শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

২০ টাকা জোড়া ভিআইপি টিকিট!

প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : বাংলাদেশ ফুটবলের স্বর্ণযুগ কোনটি? এই প্রশ্ন যদি ২৫-উর্ধ্ব কোন ফুটবলপ্রেমীকে করা হয়, তাহলে তিনি ঝটপট উত্তর দেবেন আশি ও নব্বই দশক। হ্যা, ঐ সময়টই ছিল বাংলাদেশের ফুটবলের সত্যিকার স্বর্ণযুগ। খেলাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন ঢাকা স্টেডিয়াম চত্বরে কতই না ঘটনা ঘটেছে। খেলার আগে স্টেডিয়ামের বাইরে দর্শকভীড় সামলাতে ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যেত। প্রিয় দলের হারে প্রায় উন্মাদ হয়ে যেতেন দর্শকরা। মারামারিসহ গাড়ি ভাঙচুরের মতো ঘটনাও ঘটেছে অহরহ। দর্শক উন্মাদনা থামাতে পুলিশের লাঠিচার্জ, কাঁদানী গ্যাস ছোড়া তখন যেন ছিলো নিত্যদিনের ঘটনা। দেশের ফুটবলের ভরা যৌবনের দিনে খেলা দেখার জন্য একটি টিকিট ছিলো যেন সোনার হরিণ। এই সোনার হরিণ হাসিল করতে কত না চেষ্টা ছিলো দর্শকদের। কাউন্টারে না পেলে কালোবাজারিদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি অর্থ দিয়ে টিকিট কিনে খেলা দেখতেন দর্শকরা। কোথায় গেল সেই দিন? সেই সব এখন অতীত। বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের ফুটবলে এখন ক্রান্তি লগ্ন চলছে।
ফুটবলের সেই ভরা যৌবন আর নেই। ঘরোয়া আসর থেকে অনেক আগেই দর্শকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। অবাক হলেও সত্যি, আন্তর্জাতিক আসরেও দর্শক আসেন না স্টেডিয়ামে। জাতির জনকের নামে টুর্নামেন্ট করেও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) স্টেডিয়ামে দর্শক আনতে পারছে না। যে কারণে চলমান বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে গ্যালারির টিকিট মূল্য কমাতে হয়েছে তাদের। টুর্নামেন্টের ঢাকা পর্ব শুরুর দিন গ্যালারি টিকিটের দাম একশ’ টাকা থাকলেও পরের দিনই তা নামিয়ে আনা হয়েছে পঞ্চাশ টাকায়। কিন্তু এই পরিমাণ অর্থ দিয়েও টিকিট কিনছেন না দর্শকরা। এমনকি অনেকে ফ্রি টিকিট পেয়েও খেলা দেখার আগ্রহ দেখাচ্ছেন না! ফলে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম চত্বরে গোটা দশেক গাড়িতে করে টিকিট বিক্রির চেষ্টা চললেও তাতে লোকসান গুণতে হচ্ছে বাফুফেকে। প্রত্যাশা অনুযায়ী তো নয়ই, উল্লেখ করার মতো টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। আশ্চর্য খবর হলো, টিকিট বিক্রি করে কালোবাজারিদেরও লোকসান গুনতে হচ্ছে। পঞ্চাশ টাকার টিকিট তারা বিক্রি করছে ত্রিশ টাকায়। সরেজমিনে দেখা গেছে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কম টাকায় টিকিট পেয়েও খেলা দেখার আগ্রহ নেই দর্শকদের। নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিকিট বিক্রেতা এক কালোবাজারি বলেন, ‘এক সময় অনেক বেশী টাকায় টিকিট বিক্রি করছি। লাভ হইতো প্রচুর। কিন্তু এখন দর্শক ফুটবল খেলা দেখে না। সবাই ক্রিকেটের দিকে ঝুঁকছে। ফুটবলের টিকিট বিক্রি করে লাভ তো দুরের কথা, কেনা দামই উঠে না। তারপরও বঙ্গবন্ধুর নামে টুর্নামেন্ট চলছে। ভেবেছিলাম দর্শক হবে। কিন্তু অবাক কান্ড ১০০ টাকার ভিআইপি টিকিটের জোড়া ২০ টেকা সাদলেও লওনের কেউ নাই। এলা বুজেন বাংলাদেশের ফুটবলের কি হাল!’

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন