বগুড়া সদর উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারণার শুরুতেই বিএনপির প্রচারণায় হামলা করেছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার দুপুরে এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, ছাত্রদল সভাপতি আবু হাসান , সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান সহ ৭ সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিক। আহত সাংবাদিক ও ফটোসাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন , দৈনিক মুক্ত সকালের আঃ রহিম ও আল আমিন, বৈশাখী টেলিভিশনের ফটো সাংবাদিক মামুন, আরটিভির মুক্তার হোসেন, ডিবিসির সেলিম , মুক্ত জমিনের ওয়াহেদ ফকির ও বাংলা বুলেটিনের সুমন সরদার । হামলাকারীরা সাংবাদিকদের মোবাইল ও ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাংচুর করেছে ।
আহত সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিকরা জানিয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের চিঠি পাওয়ার পর মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাত মাথায় হ্যান্ডবিল বিলি করতে আসেন বিএনপির সাবেক এমপি হেলালুজ্জামান লালু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলী আজগর হেনা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আবু হাসান , সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান প্রমুখ তারা সপ্তপদী মার্কেটের সামনে এবং বাটা শো’ রুমের পাশে ধানের শীষের প্রচারণা শেষ করে লট্টো শো’রুমের সামনে ছাত্রলীগের ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ সংঘবদ্ধভাবে বিএনপির প্রচারণায় বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে বিএনপির লোকজন প্রচারণা অব্যাহত রাখায় ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের হামলাকারীরা সাতমাথায় আখের শরবত বিক্রেতাদের কাছে রাখা আখ তুলে নিয়ে সেটাকেই লাঠি হিসেবে ব্যবহার করে বেদমভাবে পেটানো শুরু করে । তাদের লাঠিপেটায় গুরুতর আহত হন সাবেক এমপি লালু , ছাত্রদল সভাপতি আবু হাসান, সাধারণ সম্পাদক রিগ্যান সহ বেশ কয়েকজন । এসময় ছাত্রদল সভাপতি আবু হাসান প্রাণভয়ে পাশের পুলিশ বক্সে ঢুঁকে আত্ম রক্ষার চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা সেখানে ঢুঁকেও বেদম প্রহার করে । হামলায় হাসানের পুরো শরীর রক্তাক্ত হয় এবং সে সেখানেই লুটিয়ে পড়ে ।
এই হামলার দৃশ্য ক্যামেরায় ধারণ করতে গেলে হামলাকারীরা সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিকদের ওপরও একই কায়দায় হামলা করে । তাদের হামলায় আহত ও লাঞ্ছিত হয় ৭জন সাংবাদিক ও ফটো সাংবাদিক । হামলাকারীরা সাংবাদিক আব্দুর রহিমের মোবাইল ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে ভাংচুর করে । একই সময় তারা ফটো সাংবাদিক আল আমিনের ক্যামেরাও কেড়ে নেয় ও ভাংচুর করে । বৈশাখী টেলিভিশনের মামুন ও আর টিভির মুক্তার শেখের টিভি ক্যামেরাও তারা কেড়ে নিয়ে নিজেদের হেফাজতে রেখে দেয় । পরে অবশ্য সিনিয়র নেতাদের চাপে ওই দুটি ক্যামেরা ফেরত দেওয়া হয় বলে জানা গেছে ।
এই ঘটনায় সাংবাদিক নেতারা প্রাথমিক ভাবে উদ্বেগ প্রকাশ ও নিন্দা জানিয়েছে । সাধারণভাবে পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ।
উল্লেখ্য আগামী ২৪ জুন অনুষ্ঠিতব্য বগুড়া -৬ (সদর ) আসনের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দি ৭ প্রার্থীর মাঝে প্রতিক বরাদ্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহবুব আলম শাহ তার কার্যালয়ে প্রার্থীদের মাঝে প্রতিক বরাদ্দের চিঠি হস্তান্তর করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিক বরাদ্দ প্রাপ্ত প্রার্থীরা হলেন, বিএনপির প্রার্থী জেলা বিএনপির আহবায়ক গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ (ধানের শীষ) ,আ’লীগের প্রার্থী এসএম টি জামান নিকেতা (নৌকা) ,জাতীয় পার্টির প্রার্থী নূরুল ইসলাম ওমর (লাঙ্গল) ,বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মনসুর রহমান (ডাব) , বাংলাদেশ মুসলিমলীগের প্রার্থী মুফতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম (হারিকেন) , স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটর সৈয়দ কবির আহম্মেদ ওরফে মিঠু (ট্রাক ) ও মোঃ মিনহাজ ((আপেল) ।
ঘোষিত তফশিল মোতাবেক ২৪ জুন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ইভিএম এ বগুড়া পৌরসভার ২১টি ওয়ার্ড ও সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ১৪১ কেন্দ্রে ভোট গ্রহন করা হবে। এতে মোট ভোটার ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৪শ’৫৮জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন