট। তখন এই জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সেই দ্রæততম বালক হওয়ার পাশাপাশি তিনি লংজাম্পেও স্বর্ণপদক জিতেন। অবশ্য পরের বছর এ আসরে তেমন সফলতা পাননি। ২০১৪ সালে ১০০ মিটার স্প্রিন্ট ও লং জাম্পে দ্বিতীয় হন। তবে গেল বছর জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে লং জাম্পে ৭.০৯ সেন্টিমিটার উচ্চতায় লাফিয়ে জাতীয় রেকর্ড গড়েন উজ্জ্বল। পর্যাপ্ত অনুশীলনের অভাবে সেবার প্রিয় ইভেন্টে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে অংশ নেননি। এবার তার আশা ছিল এই ইভেন্টের পাশাপাশি লং জাম্পেও জাতীয় রেকর্ড গড়বেন। কিন্তু জ্বরের কারণে তার আর হয়নি। দ্রæততম কিশোরের খেতাব জিতলেও লং জাম্পে রৌপ্যপদক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাকে। অসচ্ছল পরিবারের সন্তান উজ্জ্বল যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে সবার বড়। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী থানার গচিহাটা গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বলের বাবা পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী এবং মা গৃহিণী। জাতীয় প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়ে দারুণ খুশি উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘জুনিয়র মিটে সবাইকে পেছনে ফেলতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এজন্য আখতরুজ্জামান স্যারকে ধন্যবাদ জানাই। ওনার সহযোগিতার কারণেই এ পর্যন্ত আসতে পেরেছি।’ ভবিষ্যতের লক্ষ্য সম্পর্কে উজ্জ্বলের কথা, ‘ভবিষ্যতে সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণ জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে চাই। আর এজন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের। আমি অ্যাথলেটিক ফেডারেশনকে অনুরোধ করব এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দিতে।’
অন্যদিকে বিকেএসপি’র উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের ছাত্রী তানজিলাও সেরা হতে পেরে খুশী। তিনি বলেন, ‘এর আগেও জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে তিনবার অংশ নিয়েছি। তবে ১০০ মিটারে প্রথম হলাম এবারই। সেরা হওয়ার স্বপ্ন আমার অনেক দিনেরই। সেটা এবার পূর্ণ হওয়াতে খুবই ভালো লাগছে।’ এর আগে এই আসরে ২০১৩ সালে তিনটি ইভেন্টে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তানজিলা। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে চোটের কারণে (লিগামেন্ট ইনজুরি) খেলতে পারেননি। তবে এবার সাফল্য পেতে প্রস্তুত ছিলেন তিনি। তানজিলা বলেন, ‘এই প্রতিযোগিতার জন্য আমার প্রস্তুতি ছিল প্রায় তিন মাসের। ২০১৩ সালের আসরে ১০০ মিটার ও ২০০ মিটার দৌড়ে এবং লং জাম্পে রুপা জিতেছিলাম। আমার কোচ আমাকে যেভাবে অনুশীলন করিয়েছিলেন, তাতে করে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম এবার আমি কিছু একটা করে দেখাতে পারবো। তবে কিছুটা সংশয়েও ছিলাম। কারণ অনেকদিন খেলায় ছিলাম না এবং বেশিদিন অনুশীলনও করতে পারিনি।’ কৃষক বাবা শামসুল ইসলামের সুযোগ্য কন্যা তানজিলা ফিরে গেলেন অতীতে। বললেন, ‘যখন হাইস্কুলে যাই, তখন আন্তঃস্কুল অ্যাথলেটিক্সে অনেক পুরস্কার জিতেছি। আর তখন থেকেই আমার খেলাধুলার প্রতি বাবার নেতিবাচক মনোভাব বদলে যেতে থাকে। স্কুল পর্যায়ে পুরস্কার হিসেবে জিতেছি ৪৫ প্লেট এবং ২৫টির বেশি মেডেল। দীর্ঘ তিন মাস ক্যাম্প করার পর ২০১২ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হই। ভবিষ্যত আমি বিউটি আপার (নাজমুন নাহার বিউটি) মতো ১০০ মিটারে এবং সুবর্ণা আপুর (সূবর্ণা আক্তার) ২০০ মিটার স্প্রিন্টের বাংলাদেশ গেমসের রেকর্ডটা ভাঙ্গতে চাই।’ এবারের জুনিয়র অ্যাথলেটিক্সে ১০০ মিটার স্প্রিন্টে স্বর্ণ জেতার পাশাপাশি ২০০ মিটার স্প্রিন্ট এবং হাই জাম্পে রৌপ্যপদক জিতেছেন তানজিলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন